‌ভারতীয় মুসলিম মহিলাদের আর্থ-সামাজিক ক্ষমতায়নে শিক্ষার ভূমিকা

  • 23 January, 2021
  • 1 Comment(s)
  • 2017 view(s)
  • লিখেছেন : রাণা আলম
সমান অধিকার যে নারীর স্বাভাবিকভাবেই প্রাপ্য এবং কোনোভাবেই তা পুরুষের দেওয়ার জিনিস নয়, এই সারসত্যটা আমাদের সমাজ এখনও বুঝে উঠতে পারেনি। উপরন্তু নারীকে বোঝানো হয়েছে পুরুষের আজ্ঞাবাহী হওয়াটা তাদের অবশ্যকর্তব্য। ঘরের কাজ-বাইরের কাজ, এই শ্রেণিবিভাগটাও একান্তভাবেই পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার ফসল।

আসমিরা বিবি, মুর্শিদাবাদের প্রান্তিক এলাকায় বাড়ি। ক্লাস এইটে পড়ার সময় বিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর বাবা-মা। দুই সন্তানের জননী। তৃতীয়টি গর্ভে। স্বামী হাইরোডে ভ্যান চালান। রোজদিনই মদ খেয়ে এসে আসমিরাকে মারধর করেন। তালাক দিতে চেয়েছিলেন আসমিরা। কিন্তু সন্তানদের খাওয়াবে কে ভেবে পিছিয়ে আসেন। আত্মীয়-স্বজন বুঝিয়েছে যে, স্বামী একটু-আধটু গায়ে হাত তুলতে পারে, সেটা খুব অন্যায় নয়। মেয়ে মানুষকে শাসনে রাখতে হয়। শুনতে অবাক লাগতে পারে, কিন্তু মধ্যবিত্ত শিক্ষিত সমাজের অধিকাংশই এই তত্ত্বে বিশ্বাসী যে, মেয়েদের স্বামীর অনুগত থাকাটাই ধর্ম। নির্ভয়া কাণ্ডের এক অভিযুক্ত তার জবানবন্দীতে বলেছিল যে, অত রাতে মেয়েটি তার পুরুষ বন্ধুর সাথে বেরিয়ে অন্যায় করেছিল।
 
আসমিরা বিবি নিজে রোজগার করেন না, তার আর্থিক স্বাধীনতা নেই। আর্থিক স্বাধীনতা থাকলেও তাকে সমাজ একা বাঁচতে দিত না। প্রান্তিক এলাকা অনেক দূরের কথা, খোদ কলকাতা শহরেই একটি একা মেয়ে ঘরভাড়া পায় না। যতই কথায় কথায় মৈত্রেয়ী, গার্গী অপালার উদাহরণ দিই, আমরা আসলে যে মেয়েদের দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক বানিয়ে রেখেছি সেটা অনস্বীকার্য।
 
আমাদের রূপকথায় রাজপুত্তুর রাজকন্যা পায়। আমাদের কমার্সিয়াল সিনেমায় নায়ক নায়িকাকে জোর করে প্রেমে পড়তে বাধ্য করে। আমাদের টেলি সিরিয়ালে লম্পট মদ্যপ স্বামীর পতিব্রতা বউ থাকে।
 
যা কিছু কাজের দায়, আমরা সবটাই মেয়েদের উপরে চাপিয়ে রেখেছি। এমনকি নারী-স্বাধীনতা নামের যে প্রবচনটি আমরা সেমিনারে আর মিটিংয়ে হরবখত আউড়ে থাকি, সেখানেও মনে করিয়ে দেওয়া হয় যে, এই স্বাধীনতা প্রকারান্তে পুরুষেরই দান। অর্থাৎ, ঘুড়ি আকাশে উড়তে পারে কিন্তু তার লাটাই থাকে অন্য হাতে।
 
ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভারতবর্ষে মহিলাদের অবস্থার খুব একটা হেরফের হয় না। এই জায়গায় অন্তত পিতৃতান্ত্রিক সমাজ তাদের সাম্যবাদী অবস্থান বজায় রেখেছে। প্রকৃতপক্ষে, মেয়েদের পায়ের তলায় রাখার সফল প্র্যাকটিসটা আমরা ট্র্যাডিশনে বানিয়ে ফেলেছি। আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে এই বঞ্চনা মিটিয়ে কীভাবে মেয়েদের সমান অধিকার দিয়ে তাদের ক্ষমতায়ন করা যেতে পারে তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা ইতিমধ্যেই হয়েছে। কিছুটা উন্নতি হলেও সার্বিক ছবিটা আমূল পাল্টাতে এখনও দীর্ঘ সময় লাগবে। ভারতবর্ষে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে সবচেয়ে খারাপ অবস্থান দলিত আর সংখ্যালঘু মহিলাদের। সংখ্যালঘুদের মধ্যে প্রধান ধর্মীয় গোষ্ঠী হল মুসলিমরা। নিজস্ব ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থানে পিছিয়ে থাকার জন্য মুসলিম কম্যুনিটিতে মেয়েদের অবস্থার প্রত্যাশিত উন্নতি হয়নি এখনও।

২০১১-‌এর সেন্সাস অনুযায়ী, আমাদের দেশে ১৪.২৩% মানুষ ইসলাম ধর্মের। এর আগে সাচার কমিটি রিপোর্ট করেছিল যে, ভারতীয় মুসলিমদের ৩১% পভার্টি লাইনের নিচে বাস করে। মোট মুসলিম কম্যুনিটির ৪৮% হল মহিলা আর সেন্সাস ২০১১-‌তে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যাচ্ছে যে, ভারতীয় মুসলিম মহিলাদের ৪৮.১১% নিরক্ষর। চার কোটির বেশি ভারতীয় মুসলিম মহিলা নিজের নামটাও লিখতে পারেন না।
  
একজন অশিক্ষিত এবং আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে দুর্বল মানুষ নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হবেন না এটাই স্বাভাবিক। আপাতদৃষ্টিতে ধরে নেওয়া যেতে পারে নিরক্ষরতা ভারতীয় মুসলিম মহিলাদের জন্য বড় অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন সাক্ষর হওয়াটা কিন্তু শিক্ষিত হবার সাথে সমানুপাতিক নয়। নিজের নাম আর ঠিকানা লিখতে পারাটাকেই সাক্ষরতা হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু, ভারতীয় মুসলিম মহিলাদের, সঠিক অর্থে আর্থ-সামাজিক ক্ষমতায়নের জন্য প্রথাগত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়াটা জরুরি।
 
এখন এই ক্ষমতায়ন বা এমপাওয়ারমেন্ট বলতে কী বলা হচ্ছে সেটাও বোঝা দরকার। একজন আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ক্ষমতাশালী বা এমপাওয়ারড মানুষ স্বাধীনভাবে নিজের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং সমাজের উন্নতিতে অংশ গ্রহণ করতে পারেন। ইউনেস্কো EMPOWERMENT-‌এর সংজ্ঞা দিচ্ছে, “… the expansion of assets and capabilities of poor people to participate in, negotiate with, influence, control, and hold accountable institutions that affect their lives.”

আবার Hashemi Schuler এবং Riley (1996) এর মতে, “the term empowerment also can be viewed as means of creating a social environment in which one can make decisions and make choices either individually or collectively for social transformation. It strengthens the innate ability by way of acquiring knowledge, power and experience.”

অর্থাৎ, জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির মাধ্যমে একজন মানুষের ক্ষমতাহীন থেকে ক্ষমতাশালী হয়ে ওঠার পদ্ধতিটাকেই আমরা এমপাওয়ারমেন্ট বলছি। মহিলাদের ক্ষেত্রে আর্থ-সামাজিক ক্ষমতায়নের উদ্দেশ্য হল এমন একটি আদর্শ সমাজ সৃষ্টি করা যেখানে মহিলারা সবরকম অত্যাচার আর বঞ্চনার হাত থেকে বেরিয়ে স্বাধীনভাবে নিজের মত বাঁচতে পারবেন। ১৯৯৪ সালে কাইরো কনফারেন্সে ইউনাইটেড নেশন সর্বপ্রথম উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট বা মহিলাদের ক্ষমতায়নের কথা নিজেদের এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল।  

 এক্ষেত্রে, একটি আবশ্যিক কথা বলে রাখা দরকার যে, নারীর আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ক্ষমতায়ন বলতে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে নারীর পুরুষের সাথে সমান অধিকার এবং ভূমিকা বোঝায়। আমাদের দেশে যেখানে মেয়েদের পায়ে শেকল বেঁধে রাখাটাই দস্তুর সেখানে উইমেন এমপাওয়ারমেন্টের মত স্বাধীন ধারণা প্রতিষ্ঠিত করাটা অবশ্যই খুব শক্ত কাজ।  
অবশ্য, এই লড়াইটা শুরু হয়েছিল স্বাধীন ভারতে সংবিধানের মাধ্যমে। আর্টিকেল ১৫-‌তে বলা হয়েছে যে, সরকার লিঙ্গের ভিত্তিতে নাগরিকদের মধ্যে বৈষম্য করতে পারবে না। আর্টিকেল ১৫ (A) আর (E)-‌তে মহিলাদের প্রতি অসম্মানজনক আচরণকে শাস্তির আওতায় ফেলা হয়েছে। ২০০১ সালে National Policy for The Empowerment of Women বিলটি পাশ করানো হয়। ২০১০ সালের ৯ই মার্চ, ভারতীয় আইনসভায় এবং বিধানসভাতে ৩৩% আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়। ওই বছরই আন্তর্জাতিক মহিলা দিবসে ভারত সরকার The National Mission for Empowerment of Women (NMEW) গঠন করে।
 
এর মধ্যে ভারতে মুসলিমদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান জানতে জাস্টিস রাজিন্দার সাচারের নেতৃত্বাধীন কমিটি ২০০৬ সালের নভেম্বর মাসে যে রিপোর্ট প্রকাশ করে তাতে কিছু নগ্ন সত্য বেরিয়ে আসে। ৬-১৪ বছর বয়সী বাচ্চাদের গ্রুপে ২৫% মুসলিম শিশু স্কুল থেকে ড্রপ আউট হয়। মাত্র ১৭% মুসলিম কিশোর মাধ্যমিক পাশ করে। মুসলিম যুবকদের মধ্যে বেকারত্বের হার দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ। সাচার কমিটি এই সমস্যাগুলি মেটাবার জন্য কিছু সুপারিশ করেছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল মুসলিম মহিলাদের শিক্ষার উন্নতির জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া। এর আগেও আইনি সংস্থানের মাধ্যমে ভারতীয় মহিলাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান উন্নত করার কথা বলা হয়েছিল। ২০০১ সালে National Policy for the Empowerment of Women তে বলা হয়, “Equal access to education for women and girls will be ensured. Special measures will be taken to eliminate discrimination, universalize education, eradicate illiteracy, create a gender-sensitive educational system, increase enrolment and retention rates of girls and improve the quality of education to facilitate life-long learning as well as development of occupation/vocation/technical skills by women”.‌
 
মুশকিল হচ্ছে আইন বা কমিটির সুপারিশ কোনোকালেই ভারতীয় সমাজে মহিলাদের অবস্থান উন্নত করার জন্য যথেষ্ট নয়। পিতৃতান্ত্রিক সমাজ মনে করে যে, তারা নারীকে সমান অধিকার দিয়ে থাকে। কিন্তু, সমান অধিকার যে নারীর স্বাভাবিকভাবেই প্রাপ্য এবং কোনোভাবেই তা পুরুষের দেওয়ার জিনিস নয়, এই সারসত্যটা আমাদের সমাজ এখনও বুঝে উঠতে পারেনি। এবং একই সাথে কয়েক হাজার বছর ধরে মেয়েদের মাথায় ঢোকানো হয়েছে যে, তারা আদতে ‘ইনফিরিয়র ক্লাস’ এবং পুরুষের আজ্ঞাবাহী হওয়াটা তাদের অবশ্যকর্তব্য। ধর্ম থেকে সামাজিক জীবন, যাবতীয় শেকল মেয়েদের জন্যই সৃষ্টি। ঘরের কাজ-বাইরের কাজ, এই শ্রেণিবিভাগটাও একান্তভাবেই পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার ফসল। যখন আমরা উইমেন এমপাওয়ারমেন্টের কথা বলছি, তখন তার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে মানসিকতার পরিবর্তন। Daniel Carmon (২০১৩) লিখলেন, “Education is an essential means of empowering women with the knowledge, skills and self-confidence necessary to fully participate in the development process.” অর্থাৎ, মহিলাদের সমানধিকারের জন্য চেতনা তৈরিতে শিক্ষার ভূমিকা সর্বাধিক। উপযুক্ত শিক্ষার মাধ্যমেই এই পিতৃতান্ত্রিক সংস্কারের জগদ্দল পাথরটা নড়ানো সম্ভব।

কিন্তু এই মুহূর্তে ভারতীয় মুসলিম মহিলাদের শিক্ষাক্ষেত্রে অবস্থান মোটেই উল্লেখ্য নয়। সরকারি স্কুল রিপোর্টকার্ড (২০১৪-১৫) অনুযায়ী, গড়পড়তা ৫০% মুসলিম মহিলা স্কুলে গিয়ে থাকে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ এই রিপোর্ট থেকে পাওয়া যায়। ক্লাস ওয়ান থেকে টুয়েলভের মধ্যে প্রায় ৪০% মুসলিম মেয়ে স্কুল থেকে ড্রপ আউট হয়। এবং এই ড্রপ আউট সবচেয়ে বেশি হয় মাধ্যমিকের পর। অর্থাৎ, মাধ্যমিক পাশ করার পর অধিকাংশ মুসলিম মেয়ে আর পড়ার সুযোগ পায় না। 

এ প্রসঙ্গে আরেকটি তথ্য দিয়ে রাখা যাক। ২০০৪-০৫ সালে সাচার কমিটি রিপোর্ট দেখিয়েছিল যে, মোট জনসংখ্যার ৪.৪% মুসলিম যুবক গ্রাজুয়েশন পড়তে যায়। ২০০৯-১০ সালের স্যাম্পল সার্ভেতে সংখ্যাটা একটু বেড়ে হয় ১১%। ২০১৩-১৪-‌তে উচ্চশিক্ষায় মুসলিম যুবক-যুবতীদের অংশগ্রহণ বেড়ে হয় ১৮% এবং ২০১৮-‌তে তা ৩৭%-‌এ দাঁড়িয়েছে।
 
ন্যাশনাল স্যাম্পল সার্ভের ২০০০ সালের রিপোর্টে শহর এলাকায় ৬.০৩% আর গ্রামে মাত্র ১.২২% গ্রাজুয়েট মুসলিম মহিলা পাওয়া গিয়েছিল। তবে গত দেড় দশকে এই অবস্থার খানিক হলেও পরিবর্তন ঘটেছে। All India Survey on Higher Education (২০১৭-১৮)-‌এর রিপোর্ট অনুযায়ী, গত পাঁচ বছর উচ্চশিক্ষায় মুসলিম মহিলাদের এনরোলমেন্ট বেড়েছে ৪৬%, যা অত্যন্ত ইতিবাচক।
   
নতুন যুগের শিক্ষিত ভারতীয় মুসলিম মহিলারা ধর্মীয় গোঁড়ামি আর সামাজিক রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন। তিন তালাকের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন তাঁরা। সম্প্রতি, আমাদের দেশে বিতর্কিত নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনেও পুরোভাগে ছিলেন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া শিক্ষিত মুসলিম মহিলারা। সাফুরা জারগার, সদ্য জামিন পাওয়া বছর সাতাশের এই সাহসিনীকে নিশ্চয় আমরা ভুলে যাইনি। এই প্রসঙ্গেই উঠে আসে মালালা ইউসুফজাই-‌এর কথা। ২০১২ সালের ৯ই অক্টোবর, তালিবান জঙ্গীরা গুলি করে হত্যা করতে চেয়েছিল ১৫ বছরের মালালা ইউসুফজাইকে। অপরাধ ছিল গোঁড়া ধর্মান্ধ তালিবানদের হুকুমের বিরুদ্ধে সে মুসলিম মেয়েদের পড়ার কথা বলত। গুরুতর আহত হয়েও প্রাণে বেঁচে যাওয়া সেদিনের কিশোরীটি আজ গোটা পৃথিবীর মেয়েদের লড়াইয়ের উজ্জ্বল প্রতীক। ইউনাইটেড নেশনসের অন্যতম মুখ এই মেয়েটি এখন বিশ্বের সর্বত্র মেয়েদের শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথা প্রচার করছেন।  
শিক্ষাক্ষেত্রে মুসলিম মহিলাদের উপস্থিতি বৃদ্ধি তাঁদের ক্ষমতায়নের পথে প্রথম ধাপ মাত্র। শিক্ষিত, আর্থিকভাবে স্বনির্ভর মহিলারা নিজেদের অবস্থান জানানোর ক্ষেত্রে আত্মবিশ্বাসী হবেন। সমাজে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইটা সুগম হবে। এখানে পিতৃতান্ত্রিক সমাজেরও মানসিকতা পাল্টানোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তাঁরা যতদিন না নারীকে ভোগ্যপণ্যের বাইরে আলাদা স্বাধীন সত্তা হিসেবে ভাবতে শুরু করবেন ততদিন উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট বা নারীদের সমান অধিকারের লড়াই সফল হওয়া সম্ভব নয়। এক্ষেত্রেও শিক্ষা ব্যবস্থার ভূমিকা আছে। লিঙ্গবৈষম্য, সামাজিক ভেদাভেদ, সমান অধিকার ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষার মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করা দরকার। এবং, বর্তমানে এসব বিষয়ে চর্চাও যথেষ্ট বেড়েছে, এটাই আশার। 

অতএব, অপেক্ষা এখন একটা নতুন দিনের। যেদিন মুসলিম মহিলারা স্বাধীনভাবে তাদের জীবনযাপন করার অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন। যেদিন আসমিরা বিবির মত অসংখ্য মহিলাকে মাথা নামিয়ে বাঁচতে হবে না। পুরুষ নারীকে তার ইচ্ছাধীন বস্তু ভাববে না।  

কবে আসবে সেই দিন? তার উত্তর সময়ই বলবে। তবে তার জন্য লড়াই কিন্তু থেমে নেই। দেশের প্রতিটি মেয়ে, যারা লিখতে পড়তে শুরু করছে, তারা প্রত্যেকে এই মহাযুদ্ধের অংশীদার।

প্রতীকী ছবি

লেখক : অধ্যাপক, প্রাবন্ধিক

পুনঃপ্রকাশ, প্রথম প্রকাশ ১০ জুলাই ২০২০

1 Comments

Biplab Halder

11 July, 2020

খুব ভালো লিখেছো দাদা

Post Comment