- 09 December, 2021
- 0 Comment(s)
- 760 view(s)
- লিখেছেন : তামান্না
১
আহারে, কয়েকদিন থেকে আমাদের অতি প্রিয় যশস্বী নকশাকার সব্যসাচীর সময় বিশেষ ভালো যাচ্ছে না। বারবার সমালোচনার মুখে পড়ছেন। প্রথমে, মঙ্গল সূত্র বিতর্কে জড়ালেন! অর্ধ উলঙ্গ 'মডেল’ দিয়ে মঙ্গলসূত্রর বিজ্ঞাপন অপরাধে, আইনি নোটিস পেলেন। এরপর, বলিউড অভিনেত্রীর বিয়ের ওড়নায়-ভুল বানান, খিচুড়ি ভাষা ব্যবহার করে ফের সামাজিক মাধ্যমে হেনস্তার শিকার হন। দিন কয়েক আগে নতুন গয়নার সংগ্রহ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে মডেলদের ছবি শেয়ার করেছিলেন সব্যসাচী। হেমন্ত-শীত সংগ্রহে ফাইন জুয়েলারির ১৮/২২ক্যারেট সোনায় আনকাট এবং উজ্জ্বল কাটা হীরা, ওপাল, মুক্তো,পান্না, অ্যাকোয়ামেরিন এবং রঙিন পাথরের কণ্ঠহার পরিহিত মডেলদের দেখা যায়। মডেলরা কণ্ঠহার পরে গোমড়া মুখে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছেন। জেল্লাহীন ত্বক। প্রথা ভেঙে বিজ্ঞাপন বানিয়ে তিনি তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। আই ক্যান্ডি মডেলদের অনুপস্থিতি দেখে আন্তর্জালিক নাগরিকরা বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন। অবসাদগ্রস্ত মডেলদের দেখে তাঁরা হতাশ হয়ে, সব্যসাচী কেন শিল্পের অবমাননা করেছেন তাই নিয়ে ভুরিভুরি সমালোচনা করেছেন। যাইহোক, এবার আসা যাক মূল প্রসঙ্গে। এতক্ষন ধান ভানতে অনেক শিবের গীত গাওয়া হয়েছে। সব্যসাচীর বিজ্ঞাপনটির অর্থোদ্ধার করলে দেখা যাচ্ছে, যে ভাবে কণ্ঠহার দ্বারা মডেলদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হয়েছে তা একেবারে অতিরিক্ত নয়, নকশাকার দেখাতে চাইছেন শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মত কণ্ঠহারটি একটি অঙ্গ। কারণ মডেলদের শরীরের রঙ, অঙ্গভঙ্গি অলঙ্কারটির সঙ্গে একীভূত।
ছোট বয়স থেকে আমাদের পিতারা কৌশলে মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছেন, গয়না পরে সুন্দরী সাজতে হবে। যার যত বেশি স্বর্ণের অলঙ্কার রয়েছে, তাঁর গর্বর মাত্রাও ততটাই বেশি! আমার এত ভরি গয়না, আমার স্বামী,শাশুড়ি, চোদ্দগুষ্ঠি এত ভালবেসে এত গয়না দিয়েছেন বলতে বলতে অনেক নারী আনন্দে গদগদ হয়ে কণ্ঠ বুজে ফেলেন। সত্যিই আনন্দ হবার কথা! এতো গয়নাগাটি থাকলে কে না আনন্দিত হয়! নিজেদের অজান্তেই নারীরা অলঙ্কারকে শরীরের অঙ্গ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে! তাজ্জব হতে হতে একসময় ভেবলা রোগে আক্রান্ত হয়ে কী যে ভাবি তাহাও ভুলিয়া গিয়ে ইন্সট্রাগ্রামে নেপোর দই মারা দেখতে দেখতে, স্বপ্ন দেখতে থাকি ঐ নামকরা পণ্যের তকমা দেওয়া গয়নার!
রোকেয়া বলেছিলেন, ‘আর ঘুমাইও না; এখন আর রাত্রি নাই, এখন সুবেহ সাদেক মোয়াজ্জিন আজান দিতেছেন।’ মাতা, ভগিনী, কন্যার বয়েই গেছে সেই ডাকে সাড়া দিতে! সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত, যে বলয়ে আটকে আছে সেখান থেকে বেরনোর প্রশ্ন নেই! রোকেয়া, আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে বলেছিলেন। নিজের অধিকারের জন্য সরব হতে বলেছিলেন। আমরা আজকে শিক্ষিত হয়েছি, কিন্তু নিজের অধিকার নিয়ে, নিজের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে কতখানি সরব হতে পারি, বলুন তো? অশান্তির জন্য ঘরে-বাইরে আমরা আপোস করে চলি। মিথ্যে এক জগতে বাস করি। 'স্ত্রীজাতির অবনতি 'প্রবন্ধে রোকেয়া আমাদের এই অতি প্রিয় অলঙ্কার প্রসঙ্গে বলেছিলেন- "আর এই যে আমাদের অতিপ্রিয় অলঙ্কারগুলি-এগুলি দাসত্বের নিদর্শন বিশেষ! এখন ইহা সৌন্দর্য্যবর্দ্ধনের আশায় ব্যবহার করা হয় বটে; কিন্তু অনেক মান্যগণ্য ব্যক্তির মতে অলংকার দাসত্বের নিদর্শন (originally badges of slavery) ছিল। তাই দেখা যায় কারগারে বন্দীগণ পায় লৌহনির্ম্মিত বেড়ী পরে, আমরা (আদরের জিনিষ হাতকড়ী স্বর্ণ বা রৌপ্য-নির্ম্মিত চুড়ি! বলা বাহুল্য, লোহার বালাও বাদ দেওয়া হয় না! কুকুরের গলে যে গলাবদ্ধ (dogcollar) দেখি, উহারই অনুকরণে বোধ হয় আমাদের জড়োয়া চিক নির্ম্মিত হইয়াছে! অশ্ব হস্তী প্রভৃতি পশু লৌহ-শৃঙ্খলে আবদ্ধ থাকে, সেইরূপ আমরা স্বর্ণ-শৃঙ্খলে কণ্ঠ শোভিত করিয়া মনে করি “হায় পরিয়াছি”। গো-স্বামী বলদের নাসিকা বিদ্ধ করিয়া “নাকাদড়ী” পরায়, এদেশে আমাদের স্বামী আমাদের নাকে “নোলক” পরাইয়াছেন!! ঐ নোলক হইতেছে “স্বামী”র অস্তিত্বের (সধবার) নিদর্শন! অতত্রব দেখিলেন ভগিনি! আপনাদের ঐ বহুমূল্য অলঙ্কারগুলি দাসত্বের নিদর্শন ব্যতীত আর কি হইতে পারে? আবার মজা দেখুন, তাঁহার শরীরে দাসত্বের নিদর্শন যত অধিক, তিনি সমাজে ততোধিক মান্যা গণ্যা!"
কী আর করা যাবে আমাদের দাসত্ব-শৃঙ্খলে আবদ্ধ থাকতেই ভালো লাগে!
২
আজ্ঞাবহ দাস রে আমার, আজ্ঞাবহ দাস । (আজ্ঞাবহ দাস,নবারুণ ভট্টাচার্য )
স্ত্রীজাতির অবনতি প্রবন্ধের সূচনাতেই রোকেয়া বলেছেন- “পাঠিকাগণ! আপনারা কি কোন দিন আপনাদের দুর্দ্দশার বিষয় চিন্তা করিয়া দেখিয়াছেন? এই বিংশ শতাব্দীর সভ্যজগতে আমরা কি? দাসী! পৃথিবী হইতে দাস ব্যবসায় উঠিয়া গিয়াছে শুনিতে পাই, কিন্তু আমাদের দাসত্ব গিয়াছে কি? না। আমরা দাসী কেন?-কারণ আছে।” বেশিরভাগ নারী, নিজেদের দুর্দশা দেখেও না দেখার ভান করে, মানিয়ে নিতে নিতে অভ্যাস বশত আজ্ঞাবহ দাসে পরিণত হয়েছেন। এর জন্য কে বা কারা দোষী বলে আপনাদের মনে হয়? অবশ্যই আমরা। তাছাড়া? সুপরিকল্পিত ভাবে পিতৃতান্ত্রিক রাষ্ট্র, সমাজ, নারীদের আজ্ঞাবহ দাস করে রেখেছেন। আখেরে তাঁদের লাভ হবে, তাই জবরদস্ত ভেল্কিবাজি দেখিয়ে নারীদের চুপ করে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। আজকের দিনের আধুনিক দাসেরা ঘর-বাহির দুই দক্ষ হাতে সামলিয়ে দশভুজা উপাধি পাচ্ছে। পুরুষ সঙ্গী ঘরের কাজ, বাচ্চার দেখাশোনায় একটু সাহায্য করলে আপ্লুত হয়ে দেশ-দুনিয়াকে চিল চিৎকার করে জানাতে মরিয়া হয়ে ছোটেন। অনেকেই বলবেন, ভালোই তো করেছেন, অমুকবাবুকে দেখে তমুকবাবু অনুপ্রাণিত হয়ে জল গরম করে উনার ওয়াইফকে আজকে সকালে দিয়েছেন, অথবা তমুকবাবু আজকে রাইস কুকারে রাইস রেঁধে বাচ্চাদের খেতে দিয়েছেন! আজকের দিনে এসেও ঘরের কাজ, বাচ্চার দেখাশোনার দায়িত্ব কেবলমাত্র নারীদের কেন? বাবারা বাচ্চাদের দেখাশোনা করতে কেন ভয় পাবেন? কেন কাজ ভাগ করে নেওয়া হয় না? বীরপুরুষেরা কেবল মুখে হাতি, ঘোড়া, মারবেন! নীরব থাকতে থাকতে, পঞ্চব্যাঞ্জন রাঁধতে রাঁধতে, মিনমিন করে কাঁদতে কাঁদতে; নিজেদের আত্মসম্মান বিকিয়ে দিয়ে নির্লিপ্ত ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে মুখ বুজে চুপ করে থাকাটাই আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। প্রথাগত শিক্ষা নিয়ে আমরা অনেকেই শিক্ষিত হয়ে থাকি, কিন্তু সেই শিক্ষা কতখানি আমাদের যাপনে প্রয়োগ করি? আমরা জানি দাসত্ব দুই প্রকারের-ক) শারীরিক খ) মানসিক। রোকেয়া তাঁর ‘স্ত্রীজাতির অবনতি’ প্রবন্ধে মানসিক দাসত্বের বেড়াজাল ভেঙে বেরিয়ে আসতে বলেছেন। স্বার্থ ও লোভের কারণে মানুষ দাসত্ব করেন, এই দাসত্বের কোনো ক্ষমা নেই!
৩
কাঁকনে চুড়িতে বাজে সুর মধুর আওয়াজ (কাজী নজরুল ইসলাম)
সুন্দরীতমা হবার ইঁদুর দৌড়ে আমরা সকলে ছুটে চলেছি। নির্বোধ, নিরেট, বোকা-হাঁদা সব মেনে নেওয়া যায়! তাই বলে নিজেকে সুদর্শন না দেখালে, সাম্প্রতিক ফ্যাশন সম্পর্কে না জানলে চলে নাকি! সেকেলে, ওল্ড স্কুলের হুড়কো খাওয়ার ভয়ে ছুটে গিয়ে পিন্টরেস্ট দেখে নিজেকে আধুনিক ছাঁচে ঢেলে ফেলে, শান্তির নিঃশ্বাস ফেলি। মানসিক দুর্বলতা কারে কয়? পুরুষ কোন দুর্বলতাকে পরাজয়ের নিদর্শন ভাবেন জানার সময় নেই। কানে তুলো গুঁজে, চোখে আঙুল রেখে চলতে আমরা অনেক ভালবাসি। আজও আমাদের দেশে কাপুরুষতার উপমা হিসাবে- হাতে চুড়ি পরার উপমা দেওয়া হয়। সিনেমা, সিরিয়াল, রাস্তাঘাট, বাড়িঘর থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক কালের রাজনৈতিক নেতারা অবলীলায় এই হাতে চুড়ির উপমা ব্যবহার করেন! নিরেট মাথাদের এঁর বিরুদ্ধে তেমন একটা প্রতিবাদ করতে দেখা যায় না। রোকেয়া তাঁর ‘স্ত্রীজাতির অবনতি’ প্রবন্ধে এই প্রসঙ্গে কি বলেছেন চলুন একবার দেখি-“বাস্তবিক অলঙ্কার দাসত্বের নিদর্শন ভিন্ন আর কিছুই নহে। যদি অলঙ্কারকে দাসত্বের নিদর্শন না ভাবিয়া সৌন্দর্য্যবর্দ্ধনের উপায় মনে করা যায়, তাহাই কি কম নিন্দনীয়? সৌন্দর্য্যবর্দ্ধনের চেষ্টাও কি মানসিক দুর্ব্বলতা নহে? পুরুষেরা ইহা পরাজয়ের নিদর্শন ভাবেন। তাঁহারা কোন বিষয় তর্ক করিতে গেলে বলেন, “আমার কথা প্রমাণিত করিতে না পারিলে আমি চুড়ি পরিব”!
৪
বিয়ের মরসুম শুরু হয়ে গেছে আমাদের আধুনিক মোমের পুতুলরা অনেকেই ছিমছাম সাজতে ভালবাসেন। আবার অনেক পুতুলেরা নিজেদের মান- মর্যাদা, পারিবারিক ঐতিহ্য, রীতিকে প্রাধান্য দিয়ে জবরজং সঙ সাজতে ভালবাসেন। ভারতীয় প্রায় সকল নামকরা অলঙ্কার প্রতিষ্ঠানগুলি তাঁদের ব্রাইডাল সংগ্রহের মডেলদের মাথা থেকে পা পর্যন্ত সোনায় মুড়িয়ে উপস্থিত করার চেষ্টা করেন। দু-একটি ব্যতিক্রম ধর্মী বিজ্ঞাপন রয়েছে, সে প্রসঙ্গ এই আলোচনায় প্রাসঙ্গিক নয়। আমরা জানি, এই বিজ্ঞাপন কী ওতপ্রোত ভাবে আমাদের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই আমাদের অমঙ্গলের ভয় দেখিয়ে, পারিবারিক মর্যাদার কথা মাথায় গেঁথে, সঙ না সাজলে পাছে লোকে কিছু বলে ভয়কে বুকে চেপে, সোনায় মোড়া ঘোড়ার ডিম হিসাবে উপস্থিত হতে হয় শুভ কাজে। রোকেয়া তাঁর ‘স্ত্রীজাতির অবনতি’ প্রবন্ধে যে দুলহিনবেগমের কথা বলেছিলেন, সেই দুলহিনবেগমেরা আমাদের চোখের সামনে এখন বিরাজমান! তিনি জানিয়েছিলেন- “ঐ কুঠরীতে পর্য্যঙ্কের পার্শ্বে যে রক্তবর্ণ বানাত মণ্ডিত তক্তপোষ আছে, তাহার উপর বহুবিধ স্বর্ণাঙ্কারে বিভূষিতা, তাম্বুলরাগে রঞ্জিতাধরা, প্রসন্নাননা যে জড় পুত্তলিকা দেখিতেছেন, উহাই দুলহিনবেগম (অর্থাৎ বেগমের পুত্রবধূ)”। ইহার সর্ব্বাঙ্গে ১০২৪০ টাকার অলঙ্কার! শরীরের কোন অংশে কত ভরি সোণা বিরাজমান, তাহা সুস্পষ্টরূপে বলিয়া দেওয়া আবশ্যক মনে করি।
৫
আমাদের নজর কেবল পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনায়, সেখানে নিজেদের আরামদায়ক, অমর্যাদাকর জীবনকে পায়ে ঠেলে কী কারণে বাপু প্রতিবাদ করে জীবনে অশান্তি ডেকে আনবো! যতসব, প্রয়োজন নেই আমাদের আরামের ঘুম হারাম করার, এই বেশ আছি, অমর্যাদাকর জীবনে! অন্যরাই বরং আমাদের কথা ভাবুন, ষোল আনা উপকার হলে হবে নইলে হবে না, যাই আসে না, যেমন চলছে চলুক। অন্য কেউ আমাদের কথা বলুক। বিয়ের মরসুমে আমরা নেল আর্ট করে, কিটো অনুসরণ করে ওজন কমিয়ে, দুদিন পিলাটিস ক্লাস জয়েন করে নিজেদের সামাজিক পদমর্যাদা উচ্চস্থানে তুলে, নেচে, গেয়ে চরকি কাটি। রোকেয়া ‘স্ত্রীজাতির অবনতি’ প্রবন্ধে বলেছিলেন- “আমাদের উচিত যে স্বহস্তে উন্নতির দ্বার উন্মুক্ত করি। এক স্থলে আমি বলিয়াছি “ভরসা কেবল পতিতপাবন” কিন্তু ইহাও স্মরণ রাখা উচিত যে, ঊর্দ্ধে হস্ত উত্তোলন না করিলে পতিতপাবনও হাত ধরিয়া তুলিবেন না। ঈশ্বর তাহাকেই সাহায্য করেন যে নিজে নিজের সাহায্য করে, (“God helps those that help themselves” তাই বলি আমাদের অবস্থা আমরা চিন্তা না করিলে আর কেহ আমাদের জন্য ভাবিবে না। ভাবিলেও তাহাতে আমাদের ষোল আনা উপকার হইবে না।”
এবার আমাদের জেগে ওঠার সময় হয়েছে। রোকেয়া সেই উনিশ শতকে নিরেটদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন-“অতএব জাগ, জাগ গো ভগিনী।” আমরা এখনো শীতঘুমে আছি, মাঝেমধ্যে একটু ধাক্কা খেয়ে জেগে ওঠার চেষ্টা করি, কিন্তু আবার সেই গতে বাঁধা ছকে চলতেই থাকে। মিথ্যা পৃথিবীতে, মিথ্যার মায়াজালে জড়াতে জড়াতে, ভুলে যেতে থাকি আমরা কী চেয়েছিলাম, কী পেলাম! দাসত্বকে মাথা নত করে মেনে নিয়ে, বয়ে বেড়াই গ্লানি,অপমান। বিশ্বায়নের যুগে দাসত্ব প্রথা প্রচলিত আছে, ভেবেও অবাক লাগে! সেই আদি অনন্তকাল থেকে এই জঘন্য রীতির প্রচলন হয়েছে। ভারতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ দাস-জীবন কাটায় । ‘ফ্রি দি স্লেভ’ শীর্ষক রিপোর্ট থেকে জানা যায়- “ভারতের এক কোটি ৮৪ লাখ ৫৪ হাজার ৭০০ লোক দাস হিসেবে জীবন কাটায়। এখানে দাসত্ব পুরুষানুক্রমে চলে আসছে। জাতিসঙ্ঘের তিনটি সংস্থা- আইএলও, আইওএম (ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব মাইগ্রেশন) এবং অস্ট্রেলিয়ার ওয়াক ফ্রি ফাউন্ডেশন এই রিপোর্ট প্রণয়ন করে। ভারতীয় শ্রম মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে এই প্রথার অবসান করা হবে।”(তথ্যসূত্র-নয়া দিগন্ত, ১৯জানুয়ারি, ২০২১)
সবই তো বুঝলুম তবে আমাদের এই দাসত্ব প্রথার কবে অবসান ঘটবে? অনেক ঘ্যানঘ্যান করে, সাড়ে বত্রিশ ভাজা খাওয়ালুম, এবার বদহজম হবে, বুঝতে পেরেছি! তবুও একটু ভেবে দেখবেন আর কী...
0 Comments
Post Comment