‘সংখ্যার জাদুকরী’ আদা লাভলেস

  • 17 May, 2021
  • 0 Comment(s)
  • 674 view(s)
  • লিখেছেন : অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে ইতালির তুরিন বিশ্ববিদ্যালয়ে চার্লস ব্যাবেজ তাঁর এ্যানালিটিকাল এঞ্জিনের বিষয়ে যে ভাষণ দেন সেটিকে একটি গবেষণা-প্রবন্ধ হিসেবে ইতালিয় ভাষায় প্রকাশ করা হয়। এই প্রবন্ধটিকেই অনুবাদ করেন আদা লাভলেস এবং তার সঙ্গে জুড়ে দেন আরও সাতট ব্যাখ্যামূলক আলোচনা। সেটাই লাভলেসকে বিজ্ঞান এবং সর্বোপরি কম্পিউটার বা গণকযন্ত্রের ইতিহাসে চিরস্থায়ী একটি জায়গা করে দিতে সক্ষম হয়। নারী বিজ্ঞানচর্চার বিষয়ে ধারাবাহিক (পর্ব ১৬)

“তুমি কি তোমার মায়ের মতোই হলে? আমার একমাত্র কন্যা, আমার হৃদয়ের একমাত্র ধন!”

লিখেছিলেন কবি বায়রন। লেডি বায়রনের কোলে আসা তাঁর একমাত্র সন্তানের জন্মের কথা মনে রেখে। অথচ তার মাত্র একমাস পরেই, চিরবিচ্ছেদ। লেডি বায়রনকে ছেড়ে, চিরতরে ইংল্যান্ডকে বিদায় জানিয়ে প্রবাসযাত্রা করবেন কবি। সেদিনের সেই জন্ম নেওয়া মেয়েটির বয়স যখন আট বছর, স্বদেশ থেকে বহুদূরে গ্রীসের কোন এক শহরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবেন তার পিতা, লর্ড বায়রন। তারও প্রায় ১২ বছর পর, পিতার অবয়বকে একটি পারিবারিক চিত্রের মাধ্যমে প্রথম বারের জন্য কন্যা প্রত্যক্ষ করবেন। পিতা ছিলেন কবি, কন্যা হয়ে উঠবেন গণিতবিদ — কালক্রমে পৃথিবীর প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্র্যামার। বিদূষী এই কন্যার পরিচয়, আদা লাভলেস। জন্ম ১৮১৫, মৃত্যু ১৮৫২। এ্যানালিটিক্যাল এঞ্জিন-খ্যাত চার্লস ব্যাবেজের অন্যতম সহকর্মী।

লর্ড বায়রনের সাংসারিক জীবন সুখের হয়নি। মনেপ্রাণে নিজের সন্তানকে ভালোবাসলেও, সন্তানের জন্মের মাত্র একমাসের মধ্যেই লেডি বায়রনের সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ হয়। লেডি বায়রন সেই কন্যাকে পিতার সমস্ত রকম ‘পাগলামি’ থেকে দূরে রাখতে চেষ্টা করেছিলেন। তবু অদ্ভুৎ ভাবে, যে পিতাকে বলতে গেলে প্রায় কোনোদিন চোখেই দেখেননি, প্রথম ছবি দেখেছেন কুড়ি বছর বয়সে — আশ্চর্যজনক ভাবে সেই পিতার প্রতি আজীবন এক ভালোবাসা বুকে বয়ে নিয়ে বেড়িয়েছেন আদা লাভলেস, অথবা আদা বায়রন। এমনকি নিজের দুই সন্তানের নামকরণ করতে গিয়েও তিনি একজনের নাম দেন গর্ডন, অপরজনের নাম হয় বায়রন। কবি না হলেও, সৃষ্টি এবং বুদ্ধির জগতে আদা, আদতে লর্ড বায়রনেরই যোগ্য উত্তরসূরী হয়ে উঠেছিলেন।

প্রতিভা এবং কল্পনার মিশেলে আদার কিশোরী মন যে ক্রমশই বিকশিত হয়ে উঠেছিল, সেটি তাঁর একটি ছোটবেলাকার গল্প থেকেই পরিষ্কার হয়ে যায়। খুব ছোটবেলায়, আট বছর বয়সে আদা বায়রন কঠিন হামরোগে ভুগেছিলেন। ১৮২৯ সালের জুন মাসে তিনি প্রায় পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ক্রমশ চলচ্ছক্তি ফিরে পেলেও, এই দীর্ঘ রোগভোগের কারণেই বোধহয় তাঁর অনুসন্ধিৎসু মন আকাশের দিকে উৎসাহী হয়ে ওঠে। আকাশে কিভাবে ওড়া যায়, সেই ব্যাপারে তাঁর মন উৎসুক হয়ে ওঠে। মাত্র ১২ বছর বয়সে, আদা রীতিমতো অনুপ্রাণিত হয়ে পাখিদের শরীর ইত্যাদি নিয়ে পড়াশোনা করে ডানা বানাবার কাজে লেগে পড়েন। সেই ডানার উপকরণ কি হবে, তার গঠনশৈলীই বা কেমনটা হবে এই নিয়ে তিনি অতি উৎসাহে আঁকাজোকা শুরু করেন। এমনকি উড়বার সময়ে দিকনির্ণয়ের জন্য যে কম্পাস জাতীয় যন্ত্রের প্রয়োজন হবে, সেটিও তিনি ভেবে রেখেছিলেন। ‘ফ্লাইওলজি’ বলে একটি বই লেখবারও তিনি চেষ্টা করেছিলেন। হয়তো বা শিশুমনেরই নিছক কল্পনা, তবুও — সেই কল্পনার পিছনে একটা ভাবনা, বৈজ্ঞানিক উপায়ে ধাপে ধাপে সমস্যাকে নিরসন করবার যে প্রচেষ্টা, এই বুদ্ধিই বোধহয় শেষ অবধি আদাকে প্রোগ্র্যামার করে তুলতে পেরেছিল। সমস্যাকে সমাধান করতে গেলে, ধাপে ধাপে সেই লক্ষ্যের দিকে পৌঁছতে হয়। আধুনিক কম্পিউটার এ্যালগরিদমেরও যে গোড়ার কথা এটাই। আদাও সেই লক্ষ্যেই এগুতে চেয়েছিলেন।

গৃহশিক্ষিকা মেরি সমারভিলের সংস্পর্শে এসেই অঙ্ক এবং বিজ্ঞানের প্রতি আদার আগ্রহ বেড়ে ওঠে। মেরিই আদাকে চার্লস ব্যাবেজের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এছাড়াও এই মেরির সূত্র ধরেই একে একে আদা পরিচিত হন, স্যার ডেভিদ ব্রুস্টার, চার্লস হুইটস্টোন, মাইকেল ফ্যারাডে এবং চার্লস ডিকেন্সের সঙ্গে। ১৮৩৫ সালে আদার বিবাহ হয় উইলিয়াম কিংয়ের সঙ্গে, যিনি পরবর্তীতে আর্ল অব লাভলেস উপাধিতে ভূষিত হন। আদা বায়রন থেকে আদা লাভলেস হিসেবেই পৃথিবীর কাছে পরিচিত হয়ে উঠতে শুরু করেন কবি বায়রনের এই কন্যা। উইলিয়াম কিং নিজে, এবং মেরি সমারভিলের তদারকিতে আদার শিক্ষা ক্রমশ বিকশিত হয়। এমনকি গণিতবিদ অগাস্টাস ডি-মরগ্যানের কাছেও আদার শিক্ষালাভের সুযোগ ঘটে। অধ্যাপক ডি-মরগ্যানের কাছেই সংখ্যাতত্ত্ব এবং বার্নৌলী সারণীর সম্পর্কে জানতে পারেন আদা লাভলেস। পরবর্তীতে এই বার্নৌলী সারণীর সংখ্যাগুলিকে কাজে লাগিয়েই তিনি ইতিহাস গড়ে ফেলবেন। চার্লস ব্যাবেজের গবেষণাগারে ততদিনে জোরকদমে আদার যাতায়াত শুরু হয়ে গেছে।

জুন, ১৮৩৩ সালে প্রথমবারের জন্য চার্লস ব্যাবেজের সঙ্গে পরিচিত হন আদা লাভলেস। সেই মাসেই আদাকে নিজের গবেষণাগারে আমন্ত্রণ জানান চার্লস। তাঁর তৈরি ডিফারেন্স এঞ্জিনের প্রথম কার্যকরী নমুনা বা প্রোটোটাইপটিকেও ব্যাবেজ হাতে কলমে চালিয়ে, আদার কাছে সেটির কার্যক্ষমতাকে ব্যাখ্যা করতে চেষ্টা করেন। চার্লস এই সময় আদাকে ‘এনচ্যান্ট্রেস অব নাম্বার্স’ বা ‘সংখ্যার জাদুকরী’ বলে তাঁদের একটি ব্যক্তিগত পত্রে অভিহিত করেন। ১৮৪২-৪৩, এই সময়ে – দীর্ঘ প্রায় ৯মাস ধরে আদা ব্যাবেজের এ্যানালিটিকাল এঞ্জিন সংক্রান্ত একটি গবেষণাপত্রকে ইতালিয়ান থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করেন। প্রকৃতপক্ষে ১৮৪০ খ্রিস্টাব্দে ইতালির তুরিন বিশ্ববিদ্যালয়ে চার্লস ব্যাবেজ তাঁর এ্যানালিটিকাল এঞ্জিনের বিষয়ে একটি আমন্ত্রিত ভাষণ দেন। প্রসঙ্গত বলে রাখা ভালো, এই এ্যানালিটিকাল এঞ্জিনটিই হল আজকের আধুনিকতম কম্পিউটারগুলির আদিমতম পূর্বপুরুষ। তুরিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাবেজের প্রদত্ত ভাষণটিকে হুবহু লিপিবদ্ধ করে সেটিকে একটি গবেষণা-প্রবন্ধ হিসেবে প্রকাশ করা হয়। ইতালিয়ান ভাষায় প্রকাশিত এই গবেষণা-প্রবন্ধটিকেই অনুবাদ করেন লাভলেস, এবং সেই অনুবাদের সঙ্গে জুড়ে দেন আরও সাতটি নোটস বা ব্যাখ্যামূলক আলোচনা। এই নোটস-সম্বলিত সম্পূর্ণ অনুদিত গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয় সেপ্টেম্বর ১৮৪৩এ। নোটসগুলিকে এ থেকে জি অবধি ইংরেজি হরফে চিহ্নিত করে রেখেছিলেন লাভলেস। জি-চিহ্নিত নোটসটিতে যা ছিল, সেটিই আদা লাভলেসকে বিজ্ঞান এবং সর্বোপরি কম্পিউটার বা গণকযন্ত্রের ইতিহাসে চিরস্থায়ী একটি জায়গা করে দিতে সক্ষম হয়।

কম্পিউটারের ভাষায় এ্যালগরিদম বলতে যা বোঝানো হয় তা হল, কোনও একটি গাণিতিক সমস্যার সমাধানপদ্ধতি, যা কি না ধাপে ধাপে সমস্যাটিকে ব্যাখ্যা করে, সমাধানে পৌঁছতে চেষ্টা করে। যে কোনও কম্পিউটারের ভাষাতে কোনও সমস্যাকে সমাধানের জন্য, প্রোগ্রাম লিখতে গেলে প্রথম যেটি লেখা দরকার সেটি হল এই এ্যালগরিদম বা সমাধানপদ্ধতি। পূর্বের গবেষণাপত্রটির অংশ হিসেবে লেখা নোট জি’তে আদা লাভলেস, এ্যানালিটিকাল এঞ্জিনকে ব্যবহার করে বার্নৌলীর সংখ্যাগুলিকে পরপর নির্ণয়ের জন্য একটি এ্যালগরিদম বা সমাধানপদ্ধতিকে সকলের বিবেচনার জন্য প্রকাশ করেন। কম্পিউটার সায়ান্সের ইতিহাসে এটিই প্রথম, সার্থক, প্রকাশিত এ্যালগরিদম বা সমাধানপদ্ধতি বলে মনে করা হয়।

আদা লাভলেসই প্রথম কম্পিউটারকে কেবলমাত্র গণকযন্ত্র হিসেবে না ভেবে, তার মাধ্যমে যে বিভিন্ন ব্যবহারিক সমস্যার সমাধান করা চলে সেই বিষয়ে আলোকপাত করেন। এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিষয়েও কিছু টুকরো মন্তব্য তাঁর বিভিন্ন বক্তব্যের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায়। যন্ত্রকে কেবলমাত্র গণনার উপকরণ হিসেবে না দেখে, তা দিয়ে যে ব্যবহারিক সমস্যার সমাধান এবং দ্রষ্টব্য প্রতিফল বা আউটপুট পাওয়া যেতে পারে এই বিষয়েই তিনি ধারণা দিতে চেয়েছিলেন।

কবি বায়রনের কন্যা বলেই হয়তো বা মেধার পাশাপাশি কল্পনার ক্ষেত্রেও একটা উন্মেষ ছিল আদা লাভলেসের। তাই শুষ্ক গণনার দিকে না গিয়ে কিভাবে বিজ্ঞানকে ব্যবহারিক প্রয়োগে লাগানো যায় সেই বিষয়ে কল্পনার আশ্রয় নিতে তিনি দ্বিধা করেননি। যুক্তি, মেধা এবং কল্পনা – এই তিনের মিশেলেই সঠিক উৎকর্ষের সন্ধান মেলে। আদা লাভলেসের কাছে ক্যালকুলাসের জটিল তত্ত্বকেও কবিতার মতো মনে হয়েছে, যা কিনা আদতে কোনও বিশেষ চলরাশির বিভিন্ন অবস্থার বৈশিষ্ট্যকে একেকটি সময়ে চিত্রিত করতে চেষ্টা করে। ১৮৪৪ সালে মানুষের মস্তিষ্কের একটি গাণিতিক মডেল তৈরির বিষয়েও তিনি চিন্তাভাবনা শুরু করেছিলেন। সেই সূত্রেই তিনি ইলেক্ট্রিক্যাল এঞ্জিনিয়রিংয়ের স্থানীয় একটি গবেষণাগারেও কিছুদিন যাতায়াত করতে শুরু করেন এবং ইলেক্ট্রিক্যাল এঞ্জিনিয়রিংয়ের বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাতেও হাত পাকান। দুরারোগ্য ক্যানসারে আক্রান্ত হবার কিছুদিন আগে পর্যন্তও তিনি ব্যারন কার্ল ভন রাইকেনবাখের চুম্বকতত্ত্বের উপরে লেখা একটি গবেষণাপত্রের বিষয়ে রিভিউ লেখবার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। যদিও সে কাজটি আর তিনি সম্পূর্ণ করে যেতে পারেননি। ১৮৫১ সালে, নিজের মাকে লেখা একটি চিঠিতে তিনি যে অঙ্ক এবং সঙ্গীতের বিষয়ে নতুন গবেষণা শুরু করতে চলেছেন সেই বিষয়েরও উল্লেখ রয়েছে।

২৭শে নভেম্বর, ১৮৫২ — চিরতরে ঘুমিয়ে পড়লেন সংখ্যার এই জাদুকরী, আদা লাভলেস। ব্যবহারিক জীবনে বিজ্ঞানের প্রয়োগ, অঙ্কের প্রয়োগ—এই সবকিছুর শতসহস্র ভাবনাকে মাথায় নিয়ে বয়ে চলা একটি জীবনের পরিসমাপ্তি। শেষ ইচ্ছানুযায়ী, পিতা বায়রনের পাশেই তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়েছিল। কবিতার মতো একটি জীবনের সমাপ্তি ঘটলো। অঙ্ক যে আসলে কবিতা, হয়তো বা এভাবেই আদা লাভলেসও ভাবতে চেয়েছিলেন, আমাদেরকে ভাবাতে চেয়েছিলেন। হয়তো বা মিলিয়ে দিতে চেয়েছিলেন অঙ্ক, সঙ্গীত আর ছন্দকে – বোঝাতে চেয়েছিলেন বোধহয়, বাস্তবজীবনে যতই ভেদ-ভাব থাকুক না কেন, উৎকর্ষের সর্বশ্রেষ্ট অঙ্গনে নারী-পুরুষ থেকে শুরু করে শিল্পী-সাহিত্যিক-এঞ্জিনিয়র-বৈজ্ঞানিক আদতে এঁরা সকলেই সমান, তাঁদের সৃষ্টিতেই কেবল তাঁদের সার্থকতা।

সূত্রঃ

[১] জোয়ান বম, ‘দ্য ক্যালকুলেটিং প্যাশন অব আদা বায়রন’, আর্চন, ১৯৮৬

[২] জেমস ইসিংগার, ‘আদা’জ এ্যালগরিদমঃ হাউ লর্ড বায়রন’স ডটার আদা লাভলেস লঞ্চড দ্য ডিজিটাল এজ’, মেলভিল হাউজ পাবলিশিং, ২০১৪

[৩] আলেকজান্দ্রা বেটি টুল, ইউজিন কিম, ‘আদা এ্যান্ড দ্য ফার্স্ট কম্পিউটার’, সায়েন্টিফিক আমেরিকান, ১৯৯৯

[৪] ডরিস ল্যাংলে মুর, ‘আদা, কাউন্টেস অব লাভলেস’, জন মুরে, ১৯৭৭

[৫] ডরোথি স্টাইন, ‘আদাঃ এ লাইফ এ্যান্ড লিগেসি’, দ্য এমআইটি প্রেস, ১৯৮৫

[৬]আলেকজান্দ্রা বেটি টুল, ‘আদা, দ্য এনচ্যান্ট্রেস অব নাম্বার্স – এ সিলেকশন ফ্রম দ্য লেটার্স অব আদা লাভলেস, এ্যান্ড হার ডেসক্রিপশন অব দ্য ফার্স্ট কম্পিউটার’, স্ট্রবেরি প্রেস, ১৯৯২

ছবি : আদা লাভলেস । সংগৃহীত

লেখক : প্রযুক্তিবিদ্যার গবেষক, প্রাবন্ধিক

0 Comments

Post Comment