- 22 November, 2020
- 0 Comment(s)
- 643 view(s)
- লিখেছেন : শতরূপা সিংহ
রাত সাড়ে বারোটা। কল্লোলিনী তিলোত্তমা তখন ঘুমন্ত রাজপুরী। ঘন কালো আকাশের সাদা বিন্দুবৎ তারাগুলো আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। শহরের একপ্রান্তে একটা এঁদো গলির পাঁচ নম্বর ফ্ল্যাটের দোতলার একটা কোনার ঘরে বাতি জ্বালিয়ে আমার দিদি ল্যাপটপের স্ক্রিনে চোখ রেখে অনুসন্ধানরতা। আমি একটা মস্ত হাই তুলে বললাম, ‘ওই দিদি ঘুমোতে যাবি না?’
—‘ঘুম নেই।’
—‘মা এক গ্লাস দুধ পাঠিয়েছে খেয়ে নে।’
—‘খিদে নেই।’
—‘তাহলে আছে টা কী?’
—‘কিছুই নেই।’
সামান্য হাসির উদ্রেকটাকে চেপে বললাম, ‘মায়ের ওপর রাগ করেছিস?’
—‘না রাগ নেই।’
এবার চোখটা বুঝি একটু জ্বালা করছে। ল্যাপটপের স্ক্রিন থেকে সরিয়ে নিয়ে ডান হাতের দুটো আঙ্গুল দিয়ে দিদি চোখটা একটু ডলে নিল। তারপর আমার দিকে ফিরে বলল, ‘মা এখন কোথায়?’
—‘পিতার সহিত কলহরতা।’
—‘ও...হ্যাঁ তাই তো।’
বাইরের ঘরের তুমুল কলহের গুঞ্জনধ্বনি এতক্ষণ পর দিদির কানে এসে ঢুকলো। বিগত তিন-চারদিন ব্যাপী আমাদের শান্তি নিবাসে কলহ দিবস উদ্যাপিত হচ্ছে। সেই কলহের কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু খোদ আমার দিদি। ঝগড়ার সূত্রপাত হয় সেই দিদি যবে মাস্টার্স পাশ করল তবে থেকে। দিদি রেজাল্ট এমনিতে ভালোই করেছিল শুধু মুশকিলটা হলো গিয়ে চাকরি জোটানোর ক্ষেত্রে। দিনের পর দিন মা-বাবার এই মতবিরোধ শশীকলার মতো বাড়তে বাড়তে আজ এই পরিণতি লাভ করেছে। রাত যত বাড়ছে ঝগড়াও সমান তালে বেড়ে চলেছে। মায়ের গলার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, ‘আচ্ছা, তুমি থাকতে কি এখন আমার মেয়েকে বাইরে বেরিয়ে চাকরি করতে যেতে হবে?’
—‘তাহলে মেয়েকে পুতুল সাজিয়ে ঘরের ভেতর শো-কেসে তুলে রেখে দাও।’
—‘বাইরে নানা রকম বিপদআপদ থাকে, আর একটু ম্যাচিওর হোক, তারপর না হয় চাকরি করবে। তা ছাড়া ও তো যথাসাধ্য চেষ্টা করছে নাকি, নিজের চাকরিটা তো ধরে রাখতে পারলে না এখন মেয়েটার ওপর চোটপাট করছো?’
—‘তা চাকরিটা যে গেল সেটা কি আমার দোষ? শুনলে না করোনার জন্য আমেরিকায় আর বাইরে থেকে আসা লোকেদের অফিসে কাজ করতে দিচ্ছে না। তা মেয়েকে কাজে যেতে দেবে না তো বিয়ে দিয়ে দাও। ঝামেলা চুকুক্।’
—‘হুম...বললেই হলো। তা বিয়েতে পণের টাকা আসবে কোত্থেকে শুনি! হাতে তো এখন কোনো ইনকাম নেই।’
—‘সেইজন্যই তো বলছিলাম রুমি যদি কোনো একটা চাকরির ব্যবস্থা করতে পারতো তাহলে আর সমস্যা ছিল না। সেই বিয়ে তো একদিন ওকে করতেই হবে। তা ছাড়া ছেলেটা এখনও ছোটো। ওর তো একটা ভবিষ্যৎ আছে নাকি, যা জমিয়েছি তাতে খরচ সামাল দেওয়াটা মুশকিল তা বুঝতেই তো পারছো। ছ-সাত মাস ধরে ঘরে বসে আছি। গরিবদের জন্য তাও সরকার অনেক কিছু ভাবছে আর সবকিছুতে মার খায় খালি আমাদের মতো কিছু মধ্যবিত্ত ছা-পোষা মানুষ। বলি এই বয়সে এঁদো দেশে চাকরি খুঁজলে কি আর পাবো? খেয়ে পড়ে তো বাঁচতে হবে নাকি। তোমরা মা-মেয়ে দুজনেই সমান। তোমাকে বিয়ের পর কতবার বলেছি একটা কোনো কাজ জোগাড় করো, তা শুনলে না। আর এখন চিৎকার করে কি লাভ?’
—‘ওসব বাইরে চাকরি করে আসার পর বাড়ি ফিরে তোমার সেবা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। করতে কি চাইনি আমি? ভুলে গেলে সেদিনটার কথা। রুমির তখন এক বছর বয়স। ভালো অপারচুনিটিও এসেছিল। বললাম চাকরিটায় জয়েন করে যাই। তুমি তো চিরকাল কাজ নিয়েই ব্যস্ত। বললে, না । বাচ্চা সামলানো আমার দ্বারা হবে না। তা বাচ্চা নেবে অথচ সামলাবে না, তাহলে চলবে কেমন করে?’
—‘উফফ্ আমি তখন এই ফরেন কোম্পানিটার সাথে ডিল সাইন করতে ব্যস্ত। জানবো কী করে যে একদিন এমন অবস্থা হবে।’
—‘সেই তো বিপদে মানুষ চেনা যায়। তুমি ভরসা দিয়েছিলে বলেই এতদিন আমরা আশা নিয়ে বসেছিলাম। আজ ভাবছি তোমার ওপর এত নির্ভর না করলেই হত...’
দিদি আবার মনোযোগ দিয়ে কাজে বসে পড়েছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম,‘কী খুঁজছিস তুই?’
—‘জীবনের উদ্দেশ্য।’
—‘মানে?’
—‘চুপ থাক।’
দিদির গলায় বিরক্তি স্পষ্ট। এতদিন দিদি তার মনের সব কথা কাউকে বলতে না পারলেও আমাকে খুলে বলতো। বুঝতে পারলাম যে আজ দিদির মনের এমন একটা জায়গায় ঘা পড়েছে যে সেটা কাউকে বিশেষত আমাকেও দেখাতে পারছে না। বেশ কিছুক্ষণ এভাবে কেটে গেল। প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম। ঘরে পাখার হাওয়াও গায়ে এসে লাগছে না। বাইরে যেন কোনো হাওয়াই বইছে না। রাস্তাঘাট সব শুনশান। মা-বাবার ঝগড়া তখনও চলছে। দিদি তার ল্যাপটপটা বন্ধ করে প্রথমে একটু জোরে শ্বাস নিল। তারপর চোখ বন্ধ করে বিছানার ধারটায় হেলান দিয়ে বসল। মুখে প্রসন্নতার ছাপ ফুটে উঠেছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘কী রে দিদি, কি হল?’ জানলার পর্দাটা একটু ঠেলে বাইরের দিকে তাকিয়ে দিদি বলল,‘অপু, দেখে যা আজ চাঁদটা কি সুন্দর উঠেছে।’
আমিও ছুটলাম চন্দ্রের শোভা দর্শনে। বিছানা টপকে দিদির রোগা রোগা পাগুলোর ওপর উলটেপালটে পড়ে হুমড়ি খেয়ে আমার চন্দ্রদর্শন করা হল। বোধ করি, আমার এসব কাণ্ডকলাপে দিদি বেশ মজা পায়। আমি জানলা দিয়ে এদিক-ওদিক দেখে যাচ্ছি, দিদি বলল,‘যা, রাত হয়েছে ঘুমিয়ে পড়। কাল সকাল করে উঠে ভালো করে পড়াশোনা করবি।’
রাত নয় তখন ছিল মাঝরাত। দিদি ঘরের লাইট অফ্ করে বিছানায় শুয়ে পড়লো। আমি পাশেই শুয়েছিলাম। প্রচুর ক্লান্ত সে। তাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়েও পড়লো। আমি একটু উসখুস করে ঘুমোনোর চেষ্টা করছি। বাইরের ঝগড়ার আওয়াজটা দাপাদাপি করতে করতে যেন দূরে পালিয়ে যাচ্ছে।
সকাল বেলা চোখ খুলে দেখি দিদি পাশে নেই। তারপর সারা বাড়ি খুঁজেও তার সন্ধান মিললো না। বাবা-মা দুজনেই যথেষ্ট চিন্তিত। তবে আমি হলফ করে বলতে পারি যে দিদিকে নিয়ে বাবার থেকে মায়ের চিন্তা অনেক অনেক গুণ বেশি। সেই ছোটো থেকে একই জিনিস দেখে আসছি। দিদি মায়ের পূর্ণ স্নেহ পেলেও বাবার ভালোবাসা কোয়ার্টার ভাগে এসেই আটকে গেছে। এই নিয়ে প্রায় সর্বক্ষণ মা-বাবার বিরোধ চলে। মাকেও যে আমার বাবা খুব বেশি প্রাধান্য দেন তাও নয়। মা সবসময় আমার দিদিকে নিয়ে ‘আমার মেয়ে’ বলে গর্ব করে আসতেন। আজ সেই একমাত্র মেয়ের অন্তর্ধানে মা একেবারে ভেঙে পড়েছেন। আমরা তিনজনই দিদিকে অনেকবার ফোনে পাওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রতিবারই ওপার থেকে জবাব মিলেছে নট রিচেবেল। কোথায় হারিয়ে গেল দিদি? হয়তো পালিয়ে গেছে শান্তির খোঁজে অন্য কোথাও অন্য কোনোখানে। গোটা একটা দিন প্রায় অতিক্রান্ত। বাবার বিরক্তির কোনো সীমা নেই। তিনি সারাদিন ধরে ঘ্যানঘ্যান করে মায়ের মাথা খারাপ করেছেন। মায়ের প্রায় পাগল পাগল দশা। ইতিমধ্যে দিদির সমস্ত বন্ধুবান্ধব থেকে শুরু করে আত্মীয়স্বজন পাড়াপ্রতিবেশী সকলকে ফোন করা হয়ে গেছে। কোথাও খোঁজ পাওয়া যায়নি। বাবা ঠিক করলেন এবার পুলিশকে ব্যাপারটা জানাবেন। মা সম্মতি দেওয়ার সময় একটু ইতস্তত বোধ করছিলেন বটে, ঠিক হল যা করার তা কাল সকালেই করা যাবে।
সকাল হল। একটা অ্যাবনরমাল সকাল। দিদিকে ছাড়া আমার সবকিছুই যেন অস্বাভাবিক মনে হয়। একরাশ ঝলমলে রোদ বিছানার ওপর এসে পড়েছে। সাদা চাদরটা ঠিকরে মেলেছে সেই আলো। গোটা ঘর যেন এক সোনালী আলোকময়। ঘরের সমস্ত কোণার যত অন্ধকার এসে জমেছে কেবল আমারই মনে। বাবা থানায় যাওয়ার জন্য উদ্যোগ করছেন এমন সময় আমার ফোনের স্ক্রিনে লেখা উঠলো দিদি কলিং। আমি ফোনটা ধরেই চিৎকার চেঁচামেচি লাগিয়ে দিলাম, ‘হ্যাঁ দিদি তুই কোথায় কেন কেমন আছিস কোথায় আছিস বল না... ’
ওপার থেকে শুনলাম সেই পরিচিত শান্ত মধুর স্বর, ‘বাবাকে ফোনটা দে।’
ছুটে বাইরের ঘরে গিয়ে বাবাকে ফোনটা দিলাম। বাবা একবার ফোনটার দিকে তাকিয়ে কানে চেপে ধরলেন, ‘হ্যালো'
—‘হ্যালো বাবা তোমরা চিন্তা কোরো না আমি একদম ঠিক আছি। আমি এখন বেঙ্গলে নেই পাঞ্জাবে চলে এসেছি কাল ভোরের ফ্লাইটে। এখানে আমি একটা চাকরি পেয়েছি। এখানকার একটা বড়ো নামকরা রেস্তোরাঁয় শেফ-এর কাজ।’
ফোনটায় স্পিকার অন করা ছিল। ওপার থেকে পরিষ্কার শোনা গেল দিদির উত্তেজিত গলার স্বর। একদমে কথাগুলিকে বলে নিয়ে সে বুঝি এখন একটা নিঃশ্বাস ফেলল। বাবা চিন্তিত মুখে বলে উঠলেন,‘শেফ-এর কাজ? মানে ওই হোটেলে রান্নাবান্না করার কাজ?’
—‘হ্যাঁ, ওই আর কী।’
—‘তা রান্নাবান্না তো ঘরেও করা যেত তার জন্য বাড়ির লোককে চিন্তায় ফেলে পাঞ্জাবে পালিয়ে যাওয়ার কোনো দরকার ছিল না।’
—‘পালিয়ে আমি আসিনি বাবা। আমি আগেই অ্যাপ্লাই করে রেখেছিলাম। সব কিছু প্রিপ্ল্যানড্। ইচ্ছা করেই তোমাদের কিছু জানাইনি সারপ্রাইজ দেব বলে। ওরা কিছুদিন সময় নিয়েছিল। পোস্টটা ফাঁকা হতেই আমাকে জয়েন করে নেয়। কাল সারাদিন ওই জন্যই তো ফোনে কোনো খবর দিতে পারিনি। ওরা একটা ইন্টারভিউ নিয়েই আমাকে কাজে বহাল করে দিল।‘
—‘চলে এসো ওখান থেকে তাড়াতাড়ি। অত বাইরে গিয়ে চাকরি করতে হবে না।’
—‘হবে না মানে! আমার মাইনে কাজের সিডিউল সব ঠিক হয়ে গেছে। এখন আমি আর এখান থেকে ফিরতে পারব না। আচ্ছা আমি এখন একটু ব্যস্ত আছি, ফোনটা রাখছি।’
বাবা আর কিছু বলতে যাওয়ার আগেই দিদি ফোনটা কেটে দিল। মুখ গম্ভীর করে বাবা আমার হাতে ফোনটা দিলেন। শুধু চোখে পড়ল মায়ের মুখটা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
এখন প্রায় প্রতিদিনই দিদি মাকে ফোন করে। আমার সাথেও দিদির কথা হয়, তবে বেশিক্ষণ নয়। দিদি যেন ইদানিং কেমন বদলে গেছে। বাইরে গেলে সব মানুষই বুঝি কম-বেশি পালটে যায়। যেমন পালটে গেছিলেন আমার বাবা। প্রতিদিন বাবা ফোনও করতেন না মাকে। হয়তো এখানকার খবরাখবর নেওয়ার কোনো প্রয়োজন বোধ করেননি। প্রতি মাসে খালি একগোছা কাগজের নোট পাঠিয়ে দিতেন মাকে। তবে তাতেও মাঝেমধ্যেই অনিয়ম দেখা যেত। এই লকডাউনের আগে পর্যন্তও আমি আর দিদি কেবল মাকেই নিজেদের অভিভাবক বলে জেনে এসেছি। ভুলেই গেছিলাম বাবার কথা। তখন সব কিছু মা একা হাতে এত সুন্দর ভাবে সামলেছেন যে তাকে মনে করার দরকারও হয়নি। তবে বাইরে চলে গেলেও দিদি বাবার মতো আমাদের কথা একবারও ভুলে যায়নি। এবার পুজোটা কাটলো পুরো ঘরে বসেই। দিদিকে ছাড়া নিউ নরম্যাল পুজো। কাজের ব্যস্ততায় তার আর এখানে আসা হয়ে ওঠেনি। দিদি চলে যাওয়ার পর কিছুদিন পর্যন্ত মায়ের ওপর চেঁচামেচি করতে করতে বাবা এখন একেবারে চুপ হয়ে গেছেন। এই কদিনে তাঁর স্বাস্থ্যেরও বেশ কিছুটা অবনতি দেখা দিয়েছে। চোখের তলায় কালি জমেছে। খিদেও বুঝি আর তেমন নেই। রাতের ঘুমও ঠিকঠাক হয় না। ভেতরে ভেতরে যেন যুঝে চলেছেন প্রতি মুহূর্তে। কিছু একটা তাঁর কাছে অব্যক্ত, খুঁজে বেড়াচ্ছেন সেটিকেই মনের আনাচেকানাচে। তারপর হঠাৎই একদিন বাবার নামে বাড়িতে একটা পার্সেল এল। বাবা উসকোখুসকো চুলে কম্পিত পদে ঘর থেকে বেরিয়ে এলেন। পার্সেলটা নিয়ে সই করছেন এমন সময় বাবার ফোন বেজে উঠলো। দিদি ফোন করছে। আমি ছুটে গিয়ে বাবার হাতে ফোনটা দিই।
—‘হ্যালো বাবা পার্সেলটা পেয়েছো তো? ওটা আমি পাঠিয়েছি তোমাদের সবার জন্য। কিছু নতুন জামাকাপড় আছে। দেখে নিও পছন্দ হয়েছে কি না। আসলে প্রথম ইনকাম করে পুজোতে তোমাদের জন্য কিছুই করতে পারিনি। সামনে দেওয়ালি আসছে তাই ভাবলাম কিছু গিফট অন্তত পাঠাই। এখানে ধুমধাম করে দেওয়ালি সেলিব্রেট করা হবে। আমি একটু ব্যস্তই থাকবো, তাই আর আসতে পারবো না। তোমরা সব সাবধানে থেকো কিন্তু।’
বাবার মুখ থেকে কোনো কথা সরছে না। তাঁর চোখ দুটো ছলছল করছে আর জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলছেন। দিদি কোনো উত্তর না পেয়ে আবার প্রশ্ন করলো, ‘বাবা?’
—‘আমার এসব কিছু চাই না মা। তুই আমাকে জীবনের আসল, সব থেকে বড় পাঠটা পড়িয়েছিস। তুই শুধু আমার কাছে ফিরে আয়...’
লেখক: ছাত্রী, গল্পলেখক
ছবি সৌজন্য : ইন্টারনেট
0 Comments
Post Comment