- 26 May, 2023
- 0 Comment(s)
- 361 view(s)
- লিখেছেন : সরিতা আহমেদ
খ্যাতির বিড়ম্বনা ব্যাপক।
সোশাল মিডিয়ায় নারীনির্যাতনের অপরাধ প্রকাশ্যে আসা নিয়ে বেশ ক'বছর ধরে উত্তাল হয়েছে সারা
দুনিয়া, আমার দেশ এবং আমার রাজ্য। সৌজন্যে ‘মি_টু’ আন্দোলন।
কখনও কখনও উচ্চারিত কিছু শব্দবন্ধ দেশ-কাল-সময়-এর গণ্ডী পেরিয়ে পৃথিবীর নানা প্রান্তে
ছড়িয়ে পড়ে। যে শব্দের অভিঘাত খুব সুদূরপ্রসারী হয়। যে শব্দের ব্যঞ্জনা অনেক সময় জীবনের
অনেক গোপন সত্য উদ্ঘাটনেও আমাদের সাহসী করে তোলে।
সোশাল মিডিয়ায় চালু হওয়া হ্যাশট্যাগ মি_টু সেইরকম দুই সাহসী শব্দ।
২০০৬ সালে টারানা বার্ক নামের আমেরিকান সমাজকর্মীর হাত ধরেই প্রথম মি_টু আন্দোলনের
জন্ম। তারও আগে ১৯৯৭ সালে তিনি যখন ১৩ বছরের এক কিশোরীর মুখে তার ওপর যৌন নির্যাতনের
অভিজ্ঞতার কথা শুনেছিলেন, তখনই তাঁর বুকের ভিতর জন্ম নিয়েছিল ওই বিস্ফোরক শব্দদ্বয়'মি
টু’। তবে ২০০৬ সালে বার্কের সৃষ্ট এই আন্দোলন খুব একটা জনপ্রিয়তা পায় নি, কারণ এখনকার
মত যোগাযোগের মাধ্যমটা তখন এতটা মসৃণ ছিল না। শেষ পর্যন্ত হলিউড-এর বিখ্যাত সিনেমা
প্রযোজক হারভে উইনস্টেইন-এর বিরুদ্ধে যৌন পীড়নের একাধিক অভিযোগ প্রকাশ্যে উঠে এলে
ওই 'মি টু' শব্দ দুটি ছড়িয়ে পড়ে আলিসা মিলানোর হাত ধরে। সেটা ১৫ই অক্টোবর ২০১৭ । টুইটারে
জন্মানো হ্যাশট্যাগের এই আন্দোলন তারপর শুধু আমেরিকাতেই সীমাবদ্ধ থাকল না। দাবানলের মত
ছড়িয়ে পড়ল বিশ্বজুড়ে।
আজ এই তিন বছরের আয়ুতে ‘মি_টু’ মানববাদী আন্দোলনগুলিকে নতুন মাত্রা দিয়েছে নিঃসন্দেহে।
প্রথম বিশ্বে শুরু হওয়া এই আন্দোলন আজকের দিনে সবধরনের সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের বিরুদ্ধেই
মুখ খোলার দাবি জানায় – মেয়েদের হোক, ছেলেদের হোক কিম্বা তৃতীয় লিঙ্গের।
তবে সৃষ্টির গোড়া থেকেই যেহেতু মেয়েরাই নির্যাতনের সহজতম শিকার, তাই স্কুল, কলেজ,
বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, আদালত, ট্রেন, বাস, সেনাবাহিনী হোক অথবা শিল্প সাংস্কৃতিক জগতের
কোনো কোণা। যেকোনো ডিপার্টমেন্টে ঘটা লাঞ্ছনার প্রতিবাদেই এই হ্যাশট্যাগের শুরুয়াত –
মেয়েরাই যে আন্দোলনের পুরোধা।
ঘটমান বর্তমান নয় - আন্দোলনের নামেই রয়েছে পুরোনো ঘটনার গন্ধ। যা কিছু অন্যায় ঘটেছে,
লাঞ্ছনা, নির্যাতনের সেই চুপকথাদের দেরিতে হলেও প্রকাশ্যে আনাই এর প্রধান লক্ষ্য।
খুব সাম্প্রতিক কালে আমরা দেখেছি নারী লাঞ্ছনায় প্রকাশ্যে এসেছে নাট্য ও সাংস্কৃতিক জগতের
কিছু দিকপালের নাম – বাংলার বাইরে যেমন মন্ত্রী এম যে আকবর, বলিউডের অনু মালিক,
আলোকনাথ, সাজিদ খান, নানা পাটেকর, সলমান খান, আরবাজ খান, সোহেল খান, কৈলাশ খের,
উৎসব চক্রবর্তী ( কমেডিয়ান ইউটিউবার ), প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ প্রমুখরা ; তেমনি
বাংলায় সুদীপ্ত চ্যাটার্জি ( থিয়েটার ব্যক্তিত্ব ), রঞ্জন ঘোষাল ( 'মহিনের ঘোড়াগুলি' -ব্যান্ডের
অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ) এবং মলয় মিত্র (নাট্য ব্যক্তিত্ব )।
দেশের সাংস্কৃতিক জগতের রীতিমত তারকা এনারা । সাধারণ মানুষ শ্রদ্ধা ও সমীহের চোখে এঁদের
দেখে।
অথচ অভিযোগকারী মেয়েদের জবানবন্দীতে যখন এদের অন্য এক চেহারা ফুটে ওঠে;
'শিল্পী' তকমাধারী একজন বিখ্যাত লোকের মুখোশের আড়াল খসে গিয়ে কদর্য অমানুষিক মুখটা
জনসমক্ষে বেরিয়ে যায় তখন বিশ্বাস, ভরসা ইত্যাদি শব্দবন্ধের প্রতি কার্যত একটা ভয় চেপে বসে
আপামর জনতার!
কিশোরী বা টিনেজ মেয়েদের বিশ্বাসের, শ্রদ্ধার, প্রিয়তম শিল্পীর প্রতি থাকা স্বাভাবিক আবেগ-
উচ্ছ্বাসের নির্মম সুযোগ নিয়ে যখন বাংলার শিল্পী রঞ্জন বা মলয়ের মত তারকা প্রৌঢ়রা, যাদের
প্রত্যেকে সুখী দাম্পত্যের ধ্বজাধারী বলে 'পেজ থ্রি'-তে মুখ দেখান নিয়মিত, অভিনয় শেখানোর
অছিলায়'সিডাকশান' শেখাতে যান, অশ্লীলভাবে কচি নারীদেহ চটকে বিষম আনন্দে নিজেদের
পুংদণ্ডকে আরাম দেন – তখন সভ্য-অসভ্যের সংজ্ঞা ভাবী প্রজন্মের কাছে অলীকই ঠেকে। কিন্তু
পেশাদার জগতের এইসব ক্ষমতাশালী পুরুষেরা জানেন কর্মপ্রার্থী অথবা জুনিয়র মেয়েদের কীভাবে
কণ্ঠরোধ করা যেতে পারে। ফলে লাঞ্ছনার পরে কেটে যায় বহু সময়। প্রমাণের অভাব যার বড় কারণ।
।
কিন্তু সাহস জোটাতে, অন্যায়কে না সহ্য করার অঙ্গীকার নিতে ও নিজেকে তৈরি করার পরে যখন
সোশাল মিডিয়ায় ‘মি টু’ আন্দোলনের মেয়েরা খোলা চিঠিতে তাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধার 'স্যার'দের হাতে
অযাচিত যৌন নির্যাতনের যে বর্ণনা দেয় – তখন তাবৎ সমাজ নড়ে ওঠে। আমরা হতবাক হয়ে দেখি
সেই লেখাগুলোর, চিঠিগুলোর ছত্রে ছত্রে ফুটে উঠেছে এতদিনের জমাট বাঁধা অব্যক্ত
অপমান, লাঞ্ছনা আর অপরিসীম কষ্ট। যে কোনো মানুষ তার নিজের, নিজের সন্তানের অথবা পরিচিতার এহেন নির্যাতনের দৃশ্য কল্পনা করেই ক্ষোভে ফেটে পড়বে, চাইবে সুবিচার।
সোশাল মিডিয়া তো এলিট সমাজের নিজের কথা নিজমুখে বলতে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করার এক
সহজতম মাধ্যম। হ্যাঁ, এই মাধ্যমটি এলিটদেরই। ফলে মিটু আন্দোলনটিও এলিটদের লাঞ্ছনার
প্রকাশ্যে আসারই ঘটনা। সেইজন্যই দলিত নির্যাতনের ছবি দলিতের নিজের ভাষায় সোশাল মিডিয়ায়
দেখি না। দেখি না সেই মেয়েদের ছবিও যারা গার্হস্থ্য লাঞ্ছনার শিকার, কিম্বা সেই মেয়েরা যারা
সামান্য খাবারের বদলে বাবুদের বিছানা গরম করে চলেছে দিবারাত্র, লাঞ্ছিত হচ্ছে বস্তির প্রতিটা
ছাউনিতে। ফলে এই সোশাল মিডিয়া নিতান্তই একশ্রেণির হাতের মাধ্যম। তাতে কিন্তু উচ্চমধ্যবিত্তদের
উপর প্রশ্ন তোলা যায় না। আন্দোলনটিও ধারে ভারে খাটো হয় না মোটেও।
বরং এটা স্বীকার করে নেওয়া ভাল যে, যে ক্ষমতা রাষ্ট্রব্যবস্থা কেড়ে নিতে
পারে 'অফিসিয়াল' আইনের অজুহাতে, সেই ক্ষমতা 'আনঅফিসিয়ালি' আমাদের দেয় গণমাধ্যম যাকে
হালফিলে সোশাল মিডিয়া বলি। তাই তো গণমাধ্যমকে গণতন্ত্রের 'চতুর্থ স্তম্ভ' বলে। সুতরাং
এই ‘মি_টু’ আন্দোলনের জন্ম এবং তাতে অংশ নেওয়া মেয়েরা গণতান্ত্রিক পথেই নিজেদের দাবি
জানিয়েছেন। দেরিতে হলেও অন্যায় সামনে আনার সাহস তাঁরা দেখিয়েছেন - সুবিচার তাদের প্রাপ্য।
এই চরম অমানবিক পরিস্থিতিতে নির্যাতিতের পাশে দাঁড়ানো যখন আশু-কর্তব্য তখন এই সোশাল
মিডিয়াতেই এক অন্য চেহারার সোসাইটি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। প্রকাশ্যে নিজেদের যৌন-নির্যাতনের
কথা বলা ‘ মি _টু’ আন্দোলনের মেয়েদের নির্মমভাবে ভিক্টিম ব্লেমিং এ নেমে পড়েছে কিছু
শিক্ষিতমানুষ। তাদের মন্তব্য পড়ে বোঝাই যায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শেখা বাংলা বর্ণমালা গেঁথে
ফেসবুকে শব্দ টাইপ করতেই শেখা আছে কেবল, কিন্তু বুদ্ধির গোড়ায় আছে কেবল মন্দচিন্তার
অসুখ। সুশিক্ষা আর কুশিক্ষার ফারাক এরা জানে না। কিছু মহিলারাও আছে তাদের সাথে। এরাও একইরকম অসুস্থ মানসিকতার লোক যারা দীর্ঘদিনের বিকৃত অভ্যাসে অদ্ভুত ম্যাসোকিস্ট ক্লীবে পরিণত হয়েছে।
কিছুদিন আগে সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া অভিনয় জগতের একজন অখ্যাত মেয়ের একটি মি_টু
স্বীকারোক্তিতে আমরা শিউরে উঠেছিলাম। পাশাপাশি আতঙ্কিতও হয়েছিলাম ঘটনাটির ব্যাপারে
একশ্রেণির মন্তব্যে। নির্যাতিতাকে অভিনয়ে 'ইম্প্রোভাইজ' করানোর নামে বন্ধ দরজার
আড়ালে 'জোর করে মুখে পেনিস গুঁজে...' দেওয়াকে 'ভালোই তো মজা লোটার' তকমা দিচ্ছিলেন এই
নেটিজেনরা। বলা হচ্ছিল 'তখন যদি এত অন্যায়ই হয়ে থাকে তবে চুপ ছিলে কেন? এতদিন বাদে কেন
এসব বলতে এলে?'
এইখানেই আমাদের ভয় বাড়ে। ভয় এইসব অন্যায় সহ্যকারী, চুপ থাকা পাব্লিকদের নিয়ে।
লাঞ্ছনাকারীদের চেয়ে কোনো অংশে এঁরা কম দোষী নন। শিল্প, সাহিত্য, সাংস্কৃতিক প্রতিভা
ইত্যাদি যে জিনিসটার মাপকাঠি হতে পারে না তা হল - মানুষের নৈতিক চরিত্র এবং কৃতকর্ম।
অপরাধ – তা আজ ঘটুক বা ২০ বছর আগে, সময় দিয়ে তার বিচার চলে না। কারণ কালচক্রের অবিরাম
গতি কোনো অপরাধের ঘৃণ্যতা বা তীব্রতাকে কোনও অংশে কমিয়ে ফেলতে পারে না। গভীরতা দিয়েই
তার বিচার হয়। যখন হোক, যেভাবেই হোক তা প্রকাশ্যে বেরিয়ে এলে যেকোনো সুস্থ সমাজ তার প্রতিকার দাবি
করবে। এটাই হওয়া উচিত।
একটা টিনেজ মেয়ে ঘটনার সময় কতটা ভীত সন্ত্রস্ত লজ্জিত এবং অপমানিত থাকে সেটা সেই
ভিক্টিম ছাড়া আর কেউই ধারণা করতে পারবে না। সামাজিক মানসিক পারিবারিক চাপ কিভাবে কতটা
তীব্রতায় কিশোরী ভিক্টিমের উপরে নেমে আসে তা আন্দাজ করা স্মার্টফোন শোভিত পক্ককেশ বা
শুভ্রবেশ নেটিজেনদের পক্ষে আক্ষরিকই অসম্ভব। সুতরাং সেই মেয়ে ওইদিন, ওইবছর চুপ কেন ছিল
– এই প্রশ্নটা করাই অবান্তর। আর তার চেয়েও অবান্তর যুক্তি হল 'যেহেতু সে ১০ বছর আগে চুপ
ছিল তাই তার এখন মুখ খোলা উচিত না!' কিন্তু আমাদের সমাজে আজ ঠিক এই এই অবান্তর মন্তব্যই ভেসে বেড়াচ্ছে। সেগুলোর প্রতিক্রিয়া হচ্ছে মারাত্মক। সম মানসিকতার মর্ষকামী লোকে এসব কথা ‘খাচ্ছেও’ দারুণ।আর এইসব প্রশ্নবাণের ঠেলায় বেবাক গুটিয়ে থাকা সমাজে নিরালায় আরও মেয়ের সর্বনাশ ঘটে
চলেছে আরও কিছু 'বিখ্যাত' বা 'অখ্যাত' দের হাতে। জানতেও পারছি না। কারণ ওই যে, 'বললে
এখনই, নইলে কখনও নয় '–আপ্তবাক্যটা ভার্চুয়াল খাপ-সালিশি আমাদের শেখাচ্ছে!
আমরা, মানে যারা এমন বিখ্যাতদের নামটুকুই শুনেছে মাত্র অথবা শোনেনি, কেবল পরিচিত হাউজটারই
নাম শুনেছে, সমীহ করেছে, একটা আধটা রিপ্লাই পেলে নিজেকে সেলেব মনে করে আহ্লাদে গলে গেছে -
তারা এঁদের তথাকথিত 'পেশাদারিত্ব ', 'সম্মান', 'শিল্প প্রতিভা ' ইত্যাদির জায়গা থেকে পদস্খলনের
বাড়বাড়ন্ত দেখে আক্ষরিক চমকাচ্ছি। আর মনে মনে চাইছি এইই যেন তালিকার শেষ নাম হয়। কিন্তু পরদিনই ভুল প্রমাণ হচ্ছে। উঠে আসছে আরও কেউ, আরও কোনও বড় অপরাধের ভাণ্ডার খুলে।
যুক্তি আর পালটাযুক্তির পাশাপাশি ন্যায় বিচার পাওয়ার একটা 'ইউটোপিয়ান' সমাজের স্বপ্ন লালন
করে আমরা আবারও স্ক্রল করে দ্রুত চোখ ফেরাচ্ছি অন্য পোস্টে!
ওদিকে কিন্তু সেই ইউটোপিয়ান (!) সমাজ যদ্দিন না আসে তদ্দিন ভিক্টিম শেমিং বা ব্লেমিং -এ মেতে
থাকা উন্মাদরা, যারা এদ্দিন শিশুতোষ বাসনায় " সব পুরুষ এক না" ট্যাবলেট গিলিয়েছে ; আবারও
জিকির তুলছে " সব মলেস্টার এক না " - ইত্যাদি ফেস্টুনে!
আসলে যতদিন ইগোদণ্ডের ডগায় 'শিক্ষিত' ট্যাগটা অলক্ষ্যে টাঙানো আছে, ঠিক আছে। কিন্তু কখন
যে তার প্রিফিক্সে 'কু' ট্যাগ জুড়ে যাবে ধরতে পারবেন না।
ব্যাপার হল, যতই ‘অর্ধেক আকাশে’র দাবি নিয়ে ঝান্ডা হাতে রাজপথে শিক্ষিতদের মিছিল নামুক না
কেন, প্রতিটা নতুন বছরে নারী নির্যাতনের ইতিহাস নতুন আঙ্গিকে লেখা হবে – শিক্ষিত অশিক্ষিত
নির্বিশেষে এ সত্যটা একেবারে জলবৎ তরলং!
একথা অনস্বীকার্য যে কামদুনি, কাঠুয়া ধর্ষণকাণ্ড কিম্বা নির্ভয়া, সুজেট, আসিফা ধর্ষণ ও খুন
কাণ্ডের পরে এই ‘মি_টু’ নামের ‘এলিট’ মুভমেন্ট আজকের লাঞ্ছিতাদের কাছে প্যান্ডোরার বাক্স খুলে
দিয়েছে। মেয়েরা বুঝতে শিখেছে এই বাক্স বন্ধ হওয়ার নয়। স্থান কাল ভেদে লাঞ্ছনার গল্প হয়ত
আলাদা হবে। কোনও বছর সেটায় মুখপাত্র হবে প্রিয়া রামানি, তনুশ্রী দত্ত, পল্লবী গগৈ, পার্বতী মেনন, রিমা
কাল্লিংগাল। কোনও বছর, অঞ্জলি মেনন, গিথু মোহন দাস, সোনি রাজদান, কঙ্গনা রানাওয়াত,
কিংবা কোনও বছর অজ্ঞাত পরিচয় কেউ। কিন্তু ন্যায়বিচারের ‘হাল্লাবোল’ তোলা আন্দোলন সৃষ্টির শেষতক নিরবচ্ছিন্নভাবে চলবে নতুন ফর্মাটে, নতুন শব্দে, নতুন হ্যাশট্যাগ দিয়ে।
তবুও অ্যান্টিসোশাল মানুষের বিরুদ্ধে সোশাল মিডিয়ার এই প্ল্যাটফর্ম কিন্তু কিছুতেই রুদ্ধ হবে না।
হোক না তা ভার্চুয়াল, তবু গণআন্দোলনের এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করে যদি সবরকম অন্যায়ের
বিরুদ্ধে মানুষ মুখ খোলে তাহলে ক্ষতি কি! আমরা আশা রাখব আগামী দিনে এই মি_টু আন্দোলন শুধু
নারীকেন্দ্রিক অপরাধের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, ধর্ম-জাতি-বর্ণ-লিঙ্গ নির্বিশেষে
যেকোনো রকমের শারীরিক মানসিক হেনস্তার প্রতিবাদের অস্ত্র হবে, যেখানে একজন তৃতীয়
লিঙ্গের মানুষও নির্দ্বিধায় বলতে পারবে তার কথা। এই বৃত্ত ছাড়িয়ে আন্দোলনটি আরও বড়
আঙ্গিকে বিস্তৃত হবে। অপরাধ যদ্দিন না থামবে তদ্দিন মুখ বন্ধ হবে না – এই অঙ্গিকারে।
কারণ যেকোনো "আন্দোলনের শেষ থাকে না, থাকে শুধু শুরুয়াত! "
লেখক : শিক্ষক, প্রাবন্ধিক, গল্পলেখক
ছবি : সংগৃহীত
0 Comments
Post Comment