একটি আন্দোলনের নাম পরীমনি

  • 22 October, 2021
  • 0 Comment(s)
  • 561 view(s)
  • লিখেছেন : তামান্না
পরীমনির পক্ষ নিয়ে অনেকেই প্রতিবাদ করেছেন। অল্পবয়সী সাহসী অকুতোভয়  নারীকে দেখে অনেকেই মুগ্ধ হয়েছেন। নারীবিদ্বেষের প্রতি প্রতিবাদ, একটি সিস্টেমের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার খুব প্রয়োজন ছিল। এই লড়াইয়ের ফলে পরীমনি একটি আইকনিক চরিত্র হয়ে উঠেছেন। তিনি সামাজিক ট্যাবু ভেঙেছেন, পিতৃতান্ত্রিক সমাজকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন।

I'm a bitch, I'm a boss

I'm a bitch and a boss, I'm a shine like gloss (Amala zandile Dlamini, Asthon Casey, Sky Adams, Imad Royal)

একরত্তি বয়সে মা-বাবাকে হারিয়ে, বরিশালের (বাংলাদেশ) শামসুন্নাহার স্মৃতি নানার (মায়ের বাবা) বাড়িতে চলে আসেন। মেধাবী  স্মৃতি মাধ্যমিকে ট্যালেন্ট পুল বৃত্তি পান। কিন্তু স্মৃতিকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়। এরপর সেই বিয়ে টেকেনি। পণের দাবিতে বিয়ে ভেঙে যায়। তারপর স্মৃতি একজন ফুটবলারকে বিয়ে করেছিলেন, সেই বিয়েও ভেঙে যায়। অনেক ঘাতপ্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে স্মৃতির জীবন এগিয়ে চলে। একসময় তিনি চলচ্চিত্রে যোগ দেন।

স্মৃতি, পরীমনি হয়ে ওঠেন। গত ৪ঠা অগস্ট মাদক আইনের আওতায় গ্রেফতার হয়েছিলেন অভিনেত্রী পরীমনি। পরীমনি জানতেন, তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত হবে। কারণ তিনি প্রভাবশালী কয়েকজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার মামলা করেন। ৮ জুন রাতে পরীমনি অভিযোগ তোলেন, বিরুলিয়ার ঢাকা বোট ক্লাবে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমি তাঁকে ধর্ষণের ও হত্যার চেষ্টা করে। ১৩ জুন তিনি নাসির, তুহিন সিদ্দিকী ও  আরও চারজনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন। সেইদিন তিনি তাঁর অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি লেখেন। তিনি জানান—

বরাবর, 
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 
 
আমি পরীমণি। এই দেশের একজন বাধ্যগত নাগরিক। আমার পেশা চলচ্চিত্র। 
আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি।
আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। 
আমি এর বিচার চাই।
এই বিচার কই চাইবো আমি? কোথায় চাইবো? কে করবে সঠিক বিচার? আমি খুঁজে পাইনি গত চার দিন ধরে। থানা থেকে শুরু করে আমাদের চলচ্চিত্রবন্ধু বেনজির আহমেদ আইজিপি স্যার! আমি কাউকে পাইনা মা। যাদেরকে পেয়েছি সবাই শুধু ঘটনা বিস্তারিত জেনে, দেখছি বলে চুপ হয়ে যায়! 
আমি মেয়ে, আমি নায়িকা, তার আগে আমি মানুষ। আমি চুপ করে থাকতে পারিনা। আজ আমার সাথে যা হয়েছে তা যদি আমি কেবল মেয়ে বলে, লোকে কী বলবে এই গিলানো বাক্য মেনে নিয়ে চুপ হয়ে যাই, তাহলে অনেকের মতো (যাদের অনেক নাম এক্ষুণি মনে পড়ে গেল) তাদের মতো আমিও কেবল তাদের দল ভারী করতে চলেছি হয়তো। আফসোস ছাড়া কারোর কি করবার থাকবে তখন! আমি তাদের মতো চুপ কি করে থাকতে পারি মা? 
আমি তো আপনাকে দেখিনি চুপ থেকে কোন অন্যায় মেনে নিতে!
আমার মা যখন মারা যান তখন আমার বয়স আড়াই বছর। এতদিনে কখনো আমার এক মুহুর্ত মাকে খুব দরকার এখন, মনে হয়নি এটা। আজ মনে হচ্ছে, ভীষণ রকম মনে হচ্ছে মাকে দরকার, একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরার জন্য দরকার।
আমার আপনাকে দরকার মা। আমার এখন বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে দরকার মা। 
মা আমি বাচঁতে চাই। 
আমাকে বাঁচিয়ে নাও মা।

 

এই চিঠি প্রকাশের পর বাংলাদেশ সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় ওঠে। এরপর তিনি সাংবাদিক সম্মেলন করে কাঁদতে কাঁদতে বলেন— ‘আমি যদি মরে যাই জানবেন আমায় মেরে ফেলা হয়েছে, আমি আত্মহত্যা করতে পারি না’। এত কাণ্ডের পর তিনি গ্রেফতার হন। তার বাড়িতে যখন ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান আক্রমণ করে, তখন তিনি ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। সেইসময় তিনি ফেসবুক লাইভে এসে  জানান— ‘বিভিন্ন পোশাকে’ কিছু লোক এসে তাঁকে তুলে নিয়ে যেতে চাইছে। ফেসবুকে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলেন। ফেসবুকে বারবার তিনি অসহায়তার কথা প্রকাশ করেন। একসময় তিনি বাধ্য হয়ে আত্মসমর্পণ করেন।

সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরী বাংলাদেশের গণমাধ্যমে পাঠানো আবেদনে লিখেছেন—  ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এই আবেদন আমার একার নয়। দেশে প্রশাসন, একটি বিত্তশালী গোষ্ঠী এবং একটি মিডিয়া গোষ্ঠী মিলে একটি ২৮ বছরের তরুণীকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার যে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে, সে সম্পর্কে সচেতন নাগরিক সমাজের আবেদন। পরীমনিকে গ্রেফতার করার জন্য দু-চার জন র‍্যাব কিংবা পুলিশের সদস্য গেলেই হত, সেখানে যে যুদ্ধযাত্রা করা হয়েছিল, তাতে মনে হয়েছিল কোন‌ও ভয়ঙ্কর ডাকাতকে গ্রেফতারের জন্য এই যুদ্ধযাত্রা।’ (তথ্যসূত্র-Hindustan Times বাংলা, ১০/০৮/২০২১)

এত সাহসী নারীকে দেখে পিতৃতান্ত্রিক সমাজ চমকে ওঠেন। এরপর তাঁরা তাদের ক্ষেপণাস্ত্র বের করেন। সেই থোড়বড়িখাড়া বস্তাপচা মানসিকতার শিকার হন পরীমনি। তিনি মদ খান, বেশ্যা বৃত্তি করেন, প্রতি রাতে তাঁর একাধিক পুরুষ প্রয়োজন হয়। এরকম ভুরিভুরি বাক্যবাণে তাকে বিদ্ধ করা হয়। ঢাকাইয়া চলচ্চিত্রের নায়িকা পরীমনি, তাঁর অদম্য জেদ, সাহসিকতা দেখিয়েছেন। যখন বাংলাদেশের নারীবাদী আন্দোলন প্রসঙ্গ আসবে, তখনই খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটি মুভমেন্ট আলোচিত হবে, এবং এই আন্দোলন দুটির একটি পরীমনিকে কেন্দ্র করে হয়েছে— ক) ‘রাতের রানীক্যাম্পেইন। অপর আন্দোলনটি পরীমনি নিজে করেছেন

 খ) ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’।

রাতের রানী ক্যাম্পেইন 

পরীমনির ঘটনা বাংলাদেশে আলোড়ন ফেলে দেয়। পরীমনিকে সমর্থন করতে এগিয়ে আসেন শুভানুধ্যায়ীরা। তাকে বারবার বেশ্যা বলার কারণে ‘রাতের রানী’ নামক অনলাইন ক্যাম্পেইন হয়। এই ক্যাম্পেইনে সামাজিক মাধ্যমে নিজের প্রোফাইল ছবিতে ‘রাতের রানী’ ফ্রেম অনেকেই ব্যবহার করেছেন। এই ক্যাম্পেইনের উদ্দেশ্য ছিল পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা নারীবিদ্বেষী যে আক্রমণগুলি করেন, তার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া। এই ক্যাম্পেইন অভূতপূর্ব সাড়া ফেলে। পুরুষেরাও এই ক্যাম্পেইনে যোগ দেন। বাংলাদেশের ‘মেয়ে নেটওয়ার্ক’ (মেয়ে নেটওয়ার্ক বাংলাভাষী নারীদের নিয়ে ২০১১ সাল থেকে সক্রিয় একটি নারীবাদী সংগঠন) এই ক্যাম্পেইনের উদ্যোগ নেন। প্রোফাইল ফ্রেম ছাড়াও, দুটি হ্যাশট্যাগ এই ক্যাম্পেইনে ব্যাবহার করা হয়— #রাতেররানী ও #raater-rani। ‘মেয়ে নেটওয়ার্ক’ তাদের ফেসবুক পেজে জানিয়েছেন—‘ব্যক্তিগত পরিচয় এমনকি জেন্ডারের সীমারেখা ছাড়িয়ে গেছে এই ক্যাম্পেইন। মেয়ে নেটওয়ার্কের দেওয়া বর্ণনায় আবদ্ধ না থেকে অনেকে নিজের মতো করে ফ্রেমটিকে, ক্যাম্পেইনটিকে বর্ণনা করেছেন। এই সার্বজনীনতা অনেক বড় ব্যাপার। সেদিক থেকে ক্যাম্পেইনটি আশাতীত পর্যায়ে সফল বলা যায়।‘

ডোন্ট লাভ মি বিচ

২৭ দিন জেলে ছিলেন পরীমনি। ১ সেপ্টেম্বর পরীমনি মুক্তি পান। পরীমনি লোকলজ্জার ভয়ে জুবুথুবু হয়ে, মুখে ওড়না জড়িয়ে, মিডিয়াকে লুকিয়ে চুপিসারে প্রত্যাবর্তন করেননি। তিনি ফিরে এসেছেন মহাসমারোহে। হুডখোলা গাড়িতে পরীমনি সাদা টি-শার্ট, প্যান্ট পরে, চোখে সানগ্লাস, মাথায় সাদা পাগড়ি জড়িয়ে জয়ের হাসি হাসতে হাসতে বিজয় চিহ্ন ‘ভি’ দেখান। ডান হাত ওঠান। মেহেদি দিয়ে লেখা পরীমনির হাতের বার্তা ছিল— ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’।

এরপর তিনি হাতের মধ্যাঙ্গুল প্রদর্শন করেন। পরীমনির এই  আচরণ  সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। প্রথম থেকে পরীমনির পক্ষে প্রতিবাদ জানান অ্যাক্টিভিস্ট শাশ্বতী বিপ্লব। তিনি বলেন— ‘পরীমণি এজন্যই সবার থেকে আলাদা। তার বেরিয়ে আসার যে ইমেজ সেটা শক্তি যোগাবে। মিডিয়াতে নারীদের যে স্ট্রাগল, সেখানে ভুক্তভোগীরা সাহস করে চ্যালেঞ্জ একসেপ্ট করতে পারে না। পরীমণি তাদের পথ দেখাবেন।‘ (তথ্যসূত্র: বিডি মর্নিং ডেস্ক, ০১/০৯/২০২১) 

বাংলাদেশের অর্থনীতি সম্পাদক মাসুদা ভাট্টি বলেন— ‘পরীমণিকে যতটা সাধারণ ভাবা হয়েছিল ততটা সাধারণ যে তিনি নন। আর সেটা প্রমাণিত হয় তার ইস্কুল-পাঠ থেকে আজকে তার জেল থেকে বেরিয়ে আসা পরবর্তী ঘটনা প্রবাহে নজর দিলে। তাকে আমরা কেবলমাত্র ঢাকাই চলচ্চিত্রের একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে দেখলে ভুল করবো। আজকে তিনি যেভাবে যে চেহারায় জেল থেকে বেরিয়ে এলেন তাতে মনে হলো তিনি ২৬ দিন কারাগারে থেকে আসলে নতুন করে শক্তি লাভ করেছেন। সত্যিই তো তার সঙ্গে যে অনাচারটি হয়েছে এর বেশি আর কী হওয়া সম্ভব?’ তিনি আরও বলেন, একজন নারী হিসেবে কেবল নয় নাগরিক হিসেবে তার অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, ফলে সে অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি যেভাবে লড়ছেন তা আমার মতো অনেককেই বিস্মিত করেছে। যখন তার পূর্ববর্তী প্রজন্মের অভিনয় শিল্পীদের কেউ কেউ রাতের বেলা ঘর থেকে না বেরুনোর পরামর্শসহ নারীকে ঘরবন্দি থাকার পরামর্শ ফেরি করছেন তখন পরীমণি একা নিজের শক্তি-সামর্থ্য নিয়ে লড়ে যাচ্ছেন। দুঃখজনক সত্য হলো, মিডিয়া এখানে অনেকটাই নেতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে, যা কাম্য ছিল না। পরীমণি নিশ্চয়ই তার স্বাভাবিক কর্মজীবনে ফিরবেন। মাঝখানে এই সময়টা তার জন্য এবং এদেশের নারীর জন্য একটি কালো দৃষ্টান্ত হয়েই থাকলো, এটা কষ্টের খুব। (তথ্যসূত্র: বিডি মর্নিং ডেস্ক, ০১/০৯/২০২১) 

২০০৮ সালে প্রকাশিত মার্কিন জ্যাজ শিল্পী রাসেল গুনের ‘লাভ স্টোরিজ’ অ্যালবামের ইন্সট্রুমেন্টাল গান ‘বিচ, ইউ ডোন্ট লাভ মি’। এ ছাড়া মার্কিন র‍্যাপার বিগক্লিটের ‘ইউ ডোন্ট লাভ মি’ গানের প্রথম লাইনে ‘ইউ ডোন্ট লাভ মি বিচ’ বাক্যটি পাওয়া যায়। পরীমনি হয়তো এই গান দুটি থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর প্রতিবাদের বাক্য বেছে নিয়েছেন। অনেকেই জানতে চেয়েছিলেন কাদের উদ্দেশ্যে তিনি এই বার্তা দিলেন! পরীমনি জানিয়েছেন, ‘যারা বিচ তাঁদের উদ্দেশ্যে এমন কথা বলেছি। লেখাটা পড়ে যাঁদের মনে হবে, আল্লাহ, আমাকে নিয়ে এটা লিখল— তাঁদের উদ্দেশ্যেই এই লেখা। ওদের তালিকা তো আমি নাম ধরে বলতে পারব না। আমাকে আটক, গ্রেপ্তার এবং কারাগারের নিয়ে যাওয়ার পর তাদের জীবন সার্থক মনে হয়েছে। কেউ কেউ তো খুশিতে নাচাও শুরু করেছে। যেই আমি ফিরে আসছি, অনেকে আবার মিস ইউ, লাভ ইউ বলা শুরু করছে। এই ধরনের ভালোবাসা আমার দরকার নাই। আমি তাদেরকেই বলেছি, তোমরা আমাকে ভালোবাইসো না। আমি যাদের জন্য পরীমনি, যারা সত্যি সত্যি আমাকে অন্তরের মধ্যে বসাইয়ে রাখছে, তাদের আমি সব সময় ভালোবাসি। আজীবন ভালোবাসি।’ (তথ্যসূত্র-প্রথম আলো, ১/০৯/২০২১)

পরীমনি একাধিকবার বলেছেন তিনি নির্দোষ, তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। প্রথম থেকে তিনি মাথা উঁচু করে ছিলেন। একবারও তাঁকে নত হতে দেখা যায়নি। জামিনের আবেদন  করে একাধিক বার প্রত্যাখান জুটেছে। তবু তিনি ভেঙে পড়েননি। বাস্তব জীবনের  সাহসী নায়িকা তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছিলেন— ‘আমি ভেঙে পড়ার মেয়ে না। ভেঙে পড়লেও তো উঠে দাঁড়াব। আমাকে যারা চেনেন, তারা জানেন, আমি কেমন। আমি এখন দ্রুত কাজে ফেরার অপেক্ষা করছি।’ পরীমনির লড়াই এখনো থামেনি। আইনি লড়াই চলছে। 

পরীমনির ঘটনা নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে অনেকেই অনেক মতামত দিয়েছেন। সামাজিক মাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেওয়া হয়েছে, আবার পাশাপাশি তাঁর পক্ষ নিয়ে অনেকেই প্রতিবাদ করেছেন। অল্পবয়সী সাহসী অকুতোভয়  নারীকে দেখে অনেকেই মুগ্ধ হয়েছেন। নারীবিদ্বেষের প্রতি প্রতিবাদ, একটি সিস্টেমের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠার খুব প্রয়োজন ছিল। এই লড়াইয়ের ফলে পরীমনি একটি আইকনিক চরিত্র হয়ে উঠেছেন। তিনি সামাজিক ট্যাবু ভেঙেছেন, পিতৃতান্ত্রিক সমাজকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন। আগামীতে বাংলাদেশের অনেক নারী তাদের প্রতিবাদ দৃঢ় চিত্তে করবেন। আশা করা যায়,পরীমনি তাদের পথপ্রদর্শক হয়ে উঠবেন!

ভারত মহাসাগর পেরিয়েছে
তোমার কান্না, বঙ্গোপসাগরেও
বনানীর জলপাই রঙের বাড়িটা ছেড়ে
চাঁদপুরের পুরোনো বন্দরটা পেরিয়ে
মেঘনার জলকে টেমসের সঙ্গে মিশিয়ে
কার্তিকের চাঁদ হয়ে ঝুলে আছে
আমার রোগশয্যার বারান্দায়।
পরীমনি, তুমি আমার জন্য কেঁদো না
মায়ের মতো ভালোবাসার
দুবাহু বাড়ায়ে দিয়ো না
ভালোবাসা বড় দুর্লভ সৌরভ
সুগন্ধির দোকানে কখনো পাবে না।

(পরীমনি, তুমি আমার জন্য কেঁদো না, আবদুল গাফফার চৌধুরী)

লেখক  :অধ্যাপক, সমাজকর্মী

ছবি  : সংগৃহীত

0 Comments

Post Comment