সুন্দরবনের শীতলিয়া গোলাবাড়ির মানুষের ঠাঁই পথে

  • 27 May, 2020
  • 1 Comment(s)
  • 875 view(s)
  • লিখেছেন : সিউ প্রতিবেদক
আমপান ঝড়ের সময় সুন্দরবনের রায়মঙ্গল নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। শীতলিয়া গোলাবাড়ির বহু মানুষ আশ্রয় হারিয়ে পথে ঠাঁই নিয়েছেন। মাথার উপর ছাদ নেই। খাবার নেই। ত্রাণের অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছেন।

সুন্দরবনের সন্দেশখালি থানার শীতলিয়া গোলাবাড়ি থেকে মেসেজ পাঠালেন নীলোৎপল বর্মন। নীলোৎপলবাবু শিয়ালদহ ফ্রি কোচিং সেন্টারে পড়ান। আমপানের সময় নিজের গ্রাম শীতলিয়া গোলাবাড়িতেই ছিলেন। এই গ্রামে দুই/আড়াই হাজার মানুষ বাস করেন। আমপান ঝড়ের সময় সুন্দরবনের রায়মঙ্গল নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বহু মানুষের ঘর ধ্বসে গেছে।খাবার নেই। বিদ্যুৎ নেই। জীবন ও প্রকৃতির জমাট অন্ধকারে তাঁদের ঠাঁই এখন রাস্তায়। কেউ কেউ গড়ে নিয়েছেন পলিথিন দিয়ে  অস্থায়ী ঘর। সেই পলিথিনটুকুও সবাই যোগাড় করতে পারছেন না। সরকারি ত্রাণ দেওয়া হলেও সব মানুষের হাতে তা পৌঁছোয়নি। অনাহার ও আশ্রয় সমস্যায় মানুষগুলো ধুকছেন। নীলোৎপলবাবু বললেন, ‘খুব অসহায় লাগছে। এত মানুষের হাহাকারের মাঝে দিন কাটাচ্ছি। কিছুই করে উঠতে পারছি না। ওঁদের জন্য কিছু খাবার আর ত্রিপলের ব্যবস্থা করা দরকার। যদি সরকার বা কোন সংগঠনের ত্রাণ আসে তাহলে মানুষগুলো কিছুটা বাঁচবে।’

২০ মে আমপান ঝড়ে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগণা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, ও কলকাতা জেলাতেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি। তবে এই জেলাগুলির মধ্যে দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার সুন্দরবন অঞ্চল অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ঝড়ের দাপটে রাস্তায় গাছ পড়ে যানজট ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকার জন্য কলকাতাবাসী জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ অবরোধ চালায়। প্রত্যেকটি অঞ্চলের বিক্ষোভের খবর যত সহজে মানুষের সামনে বাণিজ্যিক মিডিয়া তুলে ধরতে পেরেছে, ততটা সহজ হচ্ছে না সুন্দরবন অঞ্চলের সব প্রান্তের খবর আমাদের কাছে পৌঁছোনো। নীলোৎপলবাবু চেষ্টা করেছিলেন তাঁর বিধ্বস্ত এলাকা ও এলাকাবাসীর কাতর আর্তনাদ রাজ্যের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার। সেটা না কি সম্ভব হয়নি। এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে ভরসা রেখে তিনি প্রচার চালাচ্ছেন। শীতলিয়া গোলাবাড়ির প্রাণ ফেরানোর জন্য সহৃদয় মানুষের সহযোগিতার হাত যে ভীষণ দরকার। 

ছবি : নীলোৎপল বর্মন

1 Comments

রণজিৎ কুমার বাউলিয়া

28 May, 2020

সুন্দরবনের ভূমিপুত্র আমি।ওখান কার মানুষের জীবন যন্ত্রণার সঙ্গে বড় হয়েছি। এখন যাতায়াত করতে হয়।বসত ভিটা দুলদুলি। কিন্তু এই সময়ে বড়ই অসহায় অবস্থায় আছি।আমফানের পর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন । অতিকষ্টে যোগাযোগ করেছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ওদের কাছে যেতে না পারার যন্ত্রণা সব থেকে বেশি। সরকার এখন ভরসা। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে এই মানুষ গুলি আজ খোলা আকাশের নীচে। অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটছে তাদের। একদিকে মারণ ব্যাধি অন্যদিকে আমফান এর তান্ডব লীলা। দুই এর মধ্যে সুন্দরবনের মানুষ। ওদের জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে।

Post Comment