নিজের ঘর

  • 27 April, 2025
  • 0 Comment(s)
  • 108 view(s)
  • লিখেছেন : শতরূপা সিংহ
এক গভীর রাতে সকলের অলক্ষ্যে এক কাপড়ে আমি ঐ বাড়ি ছেড়ে চিরতরে পালিয়ে এলাম। আমার এক খুড়তুতো দিদি তার শ্বশুরবাড়িতে আমাকে কয়েকদিন আশ্রয় দেওয়ার পর আমাকে এই ফুড ডেলিভারির কাজটা জুটিয়ে দেয়। আজ আমার মনে হয় সেদিন যদি সবকিছু ছেড়ে পালিয়ে না আসতাম তাহলে কোনোদিনই এমন কোনো ঘর খুঁজে পেতাম না যাকে সম্পূর্ণ নিজের বলা যায়।

আমি কলকাতার একটি রেস্তোরাঁয় ডেলিভারি গার্ল এর চাকরি করি। এই ঘরটা পেতে আমার জীবনের বত্রিশটা বছর সময় লেগে গেছে। হলই বা এটা দক্ষিণ কলকাতার একটা ছোট্ট ঘুপচি ফ্ল্যাট কিন্তু এই ঘরটা সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব একটা ঘর। এই ঘরে আমি নিজের ইচ্ছায় প্রাণ খুলে হাসতে পারি, নিজের মনের মত করে কাঁদতে পারি। এখানে কারোর কাছ থেকে চোখের জল লুকানোর প্রয়োজন হয় না। এখানে আমার ওপর কথা বলার কেউ নেই, হেয় করার কেউ নেই, শাসন করারও কেউ নেই, কেউ আমাকে কষ্ট দেবে না, আমার ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক গলাবে না। আমার প্রতিটা ইচ্ছা অনিচ্ছা এই ঘরের আকাশে স্বচ্ছন্দে ডানা মেলে উড়বে। আমি যে রেস্তোরাঁয় কাজ করি সেটা চালায় আসলে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ওদের মূল উদ্দেশ্য হল মানুষকে স্বনির্ভর হতে সাহায্য করা, মানুষকে বাঁচার একটা নতুন সুযোগ করে দেওয়া। বলতে গেলে ওরাই আমাকে একটা নতুন জীবন দিয়েছে। আমি তিনমাস মাত্র কাজ করলেও ওরা আমাকে একেবারে ছ’মাসের বেতনের টাকা অগ্রিম দিয়েছে। ওদেরই এক পরিচিত প্রোমোটারের সঙ্গে আমার আলাপ করিয়ে দিয়ে এই ফ্ল্যাটটা কেনার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। এমনকি ওদের পরিচিত এক ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে ধরে এই ফ্ল্যাটটার জন্য লোন পেতেও অনেক সাহায্য করেছে। আমি ওদের কাছে সত্যিই খুব ঋণী। ওরা আমার আত্মীয় না হলেও আমার মত অপরিচিতার পাশে বন্ধুর মত সবসময় থেকেছে। এই ঘরটা কেনার পর থেকে আমাকে একটা নতুন শখ পেয়ে বসলো। যখনই সময় পাই অল্প অল্প করে ঘর সাজানোর নানা উপকরণ কিনে আনি আর প্রতিদিনের কাজের ফাঁকে অল্প একটু সময় বের করে নিয়ে ঘর সাজাতে লেগে যাই। প্রোমোটার যদিও একজন ইন্টেরিয়র ডিজাইনারের ফোন নম্বর দিয়েছিলেন কিন্তু আমি যোগাযোগ করিনি। টাকার অভাবের জন্য নয় ঘরটাকে নিজের মনের মত করে নিজেই যত্ন নিয়ে সাজাতে চেয়েছিলাম। সারাদিন এদিক ওদিক ছুটে খাবার ডেলিভারি করার উদয়াস্ত পরিশ্রমের পর দিনের শেষে নিজের ঘর সাজাতে বসে নিজেকে একটুও ক্লান্ত মনে হত না।

সেদিন ছিল চৈত্রের শেষ রবিবারের সন্ধ্যা। আমি কয়েকটা জানলার পর্দা আর বিছানার চাদর কিনে কোল্ড ড্রিংক্সের বোতল নিয়ে পার্কের একটা ফাঁকা বেঞ্চিতে জিনিসগুলোকে রেখে হেলান দিয়ে বসলাম। তখন পার্কে বেশি ভিড় ছিল না। সুন্দর কেয়ারি করা ফুল গাছ দিয়ে পার্কটা সাজানো। সাউন্ড বক্স থেকে মৃদুস্বরে ভেসে আসছে রবীন্দ্র সঙ্গীত। গোটা পার্ক জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেকগুলো অনুচ্চ সাদা আলোর বাতিস্তম্ভ। সন্ধ্যার অন্ধকার পুরোপুরি নামার আগেই তারা প্রত্যেকে জ্বলে উঠেছে। সেদিন দম বন্ধ করা অস্বস্তিকর গরমটা ছিল না। দুপুরে মুষলধারে কিছুটা বৃষ্টি নেমেছিল। তাতে গরম অনেকটা কমলেও আকাশ থেকে মেঘ একচুলও সরেনি। হয়ত রাতের দিকে আবারও বৃষ্টি নামতে পারে। ভেজা ঘাস, ভেজা মাটি ও ভেজা গাছপালার মেলানো মেশানো একটা গন্ধ অনেকক্ষণ ধরে নাকে আসছিল। ঠান্ডা জোলো হাওয়া আমার ঘর্মাক্ত শরীর ছুঁয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল। আরামে আমার একটা ঝিমুনি ভাব চলে এসেছিল। এমনসময় বেঞ্চ কাঁপিয়ে  পাশে কেউ একজন ধপ করে বসে আমার কাঁধে হাত রেখে বললো, ‘কী রে, কেমন আছিস?’ আমি চমকে উঠলাম তারপর পার্কের আলো আঁধারিতে চিনতে পারলাম আমার স্কুলবেলার বন্ধু শর্মিষ্ঠাকে। আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে সে বললো, ‘কি রে, হতভম্বের মত তাকিয়ে আছিস কেন, আমাকে চিনতে পারছিস না? অবশ্য চিনতে না পারারই কথা অনেকদিন হল দেখাসাক্ষাৎ নেই, কিন্তু তোর আমাকে মনে না পড়লেও বন্ধুদের থেকে আমি তোর ব্যাপারে সব খোঁজ নিয়েছি। তোর শ্বশুরবাড়ি শ্যামবাজারে না? এখানে তোকে দেখতে পাবো কখনো ভাবিনি। চৈত্র সেলের কেনাকাটা করতে বেরিয়েছিস বুঝি? আমিও তাই। তোর বর আসেনি সঙ্গে?’ শর্মিষ্ঠার বকবকানি থামার পর আমি বললাম, ‘শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। এখানে আমি একাই থাকি।’ এই কথাটা শোনার পর শর্মিষ্ঠার মুখের অভিব্যক্তি নিমেষের মধ্যে বদলে গেল। এক মুহূর্ত পর সে বললো, ‘নিজের সংসারটা ধরে রাখতে পারলি না?’ আমি অনুভব করছিলাম ওর কথাগুলোর মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পাচ্ছে তীব্র ঘৃণা। এরপর একগাল হেসে শর্মিষ্ঠা বললো, ‘আমি এখন আসি হ্যাঁ, অনেক রাত হল।’ আমিও হাসিমুখে বললাম, ‘আমার ফ্ল্যাট কাছেই চল একবার ঘুরে আসবি।’ সে বললো, ‘না না, দেখ অনেক দেরি হয়ে গেছে সাড়ে ন’টা বাজতে চললো। আবার অন্য কোনোদিন আসবো কেমন?’ বলতে বলতে সে হনহন করে হেঁটে পার্কের গেটের দিকে চলে গেল। আমিও আর বসলাম না পা বাড়ালাম বাড়ির উদ্দেশ্যে। আকাশের বুকে জমাট বাঁধা মেঘের ভিতর থেকে মাঝে মাঝে আলোর ঝিলিক খেলে যাচ্ছে। রাস্তায় চলতে চলতে মনে হল যে বাজে অতীতটাকে আমি সবসময় ভুলে থাকবার চেষ্টা করি সেটা আবার আমার সামনে পথ আগলে দাঁড়িয়েছে।

আজ থেকে তিন বছর আগে আমার বিয়ে হয়েছিল। স্বামী, বিধবা শাশুড়ি ও এক অবিবাহিত ননদ নিয়ে আমাদের ছোটোখাটো পরিবার ছিল। তখন আমি কোনো চাকরি করতাম না। আমাদের বাড়িটা ছিল কলকাতার পুরনো একটা দোতলা বাড়ি। বাড়িটার সংস্কার করা হয়নি অনেকদিন। সরকারের বিদ্যুৎ ভবনে আমার স্বামী ফণীন্দ্র কাজ করেন। বিয়ের পর থেকে শাশুড়ি আমাকে খুব যত্ন করতেন। বাড়ির কাজকর্মে আমাকে একদমই হাত লাগাতে দিতেন না। বাড়ির সব কাজ করার জন্য তিনি একজন কাজের মহিলা রেখেছিলেন। আমার কাছে তাঁর কেবল একটিই দাবি ছিল। তিনি আমার কাছে বারবার নাতির মুখ দেখতে চাইতেন। আমার ভাসুর গোয়ালিয়রে কোনো একটা বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতেন। সেখানেই তিনি তাঁর বউ ও একমাত্র শিশুকন্যাকে নিয়ে থাকতেন। বংশে বাতি দেওয়ার মত কেউ না থাকার জন্য আমার কাছে শাশুড়ির আবদার ছিল প্রবল। বাড়িতে আত্মীয় এলে তিনি তাদের সামনেও নিজের এই ইচ্ছার কথা প্রকাশ করে আমাকে অস্বস্তিতে ফেলতেন। আমার ননদ কলেজে বি এ পাশ করে বাড়িতে বসেছিল। আমি কোনো অজ্ঞাত কারণে তার চক্ষুশূল ছিলাম। সারাদিনে তার অন্যতম কাজ ছিল শাশুড়ির কানে আমার বিরুদ্ধে কথা লাগানো। কিন্তু শাশুড়ি ওর কথায় বিশেষ আমল দিতেন না। তারপর একদিন আমার ভাসুর চাকরি খুইয়ে তাঁর পরিবার নিয়ে আমাদের বাড়িতে এসে উঠলেন। আমি ভেবেছিলাম এখানে কিছুদিন থাকার পর তিনি নিশ্চয় আবার কোনো একটা কাজ জুটিয়ে ফেলবেন। কিন্তু যখন দেখলাম তিনি মাসের পর মাস ঘরে বসে নিশ্চিন্তে ভাইয়ের রোজগারের টাকায় খেতে থাকলেন তখন বিষয়টা আমার কাছে অসহ্য হয়ে উঠলো আমার মনে হল শাশুড়ি এতে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। একদিন আর থাকতে না পেরে শাশুড়িকে বলেছিলাম তিনি যেন ভাসুরকে দ্রুত কোনো একটা চাকরির সন্ধান করার আদেশ দেন। কিন্তু উলটে শাশুড়ি বললেন, ‘সংসার খরচ দিন দিন অনেক বাড়ছে বৌমা, কাজের মেয়েটাকে ভাবছি ছেড়ে দেব। এবার তুমি একটু হাল ধর।’ ননদ এসে আমাকে বললো, ‘আর কতদিন গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে বেড়াবে বৌদি? এবার একটু কাজেকর্মে হাত লাগাও। দেখছো তো ঘরে লোক কত বেড়ে গেছে।’ জা বললেন, ‘আমার বাপু কোনোকালেই সংসারের হেঁশেল ঠেলার অভ্যাস নেই। আমি এসব কাজ করতে পারবো না।’ আমি বললাম, ‘তা বললে কি করে হয় দিদি, সবাই মিলে কাজ করবো তাহলে সবারই সুবিধা হবে।’ ননদ বললো, ‘এই সবার মধ্যে কিন্তু আমি নেই। ঘরের কাজ করতে আমার একদম ভালো লাগেনা।’ শাশুড়ি বললেন, ‘আহাঃ তুমি ওদের কেন টানছো, ওরা যদি কাজকর্ম কিছু জানতো তাহলে এত টাকা খরচা করে কাজের বউ কেন রাখবো? আমি এই বুড়ো বয়সে আর কত খাটবো বল? এতদিন তো করলাম এবার তুমি একটু হাত লাগাও।’ আমি বুঝলাম শাশুড়ি আমার কাঁধে গোটা বংশের দায়িত্ব সঁপে নিশ্চিন্ত হতে চাইছেন। আমি তাঁকে বললাম, ‘মা আমি চাকরি করতে চাই। সংসারে অনটন তো স্পষ্ট। স্বামীর সঙ্গে স্ত্রীও যদি রোজগার করে তবে টাকা পয়সার টানাটানি কিছুটা কমবে।’ জা বলে উঠলেন, ‘তুমি কী বলতে চাইছো, আমরা তোমার স্বামীর গলগ্রহ?’ শাশুড়ি বললেন, ‘ঘরের বউ হয়ে বাইরে চাকরি করতে যাওয়ার কথা ভাবলে কি করে? ছিঃ ছিঃ’ ননদ বললো, ‘সব দোষ তোমার মা। আগেই তো বলেছিলাম, ওকে যত লাই দিয়েছ এখন ও তত মাথায় উঠে নাচছে।’ আমাদের সেই তুমুল ঝগড়ার খবর বাড়ির বাকি বাসিন্দাদের পাশাপাশি পাড়ার প্রতিবেশীদের কান পর্যন্ত পৌঁছাতে বেশি সময় লাগেনি। সেদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফণীন্দ্র আমাকে বললো, ‘আজকে মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করেছো কেন?’ আমি বললাম, ‘কোথায় ঝগড়া করেছি? আমি তাঁকে শুধু বলেছিলাম যে আমি চাকরি করতে চাই। জানো এই ইচ্ছা আমার আজকের নয়, অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল। যখন জানলা দিয়ে দেখতাম সকালবেলা পাড়ার অন্য বাড়ির মেয়ে বউরা সেজেগুজে অফিসে যাওয়ার জন্য ছুটছে তখন আমার মনটাও যেন ওদের সঙ্গে সঙ্গে চলে যেতে চাইতো। যতদূর পর্যন্ত ওরা আমার দৃষ্টিসীমার মধ্যে থাকতো ওদের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। ওরা যখন দিনের শেষে ক্লান্ত পায়ে বাড়ি ফিরতো তখন ফোনে ওদের কাজ নিয়ে আলোচনা বা কথা কাটাকাটি কান পেতে শুনতাম।’ ফণীন্দ্র বললো, ‘ওসব চাকরির ভূত মাথা থেকে নামিয়ে দাও। ভদ্র ঘরের বউরা চাকরি করতে রাস্তায় বেরোয় না, তাতে মেয়েদের চরিত্র নষ্ট হয়ে যায়।’ আমি বললাম, ‘চাকরি করতে বেরিয়ে যদি কোনো মেয়ের চরিত্র নষ্ট হয়ে গিয়ে থাকে তবে তা তোমাদের মত পুরুষদের জন্যই হয়েছে।’ আমার এই কথাটা ফণীন্দ্র হজম করে উঠতে পারেনি। সেদিনের পর থেকে শ্বশুরবাড়িতে আমার স্থান আসলে যে কোথায়  তা সকলে মিলে আমাকে খুব ভালোভাবে বুঝিয়ে দিতে আরম্ভ করলো। এরই মধ্যে অনিচ্ছা সত্ত্বেও একদিন আমি গর্ভবতী হয়ে পড়লাম। বাড়ির কেউই এই খবর শুনে তেমন আনন্দ প্রকাশ করলো না। হয়ত আমার সঙ্গে সঙ্গে আমার গর্ভস্থ শিশুও তাদের অপছন্দের বিষয় হয়ে উঠেছিলো। সেই অবস্থাতে তারা আমার গায়ে হাত না তুললেও মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছিলো। শ্বশুরবাড়িতে আমার যত্ন নেওয়ার মত কেউ ছিল না বলে আমি বাপের বাড়িতে চলে এসেছিলাম। সেখানে মাত্র একমাস থাকার পর মা বাবা ডেলিভারির আগেই আমাকে জোর করে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। আমি বুঝতে পারলাম বাপের বাড়িতে এখন আমি একজন অতিথি মাত্র। এই বাড়িতে আর আমার কোনো অধিকার অবশিষ্ট নেই। শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসার পর দেখলাম আমার এই কয়েকদিনের অনুপস্থিতিতে সবকিছু ওলট পালট হয়ে গিয়েছে। বেকারত্বের শিকার আমার ভাসুর ফণীন্দ্রের স্থানে হয়ে উঠেছেন বাড়ির সর্বময় কর্তা আর আমার স্থানটি পুরোপুরি দখল করে বসেছেন আমার জা। তিনি এখন বাড়ির কর্ত্রী। এমনকি আমার নিরীহ স্বামীটির ওপর আমার যতটুকু অধিকার ছিল তাও তিনি কেড়ে নিয়েছেন। শাশুড়ি, ননদ, ভাসুর এমনকি আমার সামনেও ফণীন্দ্রের সঙ্গে ঢলাঢলি করতে তার বাঁধতো না। বাড়ির কেউ তার এইসব অপকীর্তির প্রতিবাদ করতো না। আমি অসহায়ের মত দাঁতে দাঁত চিপে সব সহ্য করতাম। এরপর একদিন আমার একটা ফুটফুটে ছেলে হল। কিন্তু ছেলেটা বেশিদিন বাঁচলো না। সমস্ত মায়া ছিন্ন করে আমাকে একলা ফেলে সে চলে গেল। এই ঘটনার পর সহানুভূতি দেখানো তো দূর ওরা আমাকেই দোষী প্রমাণ করে আমার ওপর আরও বেশি মানসিক নির্যাতন করা শুরু করলো।

এর কিছুদিন পর এক গভীর রাতে সকলের অলক্ষ্যে এক কাপড়ে আমি ঐ বাড়ি ছেড়ে চিরতরে পালিয়ে এলাম। আমার এক খুড়তুতো দিদি তার শ্বশুরবাড়িতে আমাকে কয়েকদিন আশ্রয় দেওয়ার পর আমাকে এই ফুড ডেলিভারির কাজটা জুটিয়ে দেয়। আজ আমার মনে হয় সেদিন যদি সবকিছু ছেড়ে পালিয়ে না আসতাম তাহলে কোনোদিনই এমন কোনো ঘর খুঁজে পেতাম না যাকে সম্পূর্ণ নিজের বলা যায়।

লেখক : শিক্ষার্থী, ছোটগল্পকার 

ছবি : সংগৃহীত 

 

0 Comments

Post Comment