- 18 June, 2024
- 0 Comment(s)
- 195 view(s)
- লিখেছেন : অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
[৫]
বান আসছে। খবর ছিল ঢালিপাড়ায়। আগের রাত থেকেই। জোরালো বান হবে এবার। মালতী তড়িঘড়ি হাতের কাছে জরুরি যা কিছু পাচ্ছিল গুছিয়ে নিচ্ছিল। দুপুর নেমে এসেছে। আকাশের মুখ ভার। টিপটাপ বৃষ্টির নাচনকোদন শুরু হয়ে গিয়েছে। রেডিওর খবরে বলেছে গত কয়বছরের থেকেও নাকি জোরদার ঝড় হবে এবার। মালতীরা ভয় পায়। প্রতিবারের এই দুর্যোগ অসহ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবারে ঘর ভাঙে। পঞ্চায়েতকে পায়ে ধরে ঘরের টাকা, অনুদান, জোগাড় করতে হয়। ফি-বছরে এভাবে চাষের ক্ষেত জলে তলিয়ে যায়। সুন্দরবন না ছাই। কুৎসিত, ভয়ঙ্কর। মালতী গলা তুলে রানীকে হুকুম দেয়। “ওরে, বসে বসে খেললি হবে এখন? ওদিককার কাপড়গুলো সব বেঁধে তুলতি হবেনে?” সাত বছরের রানী উঠোন ছেড়ে ভিজে পায়ে দাওয়ায় উঠে আসে। “আমাকে তো বলতি হবে, তবে না আমি করব?” “পাকা পাকা কথা শোনো মেয়ের,” মালতী মুখ ঝামটে ওঠে, “এদিকে আয়, ওই চাদরখান টেনে পাত এখেনে!” সে টেনে টেনে কাপড়গুলো গোছাতে শুরু করে। “বাবা আসেনি এখনও মা?” রানী জিজ্ঞেস করে। “তা আর আসবে কেনে, গেল তো সেই সক্কালবেলা ক্ষেতির বাঁধ দেখতে। এখনও ফেরার নাম নেই তেনার! ছাড় ছাড়,” মালতী নিজেই মেয়ের হাত থেকে কাপড়গুলো কেড়ে নিয়ে ভাঁজ করতে থাকে। শোঁ শোঁ হাওয়া উঠতে শুরু করেছে।
পঞ্চায়েতের লোকেরা ভ্যানে করে এগিয়ে আসছে। ব্যাটারি-চালিত স্পিকারে ঘোষণা দিতে দিতে তারা এগোয়। “আজ মাঝরাত থেকে ভোররাত, এই সময়ের ভিতর সমুদ্রের দিক থেকে জোরালো ঘূর্ণিঝড় ধেয়ে আসবে বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এছাড়াও এই ঝড়ের সময় কোটালের প্রভাব চলার কারণ, বানের জল অনেকদূর অবধি ঢুকে আসবে বলে প্রশাসনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। গ্রামবাসীদের কাছে তাই আমাদের আবেদন, আপনারা যত শীঘ্র সম্ভব আপনাদের দরকারি জিনিসপত্র সঙ্গে করে নিয়ে নিকটবর্তী সাইক্লোন সেন্টারে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করুন। সন্ধ্যের পর উপকূলবর্তী গ্রামগুলিতে যে কারোর থাকার উপরে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, শুনুন শুনুন সকলে …” শব্দ মিলিয়ে যায়।
মালতী চোখ ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। তার ঘরের পাশ দিয়ে ভ্যান নিয়ে যাবার সময় পঞ্চায়েতের একজন তাকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠে, “এই মালতী, দিগম্বরের বউ! এখনও সেন্টারে যাসনি তুই? দিগম্বরই বা কই? হাত চালা এবার। বিকেলের আগেই সেন্টারে গিয়ে না উঠলে পরে, এক্কেরে ভেসে বেরিয়ে যাবি কিন্তু সব। এই বলে দিলাম। চল চল, হাত চালা শিগগির!” লোকটি পায়ে পায়ে সামনে এগিয়ে যায়।
“কুড়ুনিদি কোথায় মা?” রানী জিজ্ঞেস করে। মালতী অসহায় ভাবে তাকায়। “সেও তো তোর বাপের সাথেই গেল ক্ষেত দেখতে। সে লোকেরও আক্কেল বুঝি না। নিজে যাবে যাও, ওইটুকু হাবাবোবা মেয়েকেও,” মালতী চুপ করে যায়। রানী বলে, “আহ, রাগ করছ কেন? কুড়ুনিদিকে কি আলাদা করে নিয়ে যেতে হয় নাকি। সঙ্গে সঙ্গে জেদ ধরে নিজেই চলে গেছে দেখো।” মালতী মাথা নাড়ে। শ্বাস ফেলে হঠাৎ। “চল চল, আমরাই গোছাই তাহলে।” কুড়ুনি মেয়ের ইতিহাস নিয়ে এখন মাথা ঘামানোর সময় নেই কারোর।
কুড়ুনি সত্যিই কুড়িয়ে পাওয়া নাম। বছর চারেক আগের কথা। তখন রানীও ছোট অনেক। সেই বছরের ঝড়েই কোথা থেকে যেন মেয়েটা ভেসে এসেছিল। মুখে কথা নেই। বছর আষ্টেক বয়স ছিল তখন তার। প্রশ্ন করলে উত্তর দিতে পারে না। কেবল শূন্য দৃষ্টিতে কেমন করে জানি চেয়ে থাকে। অনেকে বলেছিল হোমে পাঠিয়ে দিতে। বললে পরে সরকার থেকে নিয়েও নিত বোধহয়। তাছাড়া এই তো সুন্দরবন। পরিবেশ যেমন পাল্টাচ্ছে, তেমনই ঝড়-বাদলার পরেপরেই আসছে এনজিও বাবুদের দাপট। একেকজন তো বলেই থাকে মুখের উপর, “এ বাবা কোর সোঁদরবন এরিয়া। এখানে মানুষের চেয়ে এনজিও’র বাস বেশী!” দিগম্বর তবু মেয়েটাকে নিয়ে যেতে দেয়নি। মালতী একটু আপত্তি করলেও বলেছিল, “থাক না বেটি আমাদের কাছে। খাইয়ে পরিয়ে ঠিক মানুষ করে নোব এখন। দিনকাল যা পড়েছে, একবার বাইরে গিয়ে পড়লে আর রক্ষে নেই।” মালতীও শেষ অবধি রাজি না হয়ে পারেনি।
একথা সত্যি খুব। বাইরের পৃথিবীতে থাবা থাবা অন্ধকার যেন জমা হয়ে রয়েছে। আর ক’বছরে সোমত্ত হতে চলা আস্ত মেয়েমানুষ। মালতীর গা শিউরে ওঠে হঠাৎ। সেই নাম না জানা, কথা বলতে না পারা মেয়েটাই কুড়ুনি হয়ে থেকে গিয়েছে মালতীদের আস্তানায়। পড়তে-লিখতে শিখবে, সে আশা দুষ্কর। ক্ষেতের কাজে সে এখন দিগম্বরকে সাহায্য করে। দুপুর-বিকেলে কো-অপারটিভের ক্লাসে সেলাই শিখতে যায়। মেয়েটা দাঁড়িয়ে পড়বে। মনে মনে ভগবানকে প্রার্থনা করে মালতী। একটা না একটা ব্যবস্থা জুটবে তার।
উঠোনে গাদা করে রাখা খড়গুলোকে প্লাস্টিক ছাইতে হবে। নইলে জোরালো হাওয়ার দাপটে এক নিমেষেই উড়ে হারিয়ে যাবে সেসব। মালতী মাথায় হাত দিয়ে বসে। এবারে সত্যি বিরক্ত লাগছে তার। বৃষ্টির দাপট, হাওয়ার দাপট ক্রমেই বাড়তে শুরু করেছে। এখনও যদি দিগম্বর না ফেরে একা হাতে এই সবটুকুকে মালতীই বা কিভাবে সামলাবে এখন? তার শরীর বইছে না। দিগম্বরের উপর তার রাগ জমে ওঠে। ঠিক তখনই বাইরের পথ ধরে কারোর ছুটে আসার শব্দ শোনা যায়।
কুড়ুনি কথা বলতে পারে না। কেবল তার আতঙ্কে বিস্ফারিত হয়ে কোটর থেকে প্রায় বেরিয়ে আসা চোখদুটোই মালতীকে যা কিছু বোঝানোর বুঝিয়ে দেয়। সে চিৎকার করে উঠে হাতের কাপড় ফেলে, ঘর থেকে বেরিয়ে আলপথ বেয়ে ছুটতে শুরু করে। বৃষ্টির বড় বড় ফোঁটায় তার শরীর ভিজছে। হাওয়ার দাপট তার গতি কমাতে পারে না। রানীও কিছু না বুঝেই তার পিছনে ছুটে আসতে থাকে। কেবল কুড়ুনি তখন শূন্য মাটির উঠোনে দু’হাত ছড়িয়ে ধুপ করে বসে পড়ে হঠাৎ। তার কান্নার কোনও আওয়াজ শোনা যায় না। আকাশের দিকে চেয়ে, নিঃশব্দে তার দু’চোখ বেয়ে তখন অঝোরে জল নামতে থাকে।
আলের উপরেই দু’হাত ছড়িয়ে চিত হয়ে পড়েছিল দিগম্বর। ঠোঁটের কষ বেয়ে গাঁজলা গড়িয়ে গিয়েছে। আদুল গায়ে অকাতরে বৃষ্টির জল এসে পড়ছিল। মালতী গিয়ে পৌঁছনোর আগেই দু’চারজন লোক জড়ো হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কারোরই আর কিছু করার নেই। সবকিছুতেই পূর্ণচ্ছেদ পড়ে গিয়েছে অনেকক্ষণ। মালতী হাঁটু ভেঙে বসে। হাত বাড়িয়ে দিগম্বরের শরীর স্পর্শ করতে চায়। এখনও তাপ রয়েছে। বুকের ওঠানামা যদিও থেমে গিয়েছে তার। মালতীর গাল বেয়ে জল গড়ায়। রানী তার পাশে দাঁড়িয়ে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে আছে। ভিড়ের মধ্যে থেকে একজন কেউ মন্তব্য করে, “রাজার জাতের কামড়, বাঁচায় এমন সাধ্যি কার!” সে কপালে হাত ঠেকায়। মালতীর কানে কথা ঢুকছে না। “সময় মতো গোসাবায় নিয়ে যেতে পারলে এ্যান্টি-ভেনম দেওয়া যেত বোধহয়, কিন্তু এ বজ্জাত তো সময়ই দেলনে, আজকাল তেনাদের বিষও তেমনই কড়া হয়ে উঠতিছে!” আরও একজন বলে ওঠে বোধহয়। রানী মালতীর পিঠে ভর দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে। মালতীর শরীরও কাঠ হয়ে ওঠে কেমন। দু’একজনে তাকে ধরে ধরে তুলে দাঁড় করায়। “জোর বাদল আসতিছে গো, সবাই ধরে ধরে হাত লাগাও দিকি! বেলা নামার আগেই সব কাজ মিটিয়ে পরে শেল্টারে গিয়ে ঢুকে পড়তি হবে!” একটি বউ যে মালতীকে ধরে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল সে চিৎকার করে উঠে সত্যিটা জানিয়ে দেয়। প্রকৃতির রুদ্ররূপ মৃত্যুকেও সময় দেয় না। বিকেলের আগেই দিগম্বরের লাশ পুড়ে, ভিজে, কালো কাঠ হয়ে পড়ে থাকে কোথাও। একখানি সাদা থান জড়িয়ে রানীর হাত ধরে পা টেনে টেনে মালতীকে সাইক্লোন সেন্টারে ঢুকতে দেখা যায়। একপাশে কুড়ুনি অসহায় ভাবে বসে থাকে। কেউ খবর নেয় না তার।
মাঝরাতের আগেই সবটুকু শক্তি নিয়ে ঝড় আছড়িয়ে পড়ে। ল্যাণ্ডফলের সময় তার গতিবেগ দাঁড়ায় ঘণ্টায় ১৬০ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার।
গোসাবার ফেরিঘাটে মালতীকে তার মেয়ে জিজ্ঞেস করে, “মা, কুড়ুনিদি আমাদের সাথে আসবে না?” মালতী মাথা নেড়ে ‘না’ বলে। মুখে কোনও জবাব দেয় না। শূন্য দৃষ্টিতে সে নদীর দিকে চেয়ে আছে। ঝড় মিটে গিয়ে সপ্তাহ কেটে গেলেও নদীর জল এখনও উথালপাথাল খুব। ঘাটজুড়ে আরও লোক দাঁড়িয়ে। হাঁস-মুরগি, সবজিপাতি, টুকিটাকি জিনিস, মোটরবাইক। রানী আবারও জিজ্ঞেস করে, “কুড়ুনিদি ওই অবস্থায় একা থাকবে কি করে মা? আমাদের ঘরটাও তো আর থাকার অবস্থায় নেই!” মালতী ঢালি চাপা, কর্কশ গলায় বলে ওঠে, “ওকে কে দেখবে, না দেখবে, তার আমি কি জানি এখন? আমাদের নিজেদেরই এখন থাকার ঠিক নেই। তোর পেটে আমার পেটে ভাত জোগানোর ভাবনা আগে আমার।” “আমরা কোথায় যাচ্ছি মা?” রিনরিনে গলায় আবারও প্রশ্ন শোনা যায়। কর্কশ গলায় আবারও উত্তর আসে, “কলকাতায়।” ফেরির সময় হয়ে গিয়েছে।
এই ঘটনার পর ছয় থেকে সাত বছর অতিক্রান্ত। মালতী রানীকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারেনি। কেবল ফুটপাথে ভিক্ষে করা থেকে শুরু করে, নতুন জীবনে পা বাড়ানোর পর, কালীঘাট-ভবানীপুর অঞ্চলে বস্তির একখানি ঘর, তার আধখানি পরিসর ভাড়া নিয়ে, কখনও বা মোট বয়ে, কখনও বা লোকের বাড়ি কাজ করে, আবার কখনও বা আনাজের ভ্যান চালিয়ে মালতী আজ কিছুটা হলেও ধাতস্থ হয়ে বসতে পেরেছে। রানীকে স্কুলে ভর্তি করানোর স্বপ্নটা সে পূরণ করতে পারবে না, এটুকু বুঝেশুনেই সে এপথে এগিয়েছিল সেদিন। তবু মেয়েকে অন্তত নিজের কাছে রাখতে পারবে, কোথাও, কোনও একটা দোকানের কাজ, কিছু বিকল্প আয় – মালতী দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে গিয়েছিল। হাতে হাতে তার ফলও মিলেছিল একরকম। এই সময়েই মালতী মিত্তিরদের বাড়ির কাজটার কথা জানতে পারে। বাজারেই কেউ তাকে বলেছিল বোধহয়।
গোখেল রোড অঞ্চলের ডাকসাইটে বড়লোক অম্বরীশ মিত্র। তার ব্যবসা যে কিসের সে কথা মালতীদের মতো মানুষের জানার কথা নয়। তারা কেবল এইটুকু বুঝে নিতে পারে মিত্তিরদের ধরাকে সরা জ্ঞান করার মতো নিজস্ব আয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। বাজারেই কেউ তাকে খবর দিয়েছিল, সারাদিন ফাইফরমাশ খেটে দেওয়ার জন্য মিত্তিরদের বাড়িতে একজন লোক দেখা হচ্ছে। মাইনেপত্র বাজারের তুলনায় ভালো যথেষ্টই। মালতী যেচে গিয়ে কথা বলতে চেয়েছিল। মিত্তিরগিন্নী নিজে তার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। বড় তিনতলা বাড়ি, মার্বলে বাঁধানো ঘরের মেঝে, ঝকঝকে তকতকে আসবাব। মালতীর নিজেকেই কেমন যেন বারংবার ছোট, নোংরা, কুৎসিত বলে মনে হয়েছিল সেদিন।
কোনও কোনও বাড়ি থেকে এমন টাকার গন্ধ উগ্রতার সঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। এমনকি কোনও কোনও মানুষের থেকেও। কিন্তু মালতীরও টাকার প্রয়োজন এখন। এই ভেবেই সে রাজি হয়েছিল। মূলত মিত্তিরগিন্নীর পাশাপাশি থাকা। টুকিটাকি জিনিসপত্র এগিয়ে দেওয়া, বাজার করা, কাজ বলতে এই। সাধারণত এসব কাজে কমবয়সী ছেলেছোকরাদেরই রাখা হয়ে থাকে। কিন্তু কোনও কারণে বোধহয় মিত্তিরগিন্নীর মালতীকেই পছন্দ হয়েছিল। আবার বাড়ির কর্ত্রীর সঙ্গেই মূলত থাকতে হবে বলে, সেকারণেই পছন্দ এমন, তাও হতে পারে বোধহয়। মোট কথা মালতীর চাকরি পাকা হয়েছিল। তার শর্ত ছিল রানীকেও নীচের কোনও একটি ঘরে সারাটাদিন ওই সময়টায় থাকতে দিতে হবে। মালতীর সঙ্গেই দুপুরের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা তার। শুরু শুরুতে এমন ব্যবস্থা দেখে মালতীরও কিঞ্চিৎ ভালো লেগেছিল। কাজে বহাল হয়ে প্রথম মাইনেতেই সে তার মেয়েকে ছোট্ট একজোড়া কানের দুল উপহার দিয়েছিল। কেবল কুড়ুনির কথা মনে পড়লেই বুকটা হু হু করে উঠত তার।
দিগম্বরের শোক সবটুকু সে কুড়ুনির উপরেই উগরে দিয়ে এসেছিল সেদিন। বোধহয় শয়তানই স্বয়ং সেই মুহূর্তে মালতীর উপর তার লাল চোখ আর শিং নিয়ে ভর করেছিল। রানী জানতেও পারেনি এসব। কেবল কলকাতায় চলে আসার পর, আর কোনদিনও সে মালতীর কাছে কুড়ুনির বিষয়ে জানতে চায়নি। রাতারাতিই রানী বড় হয়ে উঠেছিল। মালতী এখনও অনেক রাত্তিরে, ঘুমন্ত রানীকে তার কোলের কাছে টেনে নিয়ে কুড়ুনির জন্যই একমনে চোখের জল ফেলে। তার স্যাঁতসেঁতে, লবণাক্ত পাপবোধ, মাথার বালিশ ভিজিয়ে দেয়। কেউ খবর পায় না তার। কেবল রানীও কখন জানি তার মায়ের হাতদুটোই অজান্তে চেপে ধরে হঠাৎ। বোধহয় সেও সেইটুকু সময়ে মালতীর পাশে থাকতে চায়।
(চলবে)
আগের পর্বের ঠিকানা – https://nariswattwo.com/welcome/singlepost/%C2%A0the-siege%C2%A0-%C2%A0serialised-novelette-series-four-
0 Comments
Post Comment