- 03 November, 2024
- 0 Comment(s)
- 63 view(s)
- লিখেছেন : অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
[১৩]
বোম্মাই কিছু বুঝে উঠতে পারে না। আড়াইমাস অপেক্ষা করতে হয়নি। একমাসের মাথাতেই কি করে জানি শুনানির তারিখ পাওয়া গেছে। কাল রাত্তিরে যখন বৃদ্ধ আইনজীবী মশাই ফোন করে বোম্মাইকে খবরটা দিলেন, প্রথমটায় সে বিশ্বাস করতে পারেনি। পরে আবার রাজীবের ফোন। সেই ফোন থেকেই ভয়েসেস’এর সুস্মিতা ম্যাডামও কথা বললেন। মাথায় যে সবটা ঢুকেছে এমনটাও বোম্মাই হলফ করে বলতে পারে না। কেবল কার্থিক আর রাজাপ্পা দুইজনকেই আজ সে সঙ্গে করে কোর্টে নিয়ে এসেছে। কোর্টচত্বরেও এক’দুজন নতুন মুখ দেখা যাচ্ছে। এমনকি টিভি-ক্যামেরা ঘাড়েও গাঁট্টাগোঁট্টা দু-একজনকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। বোম্মাইয়ের চিন্তা হয়। একটা গাড়ি এসে দাঁড়াল।
গাড়ি থেকে রাজীব নামছে, পিছনে সুস্মিতাশ্রী পন্নিরসেলভম। বোম্মাই থতমত খেয়ে এগোল। সুস্মিতাশ্রী মৃদু হাসেন। তাঁর চোখে রোদচশমা, পরনে সাদা কুর্তি-পায়জামা। দেখলেই যেন মাথা নীচু করতে ইচ্ছে হয়। তাই করতেও যাচ্ছিল সে। কিন্তু তার আগেই তিনি বোম্মাইয়ের হাত দুটো ধরে ফেলেন, “আলাপ করিয়ে দিই, ইনি চন্দ্র ভার্গব। খুব নামকরা লইয়ার। তোমার স্ত্রী পূর্ণিমার কেসটা এখন ইনিই দেখছেন। চেন্নাই থেকে সেজন্যই ওনাকে সঙ্গে করে নিয়ে এলাম।” পিছন থেকে আরও একজন মানুষ গাড়ি থেমে নেমে এসেছেন। এক মাথা কাঁচাপাকা চুল। লম্বা চেহারা, শক্ত চোয়াল। তিনি বোম্মাইয়ের দিকে তাকিয়ে আলতো মাথা হেলান। বোম্মাই থমকে যায়, “কিন্তু চেন্নাই থেকে লইয়ার, মানে,” রাজীব তার কাঁধে হাত রাখে, “তোমাকে এসব নিয়ে একদম কিছু ভাবতে হবে না। তুমি শুধু প্রস্তুত থাকো। আজই তুমি দিদিকে নিয়ে বাড়ি ফিরবে। শুধু,” পাশ থেকে সুস্মিতাশ্রী যোগ করেন, “হয়তো কোর্টরুম থেকে বেরনোর পর তোমাকে বেশ কিছু লোক কিছু কথা জিজ্ঞেস করবে। ভেবেচিন্তে তার উত্তর দিও। কোনও তাড়াহুড়ো কোরো না কেমন? তাছাড়া,” তিনি যোগ করেন, “আমি বা আমরা তো থাকবই। আমরা তোমার সবটুকু সম্মান ফিরিয়ে দিতে বদ্ধপরিকর বোম্মাই।” বোম্মাই হাতজোড় করে। তাকে কার্থিক হাত নেড়ে পিছনে ডাকছে। সে হাতদুটো কপালে ঠেকায়। কার্থিকের হাতে একটা ইংরেজি খবরের কাগজ দেখা যাচ্ছে। বোম্মাই জানে তাদের তিনজনের মধ্যে একমাত্র কার্থিকই ইংরেজি পড়তে পারে। সে একটু অবাক হয়ে তার দিকে এগিয়ে যায়।
“বোম্মাই, ব্যাটা দেখেছিস! তোর নাম খবরের কাগজে উঠেছে!” কার্থিকের গলায় চাপা উচ্ছাস, চাপা শঙ্কা। “এই দ্যাখ এখানে,” সে একটা বিশেষ শিরোনামের উপর আঙুল চেপে ধরে, “হোয়্যার কাস্ট প্লে’জ ফাউল – জাস্টিস গেটস ডিলেইড ইনডেফিনিটলি! – এর মানে হচ্ছে,” কার্থিক চাপা গলায় বলে চলে, “জাতপাতের নোংরামির কারণে বিচারে দেরী অনির্দিষ্টকাল।”
-“এর মানে সেই আয়েঙ্গারদের আগের ঘটনাটা, পূজা আয়েঙ্গার যে রাগ চেপে রেখে এখন তোর উপর দিয়ে এই জঘন্য খেলাটা খেলতে চেষ্টা করছে সেই কথাগুলোই এখানে বলা হয়েছে -”
বোম্মাই ভয় পায় ভীষণ। তার শরীর কাঁপছে, “কিন্তু এতদিন আগের ঘটনা। কোনও প্রমাণ ইত্যাদি কিছুই তো নেই কোথাও!”
-“আরে আছে প্রমাণ!” কার্থিকের গলায় এবারে চাপা উচ্ছাস, “আরও কিসব নাকি ঘটনা ঘটিয়েছে এই আয়েঙ্গারেরা। সেই দু’একটা ঘটনার কথা এখানে বলা আছে। আর তোর মনে নেই, নীলেশের এ্যাক্সিডেন্ট হল যখন – সেই সময় তো হাসপাতাল থেকে তার চিকিৎসার সময় লোক জানাজানি হওয়ার কারণে একটা গাড়ি এ্যাক্সিডেন্টের মামুলি কেস নিয়মরক্ষার খাতিরেই রুজু করা হয়েছিল বোধহয়। তারপর সে কেসে টাকা ঢুকে যায়। এই সবই তো হয়। জানে সবাই। কিন্তু এই নতুন ম্যাডাম দেখছি তার খবরও বের করে এনে কাগজে ছেপে দিয়েছেন, আর” চোখ গোলগোল করে কার্থিক এবারে বোম্মাইয়ের দিকে তাকায়, “আজ যে এই শুনানিটা হচ্ছে, সেটার জন্যও নাকি আদতে চেন্নাই হাইকোর্ট থেকে ওই নতুন লইয়ার আলাদা করে কেস সাজিয়ে বিশেষ রায় নিয়ে এসেছেন! এই সুযোগে গোটা স্টেট তোর নাম জেনে গিয়েছে!” কার্থিকের উত্তেজনা আর যেন বাধ মানছে না। বোম্মাই ধপ করে পাশের চেয়ারটায় বসে পড়ে। সে তো এতখানিও উপরে উঠতে চায়নি। তার গা শিরশির করে ওঠে। কার্থিক আরও বলে, “মোট পাঁচ কিস্তিতে নাকি এই জাতপাতের অবিচারের বিষয়ে আরও অনেক খবর বের হবে এই পত্রিকায়। এখানে লেখা রয়েছে!” বোম্মাই উঠে দাঁড়িয়ে দেওয়ালে মাথা ঠুকতে শুরু করে।
জাত! জাত! জাত! এই শব্দটার জন্যই এতগুলো বছর, বোম্মাই থেকে শুরু করে তার বাপ-ঠাকুর্দা-চৌদ্দপুরুষ – জাত! শালা জাত! পায়ের তলা থেকে উপরে উঠতে চাইলেই শালা গোটা সমাজের জুতোর সামনে একেবারে তাদের ফেলে দেওয়া হবে বোধহয়! কার্থিক বোম্মাইকে জড়িয়ে ধরে তাকে শান্ত করতে চায়। সুস্মিতাশ্রীও এগিয়ে এসেছেন। ভাগ্যিস সাংবাদিকেরা কিছু লক্ষ্য করে উঠতে পারেনি। বোম্মাইয়ের পিঠে হাত রাখেন সুস্মিতা।
-“আমি,” বোম্মাই হতাশ হয়ে একবার বলে, “আমি তো লড়াইটাকে এতখানিও জটিল করে ফেলতে চাইনি ম্যাডাম। আমি তো এতকিছুও তলিয়ে ভাবিনি কোনওদিন! রাজীব-স্যরই বললেন বলে,”
-“তাতে কি হয়েছে বোম্মাই? রাজীব তো ভুল বলেনি। তলিয়ে না ভাবলেও, সত্যিকে কি কোনওদিন, কোনও ভাবে চাপা দেওয়া যায় বোম্মাই, নাকি কোনওদিন তা গিয়েছে?” সুস্মিতাশ্রী বোম্মাইকে শান্ত করতে চেষ্টা করেন।
-“ওরা, ওরা আমাকে মেরে ফেলবে ম্যাডাম। আমি আর গাঁয়ে ফিরতে পারব না,” অস্ফূটে বলে বোম্মাই।
-“কোনও ভয় নেই তোমার,” সুস্মিতা আবারও আশ্বস্ত করেন, “এই মামলার সম্পূর্ণ নিষ্পত্তি না হওয়া অবধি আদালত থেকে তোমাকে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হবে।”
বোম্মাই চোখ তুলে তাকায়। সে কথাগুলো বিশ্বাস করতে পারে না। তারপর আবারও সে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে। এইভাবে, এই লড়াইতে তো সে নেমে পড়তে চায়নি। আজ পরিস্থিতি তাকে এই জায়গাতে এনে দাঁড় করিয়েছে। কিন্তু সত্যিই কি এভাবে বোম্মাইয়ের পক্ষে লড়াই করা সম্ভব? পুরো ব্যবস্থাটার কথা একবার মনে-মনে ভাবতে চাইলে, তৎক্ষণাৎ তার গা শিউরে ওঠে বারংবার। ঠিক এই সময়েই ভিতর থেকে এসে পেশকার ডাক দেয়, “কেস নম্বর ৫৪১/বি/১৭/১/২৪, পূর্ণিমা নায়কন বনাম স্টেট অব ইণ্ডিয়া শুরু হচ্ছে! আপনারা যারা যারা ভিতরে আসতে চান, ভিতরে চলে আসুন!”
সেই বৃদ্ধ আইনজীবী নন, চন্দ্র ভার্গবই আগাগোড়া পূর্ণিমার হয়ে সওয়াল করে গেলেন। আয়েঙ্গারদের কেউ কোর্টে হাজির না থাকলেও এই ঘটনার পিছনে তাঁদের অভিযোগকে ভার্গব সরাসরি চক্রান্ত ও অভিসন্ধিমূলক বলে বর্ণনা করলেন। সবশেষে পরিচয়পত্রে সময় মতো বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন না হওয়ার কারণে সামান্য ৫০০ টাকা চুরির অভিযোগে কাউকে যে মাসাধিককাল এভাবে জামিন না দিয়ে জেলে আটকে রাখা হয়, সেই বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি গভীর উষ্মা প্রকাশ করলেন। এই সওয়ালের পরবর্তীতে বোঝাই যাচ্ছিল পূর্ণিমার জামিন সময়ের অপেক্ষা কেবল। সরকার পক্ষের উকিল কার্যত কোনও সওয়ালই দাঁড় করাতে পারলেন না। জজসাহেবও বিশেষ প্রশ্ন না করে ১০০ টাকার ব্যক্তিগত বণ্ডে জামিন মঞ্জুর করে দিলেন। কাঠের বেঞ্চিতে বসে বোম্মাইয়ের দু’চোখ বেয়ে অঝোরে জল নেমে এল। সে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো তার বউটাকে একবার হাত ছুঁয়ে দেখতে চায়।
তবুও নিকষ অন্ধকার।
বোম্মাই তার বাড়ির দাওয়ায় হাঁটু মুড়ে বসে আছে। সুস্মিতাশ্রীরা এই মাত্র ফিরে গিয়েছেন। একটু দূরে পুলিশ থেকে দেওয়া লোকটি দাঁড়িয়ে। সাদামাটা একজন কনস্টেবল। কার্থিক আজ বোম্মাইয়ের সাথে থেকে গিয়েছে। পূর্ণিমাকে সঙ্গে নিয়ে তাদের ফেরা হয়নি। কেবল ফিরতে ফিরতে তারা দেখেছিল, আয়েঙ্গারদের বিরাট বাড়িটা কেমন থমথমে, ভীষণ চেহারা নিয়ে দাঁড়িয়ে। সুস্মিতাশ্রী বারবার তাদের আশ্বস্ত করেছিলেন। প্রথমত সারা রাজ্যের খবরের কাগজ আর মিডিয়াতে এই বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে খবর হওয়ার কারণে, এবং তারই সঙ্গে জাতের ভিত্তিতে এই গা-জোয়ারির চেষ্টা ক্রমশ প্রকাশ হয়ে পড়াতে আপাতত আইন ও নিরাপত্তার দিক দিয়ে বোম্মাইরা নিরাপদ। অন্যান্য কাগজগুলিও বিভিন্ন জেলা থেকে এমন জাত-ধর্মের ভিত্তিতে ঘটে যাওয়া ছোটবড় অপরাধ, অন্যায়, অবিচার – এগুলি নিয়ে একেকটা করে হলেও স্টোরি করতে শুরু করেছে। সুস্মিতাশ্রী মনে মনে বোঝেন, ভয়েসেস’ও এই খবরের মাধ্যমে একটা ব্রেক পেয়ে গেল বোধহয়। আদতে লড়াইটা চলছে দু’পক্ষেই। আদতে লড়াইটা চলছে অনেকদিন। কিন্তু জামিন হলেও পূর্ণিমার মুক্তি হয়নি আজ।
আদালত থেকে কাগজ এসে পৌঁছতেই বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নেমে যায়। চন্দ্র ভার্গব অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছিলেন। তিনি আরও কোনও আইনি পদ্ধতির সহায়তা নেবার কথা ভাবছিলেন। কিন্তু সুস্মিতাশ্রী আর বোম্মাইই তাকে নিরস্ত করে। লড়াই দীর্ঘ। এত তাড়াতাড়ি শক্তিক্ষয় নিষ্প্রয়োজন। গাড়িতে ফিরতে ফিরতে সুস্মিতাশ্রী ভাবছিলেন, আঘাত এলে এবার তার উপরেই আসবে। তার কারণও তাঁর জানা। তবু তিনি চোয়াল শক্ত করেন। আদালতের কাঠগড়ায় যখন বোম্মাই পূর্ণিমাকে জড়িয়ে ধরেছিল, তিনি অন্যদিকে তাকিয়েছিলেন। এমন একেকটা মুহূর্তের সাক্ষী থাকবেন বলেই না সৎ সাংবাদিকতার পেশাকে বেছে নেওয়া। বোম্মাই তার অন্ধকার ঘরে শুয়ে থাকে।
পাশে কার্থিকের নাক ডাকার আওয়াজ পায়। বোম্মাইয়ের মনে ভয় জাগে। অতগুলো ক্যামেরা আর অতগুলো লোক। নীলেশ-বাসবের ঘরভাঙার দিন, নাক-উঁচু, বদমেজাজি পূজা আয়েঙ্গারকেও যে বোম্মাই যা নয় তাই কথা শুনিয়ে দিতে পেরেছিল, অতগুলো অচেনা মানুষের সামনে সেই কথাই আবার করে বলতে গিয়ে, পূর্ণিমার সততার কথা বুঝিয়ে বলতে গিয়ে সে যেন একেকবারে খেই হারিয়ে ফেলছিল, জিভ কাটছিল বারংবার। তবু তার বলার ভঙ্গিতে কোনও আড়ষ্টতা ছিল না। নায়কনদের হয়ে সরাসরি কথা বলতে, বোম্মাই কোনওদিনই ভয় পাবে না আর।
রাত বাড়ছে। অনেক দূরেকার শহর কলকাতায় স্নিগ্ধ খাটের আরামে শান্ত শুয়ে থাকা সুবর্ণ সেন এপাশ-ওপাশ করে। ঘুম আসছে না। মাঝে শুয়ে আছে বকুল। ওপাশে চন্দন অকাতরে ঘুমিয়েছে। সে এসবের কিছুই টের পায় না। আবারও সুবর্ণ বকুলের মাথায় হাত রাখে। বড় মিষ্টি হয়েছে তার ঘন চুল। সে বকুলের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। সুবর্ণের চোখে ঘুম আসছে না। কালকের শুনানি নিয়ে সে চিন্তিত। যদি কালকেও মালতীর জামিন না হয়, তাহলে শুনানির পরের তারিখ পেতে রীতিমতো সমস্যা হবে এবার। যদিও মালতীর পক্ষে যিনি আইনজীবী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন, তিনি সুবর্ণকে বারবার আশ্বস্ত করেছেন।
তবু তার মনটা কু গাইতে থাকে। এত সহজে বোধহয় মালতীকে এখুনি বের করে আনা যাবে না। মেয়েটা অনেক কিছু জানত। সেই অনেক জেনে ফেলার কারণেই সে মাশুল গুণছে আজ।
সুবর্ণ একবার চন্দনের দিকে তাকায়। বড় শান্তিতে সে ঘুমিয়েছে। স্বামীর এই সাতে-পাঁচে না থাকার মনোভাবটা একেকসময়ে বেশ খারাপ লাগলেও এই বিষয়ে তার বড় কোনও অভিযোগ নেই। কেবল মাঝে মাঝে মনে হয়, কোনও কোনও ক্ষেত্রে, চন্দন যেন বড় বেশি করেই উদাসীন, আর এই নিয়ে তার কোনও ভাবান্তর নেই। সে তেমনই থাকতে চায়। সুবর্ণের স্বামী চন্দন, সমস্ত সমাজের বিষয়ে, সমাজে ঘটে যাওয়া আর যে কোনও ছোটবড় ঘটনার বিষয়ে, অথবা অন্য কোনও বিশেষ অনুষ্ঠানের বিষয়ে – সবকিছুতেই কেমন যেন নির্লিপ্ত হয়ে থাকে। বাড়াবাড়ি রকমে চাল-ডাল-তেল-আনাজ অথবা অফিসের বৈষয়িকতায় ক্রমাগত ডুবতে থাকা এক চরম মধ্যবিত্তরূপ। সুবর্ণ রাজনন্দিনী ওরফে বকুলের গায়ে হাত বোলায়। বকুলের কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে সে যেন ফিসফিস করে কিছু বলে ওঠে। বকুলের শ্বাস শান্ত।
বোম্মাই ভাবছে কাল সকাল হলেই জেলে গিয়ে পূর্ণিমাকে সেই বিশ্রী জায়গা থেকে ছাড়িয়ে আনতে হবে। তারও ঘুম আসে না। এদিকে সুবর্ণ ভাবছে মালতীর বিষয়। একইসঙ্গে সুখেন অথবা মিহিরের কথাও মনে পড়ছে তার। সবার প্রথমে মালতী আর রানীকে একত্রিত করা প্রয়োজন। তারপর নাহয় শুরু হবে অন্য কাজ। সুবর্ণ আবারও পাশ ফেরে। বকুলের চোখের পাতা কাঁপে। সুবর্ণ মাথা নামিয়ে আবারও বকুলের গায়ে হাত বুলিয়ে দেয়।
(চলবে)
আগের পর্বের ঠিকানা – https://nariswattwo.com/welcome/singlepost/the-siege-serialised-novelette-series-twelve-
লেখক : বিজ্ঞানী, কথাসাহিত্যিক
ছবি : সংগৃহীত
0 Comments
Post Comment