ঘেরাটোপ (পর্ব ১২)

  • 17 October, 2024
  • 0 Comment(s)
  • 109 view(s)
  • লিখেছেন : অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
সেদিন রাত্তিরে ডিনার খেয়ে উঠে যাওয়ার সময় সুতনু কেমন বিশ্রী দৃষ্টিতে মালতীর দিকে তাকায়। মালতীর শিরদাঁড়া বেয়ে একটা হিলহিলে স্রোত নামে। তাহলে কি ওরা জেনে ফেলেছে সব? মালতীর কিছু করার থাকে না। সে প্লেটগুলোকে সাজিয়ে তুলতে থাকে। আর মাত্র একটা রাত। সে নিজের মনকে প্রবোধ দেয়। ঘরে এসে দেখে মেঝের উপর নিশ্চিন্তে রানী ঘুমোচ্ছে। কাল সকালেই গিন্নিমাকে বলে বেরিয়ে পড়তে হবে। এখানকার কাজ ছেড়ে দেবে মালতী। গিন্নিমাও সবকিছু জানেন কি? সন্দেহ হয় মালতীর। সে ঘরের আলো নিভিয়ে দেয়। (ধারাবাহিক রচনা, পর্ব ১২)

[১২]

 

অম্বরীশ মিত্রের বাড়িতেই মালতীকে প্রথম দেখে সুখেন। সেদিন তার বাবা সনাতনও তার সঙ্গে ছিল। আর সে বছরেও ভোট ছিল কলকাতায়। সেই ভোটের বিষয়ে কথাবার্তা বলতেই মিত্তির মশাইয়ের বাড়িতে গিয়েছিল সনাতন। কাউন্সিলর লক্ষণ মজুমদারও সেখানে এসেছিলেন। ভোট-রাজনীতির অঙ্ক যারা জানে, তাদের কাছে এ কোনও অস্বাভাবিক বিষয় নয়।

 

গণতন্ত্রের ‘মসিহা’ এই লক্ষণ মজুমদারদের ক্ষমতার পরিসরে টিকিয়ে-বাঁচিয়ে রাখতে পুঁজির প্রতিনিধি হিসেবে অম্বরীশ মিত্রদেরই মতো কারোর না কারোর আশীর্বাদের প্রয়োজন হয়। অর্থ ভিন্ন দেশোদ্ধার অসম্ভব। সেই অর্থের উৎসও অনেক ক্ষেত্রে অন্ধকার। একান্ত পাগল না হলে যেচে কেউই নিজের গচ্ছিত সম্পদ দেশের প্রয়োজনে বিলিয়ে দিতে আগ্রহী হয় না। বরং কড়ায়-গণ্ডায় সেই কাঞ্চন বিনিয়োগ করা মানুষেরা, লক্ষণ অথবা তাদের আরও বেশি পছন্দের একেকজন বিনিয়োগ-শেষে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হলেই, সেই প্রদত্ত কাঞ্চনের বিপরীতে তার শতগুণ বেশি লভ্যাংশ আদায় করে নিতে নখ-দাঁত বের করে আনে। তখন সেই পুঁজির হিংস্রতার সামনে নতজানু হওয়া ভিন্ন লক্ষণ অথবা সমতুল মানুষদের আর কোনও পথ থাকে না। ভোট এদেশে কিনবার সামগ্রী মাত্র। কিন্তু প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায় সুখেন অথবা সনাতনেরা একেকজন।

 

কেবল গণতান্ত্রিক পরিসরেই কি মিত্র মহাশয়দের মতো এমন মানুষদের বাড়বাড়ন্ত খুব? টাকার বিনিময়ে আজকের পৃথিবীতে যে কোনও মানুষেরই শরীর থেকে শুরু করে সত্ত্বা-বোধ-মনুষ্যত্বকেও কি অনায়াস ভঙ্গিতে কিনে নেওয়া চলে না? প্রশ্নগুলো বাতাসে নিমজ্জিত থাকে। অন্ধকারে হেঁটে বেড়ায়।

 

লক্ষণের বাবা অবিনাশকে দেখেই রাজনীতিতে এসেছিল সুখেনের বাপ। অবিনাশ মজুমদার ছিলেন পুরনো দিনের লোক। তাঁর কাছে সততা, নিষ্ঠা প্রভৃতি বিষয়ের গুরুত্ব ছিল। তাই কাউন্সিলরের ঊর্ধ্বে বেশিদূর না উঠলেও পাড়ার মানুষ তাঁকে সমঝিয়ে চলত। শ্রদ্ধা জুটত। সেই অবিনাশ মারা গিয়েছেন। লক্ষণ মজুমদার তাঁর বাপের দাপটুকুকে ভাঙিয়ে নিয়েই এ পথে এগিয়েছেন। কিন্তু আগের ইলেকশনেই ভোট কমেছিল। এবারেরটা উতরোতে তাই লক্ষণ মজুমদার কোমর বেঁধে ঘুঁটি সাজিয়েছেন। অবশ্য দলের কাছ থেকে টিকিট আদায় করে নিতে তাঁকে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি। কারণ শাসকদলের অর্থ-সংগ্রহের নিরিখে লক্ষণের প্রধান পৃষ্ঠপোষক অম্বরীশ মিত্রই এ তল্লাটের সবচেয়ে বড় ‘কাঞ্চন’-সাপ্লায়ার।

 

এলাকার দোকানপাট থেকে ‘তোলা’ আদায়ের পরিমাণ ক্রমশই লক্ষণ বাড়িয়ে চলেছিলেন। একাজে তাঁর দোসর হিসেবে কাজ করেছিল শোভন আর সুনীল। দুই মস্তানের দাপটে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। বেশ কয়েকবার লক্ষণের কাছে এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা পায়নি সনাতন। এবারের নির্বাচনে তার দলের হয়ে খাটার ইচ্ছে নেই। তবু সে অবিনাশের আমলের লোক। তাকে বাদ দিয়ে বস্তির ভোট কব্জা করা যাবে না। সেই বুঝেই লক্ষণ তাকে হাতে রাখতে চায়। অম্বরীশের বাড়িতে এই বৈঠকে আসার সময় কি মনে করে সুখেনকেও সঙ্গে করে নিয়ে আসে সনাতন। নতুন ছেলেরা যদি দলে গুরুত্ব পায়, যদি তাঁদের দেখে লক্ষণের মতো মানুষদের সুমতি হয় – নতুন ছেলেরা উদ্যম নিয়ে দলের কাজে এসেছে, তাদের স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গিকে অন্তত যদি সে সম্মান করে।

 

নিজের ছেলেকে নিয়ে সনাতনের গর্ব কম নয়। ফার্স্ট ক্লাস অনার্সে সে গ্র্যাজুয়েশন পার করে ফেলেছে। পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনেরও ক্লাস শুরু হব হব। তবু লক্ষণ তাকে গুরুত্ব দেয় না। হাত নেড়ে সে সুখেনকে বাইরে যেতে বলে। ঘরে সনাতন, সঙ্গে আরও দু’একজন। শোভন আর সুনীলও সেই বৈঠকে হাজির। একা সুখেনকে বের করে দেওয়া হচ্ছে দেখে সনাতন মৃদু আপত্তি জানায়। সুনীল পিছন থেকে এসে তার পিঠে হাত রাখে। ইঙ্গিত বুঝে সনাতন চুপ করে যায়। তার বিরক্তি বাড়ছে। অম্বরীশ মিত্রের সঙ্গে তার ছেলে সুতনুকেও দেখা যাচ্ছে আজ। খটকা লাগে সনাতনের। সে সুখেনের দিকে তাকিয়ে মাথা নাড়ে। সুখেন বেরিয়ে যায়।

 

ভিতর থেকে কোনও শব্দ শোনা যায় না। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। বাইরের চেয়ারে বসে সুখেন উশখুশ করে। এই সময়েই মালতী চা নিয়ে আসে। দরজায় কড়া নাড়ে। ভিতরে যাওয়ার সময় মালতী সুখেনের দিকে তাকায়ও না ভালো করে। সুখেন মুখ তুলে অল্প নজর করে কেবল। বাড়ির কাজের লোক। সুখেন চুপ করে বসে থাকে। একটু পরে মালতী বেরিয়ে এসে নিজের কাজে চলে যায়। আবারও নিস্তব্ধতা। সুখেন ভাবে এই দলেরই জন্য কি না করেছে তার বাপ। রাতবিরেতে ছোটাছুটি থেকে শুরু করে থানা ঘেরাও। পুলিশের মারের সুমুখে বুক পেতে দেওয়া। সেসব সে তার মায়ের মুখে শুনেছে। ভিতর থেকে কি কারোর গলার শব্দ শোনা গেল? এই সময়েই সুখেনের হাতে টান পড়ে হঠাৎ।

 

-“এই, আমার সঙ্গে খেলবে তুমি?”

 

বাচ্চা মেয়ে এক। শ্যামবরণ রঙ। ডাগর দুটি চোখ। পরনে সাধারণ ছিটের ফ্রক। এক হাতে একটা খেলার বল নিয়ে অন্যহাতে সুখেনের হাত ধরে সে টেনে রেখেছে।

 

-“বলো না, খেলবে আমার সঙ্গে?”

 

সুখেনের মনটা কেমন নরম হয়ে যায়। তার তিন্নির কথা মনে পড়ে। তাদের বস্তিতেই থাকত সে। একলা বাপের সঙ্গে। বাপ কাজ করত ছাঁট লোহার ওজন-দোকানে। একদিন কেমন করে জানি বেবাক হারিয়ে গেল দুইজনেই। মেয়ে আর তার বাপকে আর চোখে দেখেনি কেউ। কেবল দেখেছিল তাদের ঘরটা তালাবন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। মাস ঘুরেছিল, বছর পুরেছিল। ফেরেনি কেউ। তারপর তালা ভেঙে বস্তিরই আরও কেউ সেই ঘরের দখল নিয়েছিল। তিন্নির টলটলে মুখটা আজও সুখেনের চোখে ভাসে। তখন সুখেনের হায়ার সেকেণ্ডারির সময়। তিন্নি মাঝে মাঝেই তাদের ঘরে এসে বসত। সুখেনের হাত ধরে টেনে তাকে খেলতে ডাকত। তার ডাকে সাড়া না দিয়ে পারত না সুখেন। এই মেয়েটাকে দেখে তার তিন্নির কথা মনে পড়ছে। মেয়েটা আবারও তার হাত ধরে টানে। “কই, খেলবে না?”

 

মেয়েটার হাত থেকে সুখেন বলটা নেয়। মেয়েটা সঙ্গে সঙ্গে দেওয়ালের দিকে পিছিয়ে যায়। মাথার উপর হাত তুলে বলটা আলতো করে ছুঁড়ে দেয় সুখেন। একটু উঁচুতে হয়ে যায়। বলটা মেয়েটার মাথার উপরে দেওয়ালে লেগে আবারও সামনে ফেরত চলে আসে। তারপর মেঝেতে ধাক্কা খেয়ে আবারও বলটা শূন্যে লাফিয়ে উঠতেই হাত বাড়িয়ে সেটাকে ধরে নেয় মেয়েটা। তারপর সুখেনের দিকে ফিরতি ছুঁড়ে দেয়। এমন চলে বেশ কয়েকবার।

 

সুখেন হাসছে। “নাম কি তোমার?” সে জিজ্ঞেস করে। বলটা ছুঁড়ে ফেরত দিতে দিতেই মেয়েটা জবাব দেয়, “আমার নাম রানী।”

-“তুমি এ বাড়িতেই থাকো?”

-“হ্যাঁএ্যা! আমার মা’ও এ’বাড়িতে থাকে। কাজ করে।” বলটা আবারও সুখেনের দিকে ফেরত আসে।

-“আচ্ছা। আর বাবা? তোমার বাবাও কি এবাড়িতে থাকে?” বলটা ফের ছুঁড়ে দিতে দিতে জিজ্ঞেস করে সুখেন।

 

বলটা আর ফেরত আসে না। “আমার বাবা নেই,” মেয়েটা চুপ করে যায়। মেঝেয় বসে পড়ে হঠাৎ।

 

সুখেন কি বলবে ভেবে পায় না। মেয়েটার চোখে জল নেই। কেবল এক শূন্যতা। “আমাদের ঘর ছিল নদীর ধারে জানো। খালি জল হতো। ঝড় হতো। একবার খুব ঝড় হল। তারপর,” মেয়েটা কি যেন ভাবছে। সুখেন উঠে দাঁড়ায়। মেয়েটার সামনে হাঁটু মুড়ে বসে। “রানী,” মেয়েটার দুটো হাত ওর মুঠিতে নেয়, “তোমার কষ্ট হচ্ছে?” মেয়েটা মাথা নাড়ে। “ঠিক কষ্ট নয়, আমি জানি বাবা আসবে। এত করে ডাকি, তবু আসে না কেন বলো তো?” মেয়েটার চোখে সুখেনের চোখ, “মা বলে বাবা নাকি আর আসবে না। বাবা মরে গেছে। কিন্তু আমি জানি বাবা আসবে। জানো? আমাদের গ্রামের মন্দিরের ভটচাজজেঠু, একবার মাকে বলেছিল। একমনে ঠাকুরকে ডাকলে নাকি ঠাকুর সব শোনে। আমি জানি। তাই তো আমি রোজ,” তারপর কি ভাবতে ভাবতে যেন মেয়েটা চুপ করে যায়। তারপর বলে, “একদিন, খুব ঝড়ের পর মা আমাকে নিয়ে ঘর ছেড়ে চলে এল। কুড়ুনিদিদিকেও সঙ্গে নিয়ে এল না। খালি বলল বাবা নেই, বাবা মরে গেছে। আমার আর কিছু মনে পড়ে না। আমার ভয়ও করে না। খালি মনে হয় বাবা আসবে। ঠিক আসবে।”

 

-“রানী”, মেয়েলি গলায় ডাক শুনে দুজনেরই চটকা ভেঙে যায়। সুখেন দেখে চা দিতে আসা মেয়েটি আবারও এসে দাঁড়িয়েছে। মালতী। নামটা তখনও জানত না সুখেন। “রানী, তুকে না কতবার বলেছি ঘরের বাইরে না এইতে। তুই কিনা একেবারে!” সুখেন হাত তুলে মালতীকে আশ্বস্ত করে, “আহা, ও তেমন কিছু করেনি।”

 

-“তাও,” স্পষ্ট গলায় মালতী জবাব দেয়, “বাইরের লোক আপনি, আপনাকেই বা ও কেন বিরক্ত করবে?” কথাটা বুঝতে পারে সুখেন। রানীর তরফে তাকে বিরক্ত করা নিয়ে মালতীর আপত্তি যত না, তার চেয়ে বেশি আপত্তি মেয়ে বাইরে আসায়, এবং বাইরের অচেনা লোকের সঙ্গে কথা বলায়। সে চুপ করে যায়। রানীর থেকে পিছিয়ে আসে। “ঘরে যা এখুনি!” মালতীর হুকুমের আগেই চোঁ চাঁ দৌড় দিয়ে রানী পালিয়ে যায়। সুখেন তার দিকে তাকিয়ে একবার মাথা নাড়তে পারে কেবল। “আপনি বুঝি এই বাড়িতে কাজ করেন,” মালতীকে জিজ্ঞেস করে সুখেন। “হ্যাঁ,” ছোট্ট জবাব দিয়ে মালতী পিছু ফেরে। ঠিক সেসময়েই বন্ধ ঘরের দরজার ওপার থেকে জোর চিৎকারের আওয়াজ শোনা যায়। সনাতনের গলা চিনতে সুখেনের এতটুকু ভুল হয় না।

 

বন্ধ দরজার ওপাশে সেদিন ঠিক কি নিয়েই বা অমন বিতণ্ডা হয়েছিল সনাতন কোনওদিন সুখেনকে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। কেবল আর কোনওদিন দলের কাজে সনাতনকে দেখা যায়নি। সুখেনকে হয়তো বলত সনাতন। কিন্তু সেই দিন সেই ঘর থেকে সনাতন বেরিয়ে আসার পর, তেরাত্তির না কাটতেই সুনীল আর শোভন তাদের বাড়িতে এসেছিল। আবারও ঘরের দরজা বন্ধ করে তার বাপকে ওরা ভিতরের অন্ধকারে গুজগুজ-ফুসফুস কি যে বুঝিয়েছিল তা সুখেন জানে না। কেবল ওরা চলে যেতে সুখেন দেখেছিল তার বাপের মুখটা কেমন ফ্যাকাশে, রক্তশূন্য হয়ে রয়েছে। সুখেনকে সে কেবল বলেছিল, “মরে গেলেও আর পার্টি করিসনে রে বাপ। ওরা তোকে জানে মেরে দেবে।” অনেক পরে মালতীর কল্যাণেই সুখেন জেনেছিল সব। বাপকেও তার জানার কথা বলেছিল। কিন্তু সে কথা বলতে গিয়েও পেরিয়ে গিয়েছিল আরও অনেক মাস।

 

সেদিন রাত্তিরে ডিনার খেয়ে উঠে যাওয়ার সময় সুতনু কেমন বিশ্রী দৃষ্টিতে মালতীর দিকে তাকায়। মালতীর শিরদাঁড়া বেয়ে একটা হিলহিলে স্রোত নামে। তাহলে কি ওরা জেনে ফেলেছে সব? মালতীর কিছু করার থাকে না। সে প্লেটগুলোকে সাজিয়ে তুলতে থাকে। আর মাত্র একটা রাত। সে নিজের মনকে প্রবোধ দেয়। ঘরে এসে দেখে মেঝের উপর নিশ্চিন্তে রানী ঘুমোচ্ছে। কাল সকালেই গিন্নিমাকে বলে বেরিয়ে পড়তে হবে। এখানকার কাজ ছেড়ে দেবে মালতী। গিন্নিমাও সবকিছু জানেন কি? সন্দেহ হয় মালতীর। সে ঘরের আলো নিভিয়ে দেয়। তার মনে পড়ে গতকাল বিকেলেও সুতনু রানীকে গাল টিপে আদর করেছে। একটা চকলেটও দিয়েছে বোধহয়। সে ধড়মড় করে বিছানা থেকে উঠে বসে। তার গা ঘিনঘিন করছে। জানোয়ার, সে অস্ফুটে উচ্চারণ করে। মেঝে থেকে উঠে সে ঘরময় সেই চকোলেটের মোড়কটাকে খুঁজতে শুরু করে। ওই তো! ছোট একফালি জানালা দিয়ে বাইরের স্ট্রিটল্যাম্পের আলো এসে পড়ছে। রূপোলী তবকটুকু চিকচিক করে। সে হাত বাড়িয়ে সেটাকে তুলে নেয়। জানলার পাল্লাদুটো ফাঁক করে ছুঁড়ে মোড়কটা বাইরে ফেলে দেয়। আঁচলে হাত মোছে বারংবার। বাইরে বৃষ্টি শুরু হয়। জানলার পাল্লা ভেদ হয়ে শিরশিরে বাতাস বয়ে আসে। সোঁদা গন্ধে মালতীর ফুসফুস শান্ত হয়। মানসিক ভাবে তার ক্লান্ত লাগছে খুব।

(চলবে)

 

আগের পর্বের ঠিকানা – https://nariswattwo.com/welcome/singlepost/the-siege-serialised-novelette-series-eleven 

 

লেখক: বিজ্ঞানী, কথাসাহিত্যিক 

ছবি : সংগৃহীত 

 

0 Comments

Post Comment