আন্দোলনের পথে আলো জ্বেলেই পৃথিবীর ক্রমমুক্তি হবে।

  • 23 August, 2024
  • 0 Comment(s)
  • 304 view(s)
  • লিখেছেন : মোনালিসা পাত্র
মানুষ রাস্তায় নেমেছেন, জনমত তৈরি করেছেন, ধর্ম, বর্ণ রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে রাস্তায় নেমেছেন একটি হুঁশিয়ারি দিতে যে রাষ্ট্র কখনই মানুষের ঊর্ধ্বে হতে পারে না। রাষ্ট্রযন্ত্র প্রাণহীন হতে পারে কিন্তু মানুষের প্রাণশক্তি তা কখনোই মানবে না। মানুষের মনোবলকে উপেক্ষা করা যায় না।

কিসের বিচার চাইছি?

আর পাঁচটা দিনের মতো একটি সাধারণ সকাল। কলেজ যাবো, তৈরি হচ্ছি। বাসে উঠে নিয়মমাফিক মোবাইলের খবরের পাতায় চোখ এবং এক বীভৎস ঘটনার বিবরণ। আর.জি.কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কর্মরত এক মহিলা চিকিৎসককে নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে। এর ঘটনাক্রমে প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও সাধারণ জনমানসে এক অভূতপূর্ব বিচারের প্রত্যাশায় রাস্তায় নামার সাক্ষী হচ্ছি, প্রতিটি দিন, প্রতিটি রাত। এমতাবস্থায় নানান মানুষ নানান ভাবে প্রতিবাদ করছেন। কেউ রাস্তায় নেমে, কেউ মিছিলে হেঁটে, কেউ গান, কবিতা, ছবির মাধ্যমে, কেউ সোশ্যাল সাইটে জনমত একত্র করছেন কিন্তু মুখ্য সুর একটিই “আমরা বিচার চাই”। আমি নিয়মিত সোশ্যাল সাইট ব্যবহার করি। নিজের মতামত লিখি এবং অন্যদের লেখাও পড়ি। আর এই লেখালেখি বা পড়া থেকে বুঝতে পারছি এই উত্তাল, অস্থির সময়ে কিছু প্রশ্ন বহু মানুষের মনে ঘোরাফেরা করছে এবং তা নিয়ে নানান তর্জা চলছে। আমি আমার মতো করে কিছু প্রশ্নের এবং কিছু আলোচনার গভীরে যাবার চেষ্টা করছি।

প্রশ্ন ১:

এই আন্দোলন কি অরাজনৈতিক?

না। পৃথিবীতে কোনো গণঅভ্যুত্থানই অরাজনৈতিক নয়, তা হতে পারেনা। তাহলে যারা বলছেন আন্দোলনে রাজনীতির রং লাগাবেন না, তারা কি সুবিধাবাদী? সবক্ষেত্রে হয়তো না। অরাজনৈতিক এবং দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে এক কাঠামোগত পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে জনজাগরণ কিন্তু দুটি আলাদা বিষয়। আমরা প্রত্যেকেই এখন দলীয় রাজনীতি সম্পর্কে অবগত এবং নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে কোনো একটি দলকে বেছে নিই এবং তাকে ভোট দিই। কিন্তু ভোট দিচ্ছি এবং সরকারের প্রকল্প ব্যবহার করছি মানেই সেই সরকারের সমালোচনা করতে পারিনা এটি অতি সরলীকৃত একটি হিসাব। আমি হাজারবার প্রশ্ন করতে পারি, কারণ সরকার একটি সংস্থা, একটি প্রতিষ্ঠান, তা কোনো দল নয়। তাই আমি যে দলের অংশই হইনা কেন আমি এবং আমরা সবাই সরকারকে প্রশ্ন করতে পারি, সরকারের সমালোচনা ও নিন্দা করতে পারি। এই কাজ আমরা দুভাবে করতে পারি, অন্য কোনো দলের পতাকার তলায় এসে করতে পারি বা দলমতের ঊর্ধ্বে উঠেও করতে পারি। খুব সহজ একটা উদাহরণ দিই। আজকে ‘ক’ দল ক্ষমতায় আছে এবং আমি তার প্রতিনিধিদের কথাবার্তা, আচরণ এবং পদক্ষেপ নিন্দনীয়, আমি নিন্দা করলাম এবং ‘খ’ দলের প্রার্থীদের হয়ে কাজ করলাম, ভোট দিলাম এবং ‘খ’ দল ক্ষমতায় এল। ‘ক’ দলের সেই মানুষটি বা মানুষগুলোও অর্থাৎ যাদের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে আপনি ‘খ’ দলে এলেন তারাও পিছু পিছু এল এবং কি হল? আমে-দুধে মিশে গেল এবং আপনি আটি হয়ে গড়াগড়ি খেলেন। তাহলে, আমরা কি চাইছি? চাইছি এটা প্রমাণ করতে যে গণতন্ত্রের স্তম্ভ কোনো দল বা কোনো রং নয়, মানুষ এবং কেবলমাত্র মানুষ। তাই মানুষের সেবা করা এবং দায়িত্ব নেওয়া জনপ্রতিনিধিদের একমাত্র কাজ তা বুঝিয়ে দিতে। তাই আজ যে জনজোয়ার তা বিচার চায় এবং এই বিচার চাওয়া একটা দলের কাছে নয়, এই বিচার সমাজব্যবস্থার কাছে এবং মনুষ্যত্বের দরবারে বিচার। দাবি সমানাধিকার, মর্যাদা, দাবি অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার এবং গণতন্ত্রের প্রকৃত অর্থকে কায়েম করার।

প্রশ্ন ২:  

এই লড়াই কি পুরুষের বিরুদ্ধে নারীর?

একেবারেই না। পুরুষতন্ত্র মানে কিন্তু একটি লিঙ্গ না, আরও একটি প্রাতিষ্ঠানিক বিশ্বাস। পুরুষতন্ত্রের ধারক ও বাহক কেবল পুরুষরা নন, বহুলাংশে নারীরাও। প্রতিটি পরিবারে পুরুষরা যে একটু বিশেষ এবং একটু বেশি পাওয়াটাই তাদের জন্য দস্তুর সেই বিশ্বাসটিও বহুলাংশে মহিলারাই তৈরি করেন। তাই আজকে রাত দখলের লড়াই হোক বা মহিলাদের ক্রমাগত অবিশ্বাসের কারণও বহুলাংশে তৈরি করেন মহিলারাও। তাই, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই পুরুষরা যে সমাজের প্রথম সারির নাগরিক, সামাজিক উচ্চপদে আসীন, পরিবারে অগ্রগণ্য এবং অনেক বিচারের তথা কটাক্ষের ঊর্ধ্বে এই বিশ্বাস উভয় নারী ও পুরুষের। মূলতঃ, পুরুষরা যেহেতু এই বাড়তি সুবিধাগুলি পেতে অভ্যস্থ তাই তাদের রক্ষাকর্তা হবার এক গরিমাও আছে। তাই ভাইফোঁটা, রাখি সবই পুরুষকে নারীর রক্ষাকর্তার স্থানে বসিয়ে দিয়েছে। রাত দখলের লড়াইতে বহু পুরুষ সামিল হলেন। হতেই পারতেন, কিন্তু রাত তো তাদের জন্য ছিলই, ছিলনা কাদের জন্য? মহিলাদের জন্য। কিন্তু একটি দিনও তারা পিছু হটতে পারলেন না, নীরব থাকতে পারলেন না। অনেক পুরুষ পেরেছেন, কিন্তু বেশিরভাগই পারেননি, বড্ড বেশি সোচ্চার থেকেছেন। অনেকেই এই প্রশ্ন করছেন সব পুরুষ কি এক? অবশ্যই নন কিন্তু একথা অনস্বীকার্য যে ধর্ষনের মতো অত্যাচারের মুখ এবং লিঙ্গ বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই পুরুষ। তাই মহিলাদের একটু বলতে দিন আপনি কতখানি নিরাপদ ও বিশ্বাসযোগ্য। বহুযুগের অবিশ্বাস ও বঞ্চনার ইতিহাস এত সহজে মুছে যাবার নয়। মহিলাদের বলতে দিন ঠিক কি কি কারণে আপনারা প্রতি মুহূর্তে বিশ্বাস হারাচ্ছেন। নারী পুরুষ বা অন্য যেকোন লিঙ্গের মানুষ কেবল মানবাধিকার নিয়ে কথা বলুন। আজও মহিলাদের সুরক্ষা দেওয়া মানে যদি হয় তাদের রাতে কাজ না দেওয়া, একা নয় দলে চলার পরামর্শ দেওয়া তাহলে বলতে হয় এই লড়াই আবার নতুন করে শুরু হলো, শেষের পথ অনন্ত। তাই, এই লড়াই পুরুষের বিরুদ্ধে নারীর নয়, বড্ড বেশি করে নারীর – এটুকু বুঝলে ভালো হয়। আজও প্রাপ্তবয়স্ক একজন মহিলার অভিভাবক লাগে, পুরুষের লাগেনা। দয়া করে পুরুষরা বুঝুন, লড়াইটা মৌলিক অধিকারের, সমানাধিকারের – তাই কারো বিরুদ্ধে নয় বরং পাশাপাশি আসার, সমান হয়ে আসার, বড় বা ছোট হয়ে নয়।

প্রশ্ন ৩:

তবে কি কিছুই বদলাবে না ? শুরু কোথা থেকে করবো?

এই উত্তর হ্যাঁ বা না হিসেবে দেওয়া খুবই মুশকিল কারণ সমাজটা মানুষ নামক এক অদ্ভুত জীবদের নিয়ে গঠিত। তাই আমাদের আলোচনা শুরু করা উচিত একদম সৃষ্টির ইতিহাস থেকেই। দুটি ভিন্ন লিঙ্গের মানুষের তফাৎ কী? খুব সাধারণ – কিছু বাহ্যিক এবং কিছু অভ্যন্তরীন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের। তাহলে এতো কিসের বৈষম্য? বৈষম্য যতটা না শারীরিক তার থেকে অনেক বেশি মানসিক। কর্মের গুরুত্বগত শ্রেণীবিভাগ এই বৈষম্যের মূল কারণ। একটু সহজ করে বললে, যে কাজের বিনিময়ে অর্থ উপার্জন করা যায় তাই হল প্রধান কাজ বাকি সবই অপ্রধান। তাই তুচ্ছ, তাচ্ছিল্য করাই দস্তুর। সে কাজ যারা করেন, মানে মূলতঃ মহিলারা – তারা দুর্বল, তাই তাদের সাথে তাদের পোষাক-আসাক, চালচলন সবই দুর্বলতার নিদর্শন হিসেবে পরিচিত। সেকারণে সমাজে পুরুষরা দুর্বল হলেই, অনুভূতিপ্রবণ হলেই শুনতে হয় ‘এবার শাড়ি পরে ঘোর’ বা ‘হাতে কি চুড়ি পরিস?’ বা ‘কি মেয়েলি ছেলে বাবা’ এই ধরনের কটাক্ষ।

এবার আসা যাক যা এত মজ্জাগত তা কীকরে বদলাবে? প্রথমেই আমাদের মনে রাখতে হবে ধর্ষনের মতো মারাত্মক অপরাধ কেন হয়? তার কারণ কিন্তু কেবল শারীরিক চাহিদা না, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই শারীরিক ও সামাজিক ক্ষমতা প্রদর্শন, নির্যাতনের মাধ্যমে একজনকে দুর্বল প্রমাণ করার পাশবিক আনন্দ এবং সর্বোপরি সামাজিক উচ্চপদে আসীন একদল মানুষের (যারা মূলতঃ পুরুষ) অপর দল মানুষের (যারা মূলতঃ নারী) উপর ক্ষমতা প্রদর্শনের এক অসম লড়াই। তাই মেয়েদের ক্যারাটে, কুম্ফু শিখিয়ে না, বরং ছেলেদের বোঝাতে হবে ‘না’ মানে ‘না’ তা বলার অধিকার সব্বার আছে এবং সেটা শুনতে ও মানতে শিখতে হবে। দুর্বল মানসিকতার পরিচয় কখনই নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করার মধ্যে নয়, বরং বিকৃত বহিঃপ্রকাশের রাস্তা খোঁজার মধ্যে। মহিলাদের এবং পুরুষদের নিশ্চিত করতে হবে যাতে কখনই কোনো মজা, ঠাট্টা এমন না হয় যা অপরের সম্মানহানি করে এবং এই ব্যবহার গুলিকে স্বাভাবিক ভাবতে শেখায়। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ, বাড়িতে খাবার টেবিল বা বাড়ির কাজ করার সময়গুলি আদর্শ। সেখানে কথা হোক সমানাধিকার নিয়ে, সমতা নিয়ে, সম্মান নিয়ে, অনুমতি নিয়ে, বিশ্বাস নিয়ে এবং মানবিক দায়িত্ব নিয়ে। আলোচনা হওয়া উচিত এই বিষয় নিয়ে যে কাজের কোনো লিঙ্গ নেই কেবল দক্ষতা হয় তাই সবাই সব কাজে যেমন দক্ষ হয়না, তেমনই দক্ষতা লিঙ্গভিত্তিকও নয়। উদাহরণে আসুক মহিলা মহাকাশচারীর কথা, আসুক বিখ্যাত পুরুষ রন্ধনশিল্পীর কথা, আসুক রাতে কাজ করা মায়েদের কথা, বাড়ি সামলানো বাবাদের কথা, আসুক তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের কথা, আসুক সমকামী মানুষদের কথা। এই আলোর যাত্রায় আমরা সকলে সহযোদ্ধা তাই প্রতিটি পদক্ষেপে আমাদের ভূমিকা প্রধান ও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাই মানুষ সহ প্রতিটি প্রাণীর অন্যের ক্ষতি না করে সম্মানের সঙ্গে বাঁচার পরিসর তৈরি করতেই হবে। শেষ কবে কেউ জানিনা শুরু তো হোক।

প্রশ্ন ৪:

বিচার কার কাছে চাইছি? আর কি হবে এর বিচার?

বিচারের দাবিতে আজ কোলকাতা সহ গোটা ভারতবর্ষ সহ গোটা বিশ্ব উত্তাল। কিন্তু কেন্দ্রীয় তদন্ত কমিটি তো বিচার করছে। তাহলে কিসের এত অস্থিরতা? আজ রাজ্য সরকারের কাছে আর বিচারভার নেই, তাহলে কার কাছে বিচার চাইছে মানুষ? মানুষ রাস্তায় নেমেছেন, জনমত তৈরি করেছেন, ধর্ম, বর্ণ রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে রাস্তায় নেমেছেন একটি হুঁশিয়ারি দিতে যে রাষ্ট্র কখনই মানুষের ঊর্ধ্বে হতে পারেনা। রাষ্ট্রযন্ত্র প্রানহীন হতে পারে কিন্তু মানুষের প্রাণশক্তি তা কখনোই মানবে না। মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ। আমার শহরের চলার গতি মন্থর, আমার শহরের উচ্চাশা ক্ষীণ কিন্তু আমার শহরের প্রাণ আছে। তাই এই জনস্রোত রাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করে বলে ‘খবর্দার’! বিচার হবে জনতার দরবারে। রাষ্ট্রকে ধিক্কার জানাবার ক্ষমতা কেবল মানুষেরই আছে। কর্মক্ষেত্রে একবিংশ শতাব্দীতে একটি মেয়ে ধর্ষিতা হয়ে খুন হলে, রাষ্ট্র যদি তাকে ন্যায় বিচার দিতে না পারে জনতার দরবারে তাকে কৈফিয়ত দিতেই হবে। বিচার চাই সেই রাজনীতির বিরুদ্ধে যা ধর্ষিতার নামের পাশে দামের লেবেল দিতে পারে। মানুষের ক্ষমতা রাষ্ট্রের দুরাচারের অনেক ঊর্ধ্বে। আজ, জনতা রাস্তায় কারণ তারা দুঃসাহস মার্জনা করেননা এবং আমার শহর তার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। বিচার চাইছি এক ঘুনধরা সমাজব্যবস্থার কাছে যে সমাজ এক ধর্ষিতাকে তার সামাজিক অবস্থান ও পোশাক দিয়ে বিচার করে। অন্যায়কে লঘু করে মহিলার চরিত্র বিশ্লেষণের লড়াই করতে থাকে। প্রতিবাদ সেই সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে যা মনে করে একজন দলিত মহিলা, একলা রাতে কাজ করা মহিলা, ছোটো পোশাক পরা মহিলাকে ধর্ষণ করা একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। প্রতিবাদ সেই ক্ষমতার প্রদর্শনের বিরুদ্ধে যা ধর্ষক ও খুনিকে এই বিশ্বাস দেয় যে সে নিরাপদ, অপ্রতিরোধ্য। প্রতিবাদ মানব শক্তির শুভ বোধকে সামনে আনার লড়াই, যেখানে একটা গোটা শহর মাঝরাতে গর্জে ওঠে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, যেখানে খেলার মাঠে খেলা না হলেও দুই বিরোধী দল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে চান। এই প্রতিবাদ রঙের রাজনীতি, কুযুক্তি ও তর্জার অনেক ঊর্ধ্বে। এ বিচার দিতে প্রতিষ্ঠান অক্ষম। এ বিচার মানুষের বিবেকের কাছে, এ প্রতিবাদ দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দেবার- গণতন্ত্রে মানুষই শেষ কথা বলে।

 মূল চারটি প্রশ্নের উত্তর খোঁজার মাধ্যমে কিছু জিনিস আবার একত্রিত হলো, তা হলো সমাজে নারী পুরুষ এই দুইয়ের অনেক ঊর্ধ্বে রয়েছে ক্ষমতার প্রদর্শন এবং বিকৃত প্রদর্শন। রাষ্ট্র সদাসর্বদাই শোষক, মানুষকে সে তার যন্ত্র করে রাখতে চায়। রাজনৈতিক দলের রং বদলায় তাদের পরিচালনার ঢং বদলায় না। একবিংশ শতাব্দীর স্বাধীন দেশে আজও যখন এক নারীর কর্মক্ষেত্রে নারকীয় ধর্ষণ ও খুনের খবর পাই আমার বুক কাঁপে আশঙ্কায়, অবিশ্বাসে এবং প্রচণ্ড ক্রোধে আমি জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ি। আর সহ্য হয়না বলে রাস্তায় নেমেছি। এই লড়াই ততদিন চলবে যতদিন না সমাজের প্রতিটি স্তরের মানববন্ধনী, নারী, পুরুষ, ধর্ম বর্ণ জাতি নির্বিশেষে সবাইকে সুরক্ষিত বোধ করবে। হয়তো এ বিশ্বাস অলীক মনে হবে। তাও বিশ্বাসে ভর করেই আজও আমরা নিঃশ্বাস নিই।

0 Comments

Post Comment