মহিলা এবং স্যানিটেশন

  • 22 June, 2023
  • 0 Comment(s)
  • 509 view(s)
  • লিখেছেন : গোলাপসা খাতুন
কন্যা কি জানে কেন তার এই ঋতুচক্র? আধুনিক মনস্ক মায়েরা ছাড়া অর্ধশিক্ষিত ও যৌন অশিক্ষা প্রাপ্ত মা ও বয়স্ক নারীরা তাকে বোঝায় ঋতুচক্র নারী হয়ে জন্মাবার এক দুঃসহ অভিশাপ। প্রতি মাসে সে যখন আসবে তখন তার জীবনের এই চারটি ‘কালো দিনে’ সে অশুচি হয়ে থাকবে। কোনো শুভকাজে তার যোগদান নিষিদ্ধ। এমনকি পূজার ফুলও সে তুলতে পারবে না। ঋতুস্রাব এমনই একটা ‘অশ্লীল’ ব্যাপার যে কোনো পুরুষকে বলা যাবে না। ঋতুমতী নারী অনেক সংস্কৃতিতেই কলঙ্কিত, নোংরা, অপবিত্র এবং দূষিত হিসাবে বিবেচিত হয়।

শরীর সুস্থ রাখা, ধর্ম্ম ও কর্ম্ম সাধনের সর্বপ্রধান অঙ্গ। “শরীরমাদ্যং খলু ধর্ম্মসাধনম্‌”। বর্তমান যুগে একমাত্র ভারতবর্ষ ভিন্ন প্রায় সকল দেশেই নরনারী দেশকাল অনুযায়ী স্বাস্থ্য রক্ষার বিষয়ে বিশেষরূপে যত্ন নিয়ে থাকেন। আমাদের দেশের পুরুষেরা বাইরে কাজকর্মের সাথে জড়িত থাকায় ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় কিছু না কিছু ব্যায়ামচর্চা করে কতকটা সুস্থ থাকিলেও এদেশের নারীসমাজের অবস্থা শোচনীয়। পরিবারের মধ্যে নারী পুরুষের অসম অবস্থান শুধু গৃহশ্রমের ব্যাপারেই সীমাবদ্ধ নয়। খাদ্যগ্রহণ, পুষ্টি, চিকিৎসার ব্যাপারেও এই অসাম্য লক্ষিত হয়। সনাতন ঐতিহ্য অনুযায়ী নারীর গৃহস্থালির একটি অত্যাবশ্যক অঙ্গ হল আগে পুরুষদের পরিতোষ সহকারে খাওয়ানোর পর অবশিষ্টাংশ দিয়ে নিজেদের ক্ষুধা মেটানো। এর ফলে উচ্চবর্গের পরিবারে নারীদের মধ্যে কোন সমস্যা দেখা না দিলেও পুষ্টিকর খাদ্য কম পড়াই স্বাভাবিক। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অমর্ত্য সেন যথার্থই লিখেছেন “পরিবারের সদস্যদের স্বার্থহীনতার ... ধারণাটা অনপনেয়ভাবে মিলে যায় পরিবারের মহিলাদের কাছে অসম অসাধারণ ত্যাগ আদায় করে নেওয়ার সঙ্গে। এইভাবে তৈরী হয়েছে মহিলাদের জন্য ভীষণ অসম অবস্থান। সাবেকী পরিবার একদিকে নিবিড় মমতা, অন্যদিকে শোষণের এক বিরাট মিশ্রণ।”

       পরিবারের মধ্যে খাদ্যগ্রহণ এবং পুষ্টিতে নারী-পুরুষের অসমতা ঘটে শিশুকাল থেকেই। কোনো বিশেষ দুর্বিপাকে বা অনটনের সময় মেয়েরাই খাদ্যগ্রহণের ব্যাপারে বেশি উপেক্ষিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, অমর্ত্য সেন দেখিয়েছেন যে, ১৯৭৮ সালে বন্যার পর পশ্চিমবঙ্গে পাঁচ বছরের কম শিশুদের মধ্যে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের খাদ্যের তীব্র অপুষ্টির প্রকোপ ছিল ৬০ শতাংশ বেশি। অর্থাৎ সংকটের সময় মেয়েদের খাদ্যের ব্যাপারটিই বেশি অবহেলিত থাকে।

       একটি সমীক্ষা অনুসারে ভারতে ১৯৭৬-৭৮ সালে ২০ থেকে ৩৫ বছর বয়সের কম মেয়েদের মধ্যে মৃত্যুহার ছিল সমবয়সী ছেলেদের তুলনায় অনেক বেশি। এই বয়সের মেয়েদের মধ্যেই মা হওয়ার হার থাকে বেশি। তাই এই বয়সেই তাদের পুষ্টির প্রয়োজনই বেশি হয়। কিন্তু সহজেই অনুমেয় যে গর্ভবতী মহিলারা, বিশেষত নিম্নবর্গের গর্ভবতী মহিলারা অনেক সময়ই উপযুক্ত পুষ্টিকর খাদ্য পান না। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ গাইনোকোলজিস্ট অ্যান্ড অবস্টেিট্রক্স এর মতে ‘আনুমানিক আট শতাংশ থেকে পনেরো শতাংশ পর্যন্ত সন্তান জন্ম দেবার সময় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের দেশগুলিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বা অবস্থার জন্য মাতৃ মৃত্যু ঘটে।’ মহিলাদের জন্য দূষণমুক্ত জল এবং স্বাস্থ্যবিধি শিশু ও মায়েদের সংক্রমণের বা মৃত্যুর ঝুঁকি ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে। এর ফলে মায়েদের এবং তাদের শিশুদের মৃত্যু ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে।

       একটি সমীক্ষা অনুসারে ১৯৯০ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত প্রতিবছর যে সব নারী গর্ভধারণ ও সন্তান প্রসবের সময় মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১৯-২০ শতাংশেরও বেশি মৃত্যুর কারণ ছিল রক্তাল্পতা বা বলা যেতে পারে অপুষ্টি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও দূষিত জলের কারণে।

       চিকিৎসার ব্যাপারেও নারীরা পরিবারের মধ্যে বেশি অবহেলিত থাকেন। নারীদের তুলনায় পুরুষদের চিকিৎসা পাওয়ার অনুপাত আগে যত বেশি ছিল, গত দুই বা তিন দশকে তা অনেকটা কমলেও পুরুষের ক্ষেত্রে এই অনুপাত এখনও নিয়মিত ভাবেই নারীদের চেয়ে বেশি। অনেক সময় নারীরা যে অসুস্থ বা তাদের যে শরীর ভালো নেয়, এই উপলব্ধিই তাদের নিজস্ব থাকে না। অথচ পুরুষরা নিজেদর শরীর-স্বাস্থ্য বিষয়ে থাকেন অতিরিক্ত সচেতন। বাড়ির কাজের অসুবিধা হবে বলেও অনেক সময় নারীদের চিকিৎসা হয় না। কারণ চিকিৎসার একটি আবশ্যিক অঙ্গ হল বিশ্রাম, কিন্তু সংসারের জোয়াল টেনে বিশ্রাম নেওয়া তাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। এই পরিস্থিতিতে ১৯০১ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এদেশে নারী এবং পুরুষের অনুপাত যে ৯৭.২ শতাংশ থেকে কমে ৯২.৭ শতংশে দাঁড়িয়েছে যদিও তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই। অমর্ত্য সেন তার গবেষণার পর যথার্থই বলেছেন, “আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি এবং জনস্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ যত বেড়েছে তার বেশিরভাগ সুযোগ নিয়েছে পুরুষ...। নারী পুরুষের অবস্থার ফারাক বেড়েছে আরও।”... অভিজাত সমাজে অবশ্য এমনটা ঘটেনি। কিন্তু নিচু তলার মানুষের মধ্যে পুরুষ ও নারীর মৃত্যুর হার এই বিচিত্র অসাম্য উঁচু তলার ঘুম কাড়েনি।

       নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে প্রতি বছর প্রায় ৮২৯,০০০ মানুষ অপর্যাপ্ত জল, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধির ফলে মারা যায়। যার মধ্যে ডায়রিয়াজনিত মৃত্যুর হার ৬০ শতাংশ। পুওর স্যানিটেশন এর ফলে মৃত্যু হয় প্রায় ৪৩২,০০০ এর কাছাকাছি। পুওর স্যানিটেশনও অপুষ্টিতে ভূমিকা রাখে। ওয়াটার ও স্যানিটেশন সেক্টরে (WSS) নারীরা বিশেষ করে লিঙ্গ সম্পর্কিত পার্থক্যের কারণে অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন এর দ্বারা প্রভাবিত হয়। লিঙ্গ বলতে পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে সামাজিক পার্থক্য বা সম্পর্ককে বোঝায় যা শেখা এবং প্রায়শই তৈরি করা হয় এবং যা বিভিন্ন সমাজে আলাদা এবং সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে।

       স্যানিটেশনে সাধারণত নারী ও পুরুষদের আলাদা ভূমিকা থাকে। বেশিরভাগ সমাজে, পরিবারের জল সরবরাহ, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার জন্য মহিলাদের প্রাথমিক দায়িত্ব রয়েছে। শারীরবৃত্তীয় বা জৈবিক কারণের ফলে মহিলারা – বিশেষত অপর্যাপ্ত স্যানিটেশনের দ্বারা প্রভাবিত হয়। এর মধ্যে ঋতুস্রাব এবং প্রজনন সংক্রান্ত স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে যার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্যানিটেশনের প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। একই সাথে টয়লেট এড়িয়ে যাওয়া ডিহাইড্রেশন একটি বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করে।

       নারীর এই ঋতুচক্র – এটাই কন্যার নারীত্বের প্রথম অভিজ্ঞতা। কিন্তু কন্যা কি জানে কেন তার এই ঋতুচক্র? আধুনিক মনস্ক মায়েরা ছাড়া অর্ধশিক্ষিত ও যৌন অশিক্ষা প্রাপ্ত মা ও বয়স্ক নারীরা তাকে বোঝায় ঋতুচক্র নারী হয়ে জন্মাবার এক দুঃসহ অভিশাপ। প্রতি মাসে সে যখন আসবে তখন তার জীবনের এই চারটি ‘কালো দিনে’ সে অশুচি হয়ে থাকবে। কোনো শুভকাজে তার যোগদান নিষিদ্ধ। এমনকি পূজার ফুলও সে তুলতে পারবে না। ঋতুস্রাব এমনই একটা ‘অশ্লীল’ ব্যাপার যে কোনো পুরুষকে বলা যাবে না। ঋতুমতী নারী বা মেয়েরা অনেক সংস্কৃতিতেই কলঙ্কিত, নোংরা, অপবিত্র এবং দূষিত হিসাবে বিবেচিত হয়। নীতি নির্ধারণ থেকে শুরু করে পরিবারের বাজেটের সিদ্ধান্ত পর্যন্ত মাসিকের স্বাস্থ্যবিধি কম অগ্রাধিকারের কারণে অনেক মহিলা এবং মেয়েরা তাদের ঋতুস্রাব পরিচালনা করতে খুব ব্যবহারিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। তারা দুর্গন্ধ বা দাগ পড়ার ভয় পেয়ে স্কুল, কলেজ বা কাজের জন্য বাইরে যেতে পারে না। যেমন - ‘চৌপদী’ প্রথা বা পিরিয়ডের সময় একজন নারীকে গোয়াল ঘরে আটকে রাখা হত। নেপালের সুপ্রিম কোর্টে ২০০৫ সালে বেআইনি বলে ঘোষণা করার পরও গভীর অন্ধবিশ্বাস এখনও কিছু কিছু জায়গায় টিকে আছে।

       বিশ্বব্যাপী কমপক্ষে ৫০০ মিলিয়ন মেয়ের মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনার (MHM) জন্য পর্যাপ্ত সুবিধার অভাব রয়েছে। বিশুদ্ধ জল, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধি সুবিধা বিশেষ করে পাবলিক প্লেসে যেমন – স্কুল-কলেজ-কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নারীদের জন্য একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াই। দরজাসহ পৃথক টয়লেট বা বাথরুমের অভাব যা নিরাপদে বন্ধ করা যেতে পারে, স্যানিটারি প্যাড এবং হাত ধোয়ার জন্য জল খুবই প্রয়োজনীয়। মহিলারা তাদের ঋতুস্রাবের স্বাস্থ্যবিধি একটি ব্যক্তিগত, নিরাপদ এবং মর্যদা পূর্ণভাবে বজায় রাখার ক্ষেত্রে ঐগুলির অভাবে চালেঞ্জের মুখোমুখি হন। ঋতুস্রাব হওয়া মহিলাদের ‘অশুভ’ বলে মনে করা হয় সমাজে তার ফলে তাদের প্রতিদিনের কর্মকাণ্ড যেমন – শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অনুশীলনে অংশগ্রহণ থেকে নিয়মিতভাবে বাদ দেওয়া হয়। কিছুদিন আগে বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া বচ্চন তার নাতনী নাব্যাকে একথা স্বীকার করেছেন যে, তাদের সময়ে ঋতুস্রাবের সময় অভিনয় কার্য চালানো অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হত তাদের। তাদের জন্য আলাদা কোনো টয়লেট বা বাথরুম দরজাওয়ালা ছিল না। ভেন-এর মধ্যেই তাদের স্যানিটারি প্যাড পরিবর্তন করে ব্যবহার করা প্যাডটি ব্যাগের মধ্যে বহন করে পরে ডাস্টবিনে কোথাও হোক ফেলতে হত।

       পরিচ্ছন্নতা, বিশুদ্ধ জল এবং স্যানিটেশন এর সুবিধার অভাবের কারণে মহিলারা ব্যক্তিগত স্যানিটারি স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন করতে অক্ষম। যেমন ঋতুস্রাবের সময় প্যাড নিয়মিতভাবে পরিবর্তন করা, কাপড়ের প্যাড ধোয়া এবং সঠিকভাবে জীবাণুমুক্ত করার জন্য সূর্যের আলোতে শুকানো ইত্যাদি। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে স্যানিটারি প্যাডের পরিবর্তে মহিলাদের কাপড়ের প্যাড ব্যবহার করতে অনেক বেশি দেখা যায়। তারা সেই কাপড়ের প্যাড ধোয়ার জন্য অন্ধকার নামার অপেক্ষা করে এবং সেটিকে ভালোভাবে সাবান দিয়ে পরিষ্কার না করে অন্ধকারে কোনো স্যাঁতস্যাতে জায়গায় শুকাতে দেয় যাতে পরিবারের পুরুষদের চোখে সেটি না পড়ে। অনেক সময় প্যাডের অভাবের কারণে, বাথরুম ব্যবহার কমানোর জন্য জল খাওয়া সীমিত করা, যাতে বার বার প্যাড পরিবর্তন না করতে হয় এই অভ্যাসগুলি দীর্ঘমেয়াদে গুরুতর স্বাস্খ্য সমস্যা হতে দেখা দেয়। যার ফলে মূত্রনালীতে সংক্রমণ দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অন্যান্য গ্যাস্ট্রিক ব্যাধিও লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা ডায়রিয়ায় ভোগে।

       নারীত্বের সাংস্কৃতিক নিয়মগুলি তাদের নিজস্ব দাবি চাপিয়ে দেয়। উদাহরণস্বরূপ কিছু সমাজে গর্ভবতী মহিলাদের জনসমক্ষে দেখা উচিত নয় এবং গর্ভবতী মহিলাদের পাবলিক সুবিধাগুলি ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। অন্যান্য সাংস্কৃতিক পরিবেশে কন্যারা তাদের পিতা বা শ্বশুরবাড়ির মতো একই ল্যাট্রিন ব্যবহার করতে পারে না। অনেক সমাজে নারীদের আরোপিত সামাজিক বিচ্ছিন্নতা তাদের জনসাধারণের এবং সাম্প্রদায়িক সুযোগ সুবিধা পেতে বাধা দেয় (কোটস ১৯৯৯)।

       বিশুদ্ধ জল, বাথরুম বা টয়লেটের উপর মনোযোগ দেওয়ার কারণে, জনস্বাস্থ্য এবং লিঙ্গ সমতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হাত ধোয়া এবং মাসিক স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনাসহ প্রচার MDG কাঠামোতে প্রতিফলিত হয়নি। (জাতিসংঘ ২০১৪a)। SDG এর সতেরোটি গোলের আওতায় নতুন প্রস্তাবিক লক্ষ্যমাত্রাগুলো MDG-এর কর্মসূচির অনেক ঘাটতি পূরণ করেছে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ২০৩০ সালকে নির্ধারণ করে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য SDG গৃহীত হয়। এর ১৭টি প্রধান লক্ষ্যের মধ্যে ৬নং লক্ষ্যটি হল – Clean Water and Sanitation অর্থাৎ সকলের জন্য বিশুদ্ধ জল ও পয়ঃনিষ্কাশনের টেকসই ব্যবস্থাপনা ও প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা। SDG এর প্রথম কাজই ছিল স্যানিটেশনের জন্য খোলামেলা মলত্যাগ বন্ধ করা। পরবর্তী পদক্ষেপটি হল পানীয় বিশুদ্ধ জল। স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যবিধিতে সর্বজনীন অ্যাক্সেস অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা করা। মৌলিক এই পরিষেবাগুলিতে অ্যাক্সেস অর্জনের পর এমন লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি করা যাদের দ্বারা ঐগুলি নিরাপদে পরিচালতি হতে পারে (জাতিসংঘ ২০১৪b)। ২০১০ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ নিরাপদ এবং বিশুদ্ধ পানীয় জল এবং স্যানিটেশন অ্যাক্সেসকে মানবাধিকার হিসাবে স্বীকৃতি দেয় শুধু তাই নয় পরিষ্কার, অ্যাক্সেসযোগ্য, স্যানিটেশন সরবরাহ করতে দেশগুলিকে সহায়তা করার জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার আহ্বান জানায়। জনস্বাস্থ্যের আন্তর্জাতিক কর্তৃপক্ষ হিসাবে WHOও রোগের সংক্রমণ রোধে বিশ্বব্যাপি প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেয়, সরকারকে স্বাস্থ্য ভিত্তিক নিয়ন্ত্রণ এবং পরিষেবা সরবরাহের পরামর্শ দেয়। ইউনিসেফ ১০০টিরও বেশি দেশএ বিশুদ্ধ জল এবং নির্ভরযোগ্য স্যানিটেশন অ্যাক্সেস প্রদানে সহায়তা করতে এবং গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলে জরুরি পরিস্থিতিতে মৌলিক স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলনের প্রচারের জন্য কাজ করে।

       পরিবার পরিকল্পনা নীতি অনুযায়ী গ্রামাঞ্চলের নারী-পুরুষ এবং বিশেষত শিশুদের স্বাস্থ্যরক্ষা, শিশুমৃত্যুহার রোধ করা, প্রসূতি মায়েদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির দিকে লক্ষ্য রাখা যে সব অসুখ বেশি তা প্রতিকারের ব্যবস্থা করা, পানীয় জল সরবরাহ করা, জলনিকাশি ব্যবস্থা, মলমূত্র ত্যাগের স্বাস্থ্যসম্মত ব্যবস্থা ও ধোঁয়াহীন চুলার প্রবর্তন করা প্রভৃতি সব কিছুর সঙ্গে যুক্ত থাকে গ্রাম পঞ্চায়েত। শিশু বিকাশ কর্মসূচিতে আই.সি.ডি.এস গর্ভবতী নারী, প্রসূতি মা এবং ৬ মাস থেকে ৬ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর পরিপূরক পুষ্টি, প্রতিষেধক টিকা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা প্রভৃতি বিষয়ের দিকে লক্ষ রাখে। সর্বোপরি জন্ম নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে তত্ত্বাবধান করাও তাদের কাজের মধ্যে পড়ে। এসবের ফলে গ্রামের নারীরা কিছুটা হলো সচেতন হয়েছেন।

       পরিবারের স্বাস্থ্যরক্ষার সাথে বিশেষভাবে জড়িত আছে উপযুক্ত শৌচাগারের ব্যবস্থা। পরিবারের স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে দরিদ্র পরিবারে স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার ও ধোঁয়াহীন চুলা বসানোর কর্মসূচি রয়েছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সম্বন্ধে সচেতনতার অভাব এখনও প্রকট। তারা এর অর্থ ও প্রয়োজনীয়তা বোঝে না। তাই দেখা যায় যে সব শৌচাগারগুলি তাদের দেওয়া হয় সেগুলি তারা নষ্ট করে দেয়। আবার অনেক সময় এই শৌচাগারগুলিকে স্টোর রুম হিসাবে ব্যবহার করে সেখানে তারা শুকানো জ্বালানি কাঠ, তাদের ঋতুস্রাবে ব্যবহৃত কাপড়ের প্যাডগুলি শুকাতে দেওয়া, সেগুলিকে সেখানে রাখা ইত্যাদি কাজে ব্যবহৃত করে থাকে।

       জাতিসংঘের মতে ২.৫ বিলিয়ন লোক তাদের বাড়িতে ব্যক্তিগত শৌচাগার থাকা সত্ত্বেও যথাযত স্যানিটেশন এর অ্যাক্সেস নেই। পুরুষরা শৌচাগারের বাইরে খোলা জায়গায় সাবধানে মলমূত্র ত্যাগ করতে সক্ষম। কিন্তু সাংস্কৃতিক নিয়মাবলী ও শারীরবৃত্তীয় পার্থক্যের কারণে মহিলারা তা করতে অক্ষম। তার জন্য তাদের অন্ধকার নেমে আসার অপেক্ষা করতে হয়।

       উগান্ডায় ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্শ প্রোগ্রামে অফিসার লিজি ম্যাক্রে গারভিন বলেছিলেন “সারা বিশ্বে নারীরা মৌলিক স্যানিটেশন এবং নিরাপদ শৌচাগার ও দূষণমুক্ত পর্যাপ্ত জলের অ্যাক্সেস ছাড়াই নিজেদের পরিষ্কার রাখতে সংগ্রাম করে, বিশেষ করে ঋতুস্রাবের সময়। এই ঋতুস্রাবের জন্য বহু সংখ্যক মেয়েদের শিক্ষার সমাপ্তি হতে পারে কারণ তাদের বিদ্যালয়ে প্রাথমিকে মহিলা স্বাস্থ্যবিধি বা স্যানিটেশন সংস্থান নেই।” গ্রামের মহিলাদের জন্য গারভিন বলেছিলেন, “প্রস্রাব করার সময় বা মল ত্যাগ করার সময় গোপনীয়তার অভাব রয়েছে। তাই বহু সংখ্যক গ্রামের মহিলারা শৌচাগার ছাড়াই বাইরে অন্ধকার হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে যা তাদের আক্রমণের সম্মুখীন করে।” আবার পুরুষদের সাথে পাবলিক টয়লেট বা শৌচাগার ভাগ করে নেওয়ায়  মহিলাদের হিংস্রতার এবং যৌন নিপীড়নের বড় ঝুঁকির মধ্যে রাখে। বড়ো বড়ো শহরে এমনকি বলা যেতে পারে শ্রীলঙ্কার সুনামি শরণার্থী শিবির থেকে শুরু করে যে কোনো দেশের বস্তি পর্যন্ত বেশিরভাগ উন্নয়নশীল বিশ্বের প্রতি দিনের প্রতিবেদনগুলিতে পাওয়া যায় মহিলাদের ধর্ষণ বা লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনা। যে পাবলিক সুবিধাগুলি তারা ব্যবহার করে সেই পাবলিক সুবিধাগুলি যে সুরক্ষিত নয় সেগুলো তুলে ধরা হয়। খোলা মলত্যাগ বিপদ ডেকে আনে ভারত, ব্রাজিল, শ্রীলঙ্কা, কেনিয়া, ফিলিপাইন এবং দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বহু দেশে। স্যানিটেশন ব্যবহারের ক্ষেত্রেও মহিলাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক হিংস্রতা নথিভুক্ত করা হয়েছে।

       পরিশেষে বলা যায় ২০২০ সালে বিশ্ব জনসংখ্যার ৫৪ শতাংশ মানুষ নিরাপদে পরিচালিত স্যানিটেশন পরিষেবা ব্যবহার করলেও বিশ্বব্যাপী অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যার বিশেষ করে মহিলাদের নিরাপদ স্যানিটেশন অ্যাক্সেস নেই। তিন বিলিয়নের বেশি সংখ্যক মহিলা হাত ধোয়ার সময় কোনো সাবান ব্যবহার করে না। গ্রামাঞ্চলের মহিলারা তো মাটির মধ্যে হাত ঘষে হাত ধুয়ে ফেলে কোনো সাবান ব্যবহার না করে। বিশেষ করে মলত্যাগ, ঋতুস্রাবের কাপড়ের প্যাডগুলিও তারা সাবান দিয়ে ধুয়ে ঠিক মতো পরিষ্কার করে সূর্যের আলোতে শুকাতে দেয় না। এরজন্য মহিলাদের বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মহিলাদের মাসিক হাইজিন ম্যানেজমেন্ট (MHM) প্রশিক্ষণ দিতে হবে। মহিলাদের জন্য নিরাপদ শৌচাগার ব্যবস্থা করতে হবে এমনকি পাবলিক স্পেশেও। দেখা যায় ট্রেন বা বাসস্ট্যাণ্ড বা বাজারে কর্মক্ষেত্রে, স্কুল কলেজে যে সব শৌচাগারগুলি থাকে সেগুলিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় দরজা থাকলেও তা ঠিকভাবে লাগানো যায় না। আবার অনেক সময় জলও থাকে না তার ফলে বেশিরভাগ মহিলারা সেগুলো ব্যবহার করতে পারে না। তাই এই সমস্ত শৌচাগারগুলিকে মহিলারা যাতে নিয়মিত ব্যবহার করতে পারে নিরাপদে সেই ভাবে স্যানিটেশনযুক্ত সুবিধা প্রদান করতে হবে। সেখানে স্যানিটারি প্যাড ব্যবহৃত, আবার ব্যবহৃত প্যাড ফেলার নির্দিষ্ট ডাস্টবিন, পর্যাপ্ত জল, সাবান ইত্যাদি ব্যবস্থা প্রধানত থাকতে হবে। কারণ স্যানিটেশনের জন্য বিশুদ্ধ জল অত্যাবশ্যক। এটি ছাড়া শৌচাগারে হাত সঠিকভাবে পরিষ্কার করা য়ায় না। MHM প্রশিক্ষণও মহিলাদের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঋতুস্রাব চক্রের জন্য লজ্জার সম্মুখীন হওয়া মেয়েরা, যারা তাদের পিরিয়ডের সময় কীভাবে নিজেদের যত্ন নেওয়া যায় সে সম্পর্কে জানে না তারা বড় সমস্যার সম্মুখীন হয়। সর্বত্র মহিলাদের জন্য স্যানিটেশন সংকট সমাধানের অর্থ হল মাসিক বা ঋতুচক্র সম্পর্কে আখ্যান পরিবর্তন করা। ২০১৮ সালে ভারত সরকার তার ‘উজ্জ্বলা স্যানিটারি ন্যাপকিন’ উদ্যোগ চালু করেছিল। যার অধীনে মহিলারা কম দামের স্যানিটারি প্যাডের অ্যাক্সেস পেত। স্কুলগামী মেয়েদের বিনামূল্যে স্যানিটারি প্যাড দেওয়ার জন্য স্কুলে ভেন্ডিং মেশিন বসানো হয়েছিল। কিন্তু দেশব্যাপী লকডাউনের জন্য এই জাতীয় বিদ্যালয়গুলি ক্রমাগত বন্ধ থাকার ফলে সেই মেশিনগুলির সুবিধাও বন্ধ হয়ে গেছে। এই স্কুলগুলিতে আর সেই সুবিধা না থাকার কারণে স্কুলগুলিতে ঋতুস্রাবের সময় মেয়েদের অনুপস্থিতির হার বেশি লক্ষ্য করা যায়। এর ফলে পুওর স্যানিটেশন সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নকে হ্রাস করে। পুওর স্যানিটেশন কলেরা এবং আমাশয়, টাইফয়েড, অন্ত্রের কৃমি সংক্রমণ, ডায়রিয়াজনিত রোগের সংক্রমের সাথে যুক্ত। তাই স্যানিটেশন ব্যবস্থাকে উন্নত করতে হবে। মেয়েদের স্কুলে উপস্থিতি বিশেষ করে আলাদা স্যানিটারি সুবিধার ব্যবস্থার দ্বারা বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয় শহর ও গ্রামাঞ্চলের প্রতিটি শৌচাগারে স্যানিটারি প্যাডের ভেন্ডিং মেশিন বসানো উচিৎ। বিশেষ করে পাবলিক স্পেসগুলিতে। যাতে করে হঠাৎ কোনো মহিলার  ঋতুস্রাব হলে তারা যাতে সেগুলি ব্যবহার করতে পারে নিরাপদে। একই সাথে এইসব বিক্রিত স্যানিটারি প্যাডগুলির দাম কমানো উচিত যাতে নিম্ন ও মধ্যমবিত্ত পরিবারের মেয়েরা সেগুলি ক্রয় করতে পারে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মহিলারা চল্লিশ টাকা দিয়ে প্যাড কেনার পরিবর্তে কাপড়ের প্যাড ব্যবহার করাটাকেই বেশী গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

       WSS এ লিঙ্গ মূলধারার একটি ইচ্ছাকৃত কৌশলের আর্থসামাজিক সুবিধা রয়েছে। WSS এর সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীরা খুব কম জড়িত। জল এবং স্যানিটেশন বিনিয়োগ সংক্রান্ত পরিকল্পনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে পুরুষদের প্রাধান্য বেশি লক্ষ্য করা যায়। যার থেকে বোঝা যাচ্ছে যে মহিলাদের ব্যবহারিক ও কৌশলগত চাহিদাগুলিকে সুরাহা করা হয় না। স্যানিটেশন সুবিধার বিধান, নকশা এবং অবস্থানে মহিলাদের প্রয়োজনগুলি খুব কমই সমাধান করা হয়, কারণ সামাজিক বাধা এবং বৈষম্যমূলক অনুশীলন অথবা আইনগুলি প্রায়শই স্যানিটেশন সুবিধা, স্যানিটেশন প্রোগ্রাম এবং প্রকল্পগুলির পরিকল্পনা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে মহিলাদের অংশগ্রহণকে সীমাবদ্ধ করে (GWA ২০০৬) স্যানিটেশন সেক্টরের ব্যবস্থাপনাকে সাধারণত একটি প্রযুক্তির ডোমেইন হিসাবে দেখা হয়। এই সেক্টরে পুরুষের আধিপত্যের একটি মূল কারণ প্রযুক্তিবিদ, নির্মাণকর্মী এবং প্রকৌশলীরা প্রধানত পুরুষ। তাই স্যানিটেশন কর্মসূচিতে পুরুষ ও মহিলা উভয়কেই সম্পূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে প্যাডম্যান, টয়লেট প্রভৃতি সিনেমাতে যদিও ঋতুস্রাবে মেয়েদের কাপড়ের প্যাড ব্যবহারে দাগ লেগে যাওয়ার সমস্যা এবং মেয়েদের বাইরে মলত্যাগ করলে যৌন নির্যাতনের যে শিকার হতে হয় সেগুলি দেখানো হয়েছে ঠিকই তবে এই সব সিনেমাগুলিই বা সপরিবারে কতজন দেখেছেন? দেখে তাদের মধ্যে কী কোন সচেতনতার সৃষ্টি হয়েছে? এ আরেক প্রশ্ন হলেও সদর্থক দিক থেকে বলা যেতে পারে যদি কয়েকটি গ্রামের কিছু সংখ্যক ব্যক্তির মনেও এই সিনেমাগুলি দাগ কেটে থাকে তবুও হয়তো বলা যেতে পারে কিছুটা হলেও লিঙ্গ সচেতনতা এবং স্যানিটেশন ব্যাপারে যে উদ্যোগ নিয়ে সিনেমাগুলি করা হয়েছিল তা সফল হয়েছে।

মাসিকের স্বাস্থ্যবিধি শিক্ষা ভারতে নিষিদ্ধ। গ্রামাঞ্চলে মহিলাদের স্যানিটারি প্যাড এর জন্য হয় পুরুষদের বা বয়স্ক মহিলাদের উপর নির্ভর করতে হয়। এমনকি প্যাডের জন্য দোকানে গিয়েও লোকজন থাকলে লিখে দিয়ে সেটা কিনতে হয় অনেক সময়। আবার অনেক সময় পুরুষরাও সেটা কিনতে চায় না। দোকানদার আবার প্যাড এর প্যাকেটটি কাগজে প্যাক করে দেন। যাতে অন্য কেউ তা দেখতে না পায়। এই ধারণা পরিবর্তন করা প্রথম প্রয়োজন। ঋতুস্রাব কোনো লজ্জাদায়ক বা অশুভের সংকেত নয়। নারীত্বের প্রথম অভিজ্ঞতা। তাই স্কুলে মেয়েদের জন্য ঋতুস্রাব হাইজিন ম্যানেজমেন্ট ট্রেনিং এবং হাইজিন প্রোডাক্ট দরকার। কমিউনিটিতে মহিলাদের জন্য মাসিক হাইজিন ম্যানেজমেন্টের পাঠের মাধ্যমে মহিলাদের জীবনের এই খুব স্বাভাবিক, স্বাস্থ্যকর অংশটি পরিচালনা করলে তারা আত্মবিশ্বাসী উঠবে। একই সাথে পুরুষদের ঋতুস্রাব সম্পর্কে অর্থাৎ সমস্ত জায়গাতে এই বিষয়ে নানান সচেতনতা প্রদান করার জন্য, স্যানিটারি সচেতনতা ক্যাম্পের ব্যবস্থা করতে হবে। পরিবারে এই সমস্ত বিষয়গুলি খোলাখুলি আলোচনা করলে ছেলেমেয়েদের মধ্যে ঋতুস্রাব নিয়ে কুসংস্কার দূর হবে। শহর ও গ্রামাঞ্চলে, স্ত্রী পুরুষ নির্বিশেষে সর্বত্র স্যানিটেশন জনিত সমস্যার সমাধান ঘটবে। প্রত্যেকেই বিশেষ করে নারীরা তাদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি প্রভৃতি সম্পর্কে সচেতনতা লাভ করবে এই আশাই করা যায়।

 

 

গ্রন্থপঞ্জী

চক্রবর্তী, বাসবী। ২০১১। নারী পৃথিবী : বহুস্বর। কলকাতা : উর্বী প্রকাশন।

চট্টোপাধ্যায়, ড. পার্থ। ২০১৩। কেমন আছো নারী ? কলকাতা : দে’জ পাবলিশিং।

চন্দ, পুলক। ২০০৮। নারী বিশ্ব। কলকাতা : গাংচিল।

বাগচী, যশোধরা। ২০১২। নারী ও নারী সমস্যা। কলকাতা : অনুস্টুপ।

বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্যাণী। ২০২০। নারীরা আজ যেখানে দাঁড়িয়ে। কলকাতা : গ্রন্থমিত্র।

বসু, রাজশ্রী ও বাসবী চক্রবর্তী। ২০১৬। প্রসঙ্গ মানবীবিদ্যা। কলকাতা : উর্বী প্রকাশন।

সিংহ, কঙ্কর। ২০১৪। সিমোন দ্য বোভোয়ার। দ্বিতীয় লিঙ্গ। কলকাতা : র‌্যাডিক্যাল।

হান্নান, সি. এবং অ্যান্ডারসন, আই. (২০০২) পরিবেশগত স্যানিটেশন সম্পর্কে লিঙ্গগত দৃষ্টিভঙ্গি।

এনভায়রনমেন্টাল স্যানিটেশন (২০০৫)। জীবিকা এবং লিঙ্গ। শহুরে দরিদ্রদের মধ্যে স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যবিধি এবং জল পরিষেবা। স্যানিটেশন ইউনিট। নাইরোবি।

https://www.unesco.org/new/en/natural-বিজ্ঞান/পরিবেশ/জল/wwap/water-and-gender/।

শর্মা, এস. (২০০৫)। মহিলারা ঋতুস্রাবের শাসনকে জানায়। বিবিস খবর, doi: http://news.bbc.co.uk/2/hi/South-asia/4250506.stm

লেখক : অধ্যাপক, প্রাবন্ধিক 

ছবি : সংগৃহীত 

0 Comments

Post Comment