জীবাশ্মবিদ মেরি এ্যানিং

  • 03 May, 2021
  • 0 Comment(s)
  • 634 view(s)
  • লিখেছেন : অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
মেরি এ্যানিং। একজন জীবাশ্মবিদ, যাঁর আবিষ্কারকে স্বীকৃতি দিতে সেকালের ক্ষমতাসীনেরা অনেকেই অস্বীকার করেছিলেন। নিজেদের খ্যাতির প্রয়োজনে তাঁরা মেরি এ্যানিংয়ের আবিষ্কারগুলিকে ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু ইতিহাস তাঁকে ভুলতে দেয়নি। নারীর বিজ্ঞানচর্চার বিষয়ে ধারাবাহিক (পর্ব ১৫)

তিনি বলেছিলেন, “The world has used me so unkindly that, I fear it has made me suspicious of everyone” সন্দেহ বড় কষ্টের, মানবতার প্রতি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলাটাও তাই। এই আক্ষেপ কিন্তু কেবল একজন নারীর নয়। এই আক্ষেপ একজন জীবাশ্মবিদের, যাঁর আবিষ্কারকে স্বীকৃতি দিতেও সেকালের ক্ষমতাসীনেরা অনেকেই অস্বীকার করেছিলেন। নিজেদের খ্যাতির প্রয়োজনে তাঁরা মেরি এ্যানিংয়ের আবিষ্কারগুলিকে ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু ইতিহাস মেরি এ্যানিংকে ভুলতে দেয়নি। তিনি ছিলেন, আজও রয়েছেন।

গল্পের মতোই তাঁর জীবন। ছোটবেলায় একবার প্রতিবেশী তিন মহিলার কোলে চেপে বাড়ি থেকে কিছুদূরে ঘুরতে গিয়েছিলেন ছোট্ট মেরি এ্যানিং। তাঁর বয়স তখন পনেরো মাস। পথে আকস্মিক বজ্রাঘাতে তিন মহিলারই মৃত্যু হয়, আশ্চর্যজনক ভাবে কেবল মেরি বেঁচে যান। এর পরবর্তীতেও আরও একবার, ঠিক একই রকমভাবে - দৈবক্রমে তিনি তাঁর জীবন ফিরে পেয়েছিলেন। সে খবরে পরে আসবো। আগে তাঁর জন্মস্থানের বিষয়ে দু’চারকথা বলা দরকার। ২১ মে, ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের ডরসেট কাউন্টিতে জন্মগ্রহণ করেন মেরি এ্যানিং। শহরের নাম লাইম রেজিস। বাড়িটা প্রায় সমুদ্রের উপরেই বলা চলে। অবস্থা এমনই হয় একেকসময়, যে ঝড় এলে এ্যানিং পরিবার বাড়ির একতলার পাট উঠিয়ে নিয়ে দোতলায় আশ্রয় নিতে বাধ্য হতো। মেরি এ্যনিংয়ের ছোট ভাইবোনেদের মধ্যে অনেকেই শৈশবাবস্থাতেই মারা গিয়েছিলেন। তখনকার ইংল্যান্ডে যে চূড়ান্ত অস্বাস্থ্যকর এবং ঘিঞ্জি পরিবেশের মধ্যে শিশুদেরকে বড় হয়ে উঠতে হতো, তার কারণে সেইসময় ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া শিশুদের প্রায় অর্ধেকই অকালে মারা যেতো। মেরি এবং তাঁর দাদা জোসেফ শেষ অবধি সকলের মধ্যে বেঁচে ছিলেন। মেরির পরিবার চার্চ অব ইংল্যান্ডের পরিবর্তে ‘ডিসেন্টার’ গির্জাগোষ্ঠীর অনুগামী ছিলেন। এই গোষ্ঠী, চার্চ অব ইংল্যান্ডের বিষম রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে সামান্য সামান্য করে হলেও সংস্কারপন্থী ভাবধারা আনার চেষ্টা করতো। এই গির্জারই এক যাজক, এবং এ্যানিং পরিবারের ঘনিষ্ঠ প্যাস্তর রেভারেন্ড জেমস হুইটন তাঁর লেখা একটি প্রবন্ধে সরাসরি পৃথিবীর বিকাশ সম্পর্কে জানার জন্য অনুগামী ডিসেন্টারদের, ‘ভূবিদ্যা’ বা জিওলজি নিয়ে পড়াশোনা করতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। মেরি এ্যানিংয়ের ভবিষ্যতও বোধহয় সেই দিনটিতেই অদৃষ্টের বিধিলিপিতে লিখিত হয়ে গিয়েছিল। ক্রমশ তিনিই হয়ে উঠেছিলেন তাঁর সময়ে ইউরোপের সবচেয়ে পরিচিত একজন জীবাশ্মবিদ।

ডরসেট কাউন্টির সমুদ্রসৈকতগুলি তখন বিশেষ একটি কারণে বিখ্যাত ছিল। লাইম রেজিস, অথবা চারমাউথের সমুদ্রসৈকতের খাড়াই পাথুরে পাড়গুলির গায়ে তখন অদ্ভুৎ সমস্ত প্রত্নতাত্ত্বিক বস্তু পাওয়া যেতো। সমুদ্রের ঢেউয়ে খাড়াই পাড় ভেঙে পড়লেই, বেরিয়ে আসতো নানা রকমের প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীর জীবাশ্ম। সেগুলিই ছিল সমুদ্রতীরবর্তী অনেক পরিবারের জীবিকানির্বাহের উপায়। সেগুলিকে তারা আশ্চর্য বস্তু হিসেবে পর্যটকদের কাছে ভালো দামে বিক্রি করতো। এর টানেই অনেক জীবাশ্মবিদও সেই সময়ে ডরসেটের সমুদ্রসৈকতগুলিতে হানা দিতেন। বাবার কাছ থেকেই প্রথম এই ধরণের জীবাশ্ম খুঁজে বের করবার কাজে উৎসাহ পান মেরি এ্যানিং। মূলত লাইম রেজিস শহরের ব্লু লিয়াস নামের একটি খাড়াই পাড় বা ক্লিফ (Cliff)এ মেরি এ্যানিংয়েরা তাঁদের অভিযান চালাতে শুরু করেন। চুনাপাথরের স্তরে স্তরে লুকিয়ে থাকা সেই সব জীবাশ্মের একেকটির বয়স ছিল ১৯ থেকে ২১ কোটি বছর। একই সময়, ফরাসী বিপ্লবের যুদ্ধ চলছিল। পরপর যুদ্ধের কারণে ইংল্যান্ডের আর্থিক অবস্থাও ভালো ছিল না। এভাবে জীবাশ্ম খুঁজে বের করে, তাকে বিক্রি করতে পারলে যে আয় হতো তাতে পরিবারের দিনগুজরানের সুবিধা হতো। একারণেই এ্যানিং পরিবার জীবাশ্ম খোঁজার কাজে নেমে পড়ে। জীবাশ্ম খুঁজতে খুঁজতে মেরি এ্যানিংয়ের বুদ্ধিতে তাঁরা একটি দোকানও তৈরি করেন, ক্রমশ যে দোকানটি সারা ইউরোপে পরিচিত হয়ে উঠবে।

১৮১১ খ্রিস্টাব্দে প্রথম মেরি এ্যানিং এবং তাঁর দাদা জোসেফ, দুজনে মিলে একটি চারফুট দীর্ঘ পূর্ণবয়স্ক ইচথিওসরের মাথার খুলির অংশ আবিষ্কার করেন। কিছুদিনের মধ্যেই, মেরি নিজের উদ্যোগে ইচথিওসরটির বাকি সমস্ত কঙ্কালটিকেও উদ্ধার করতে সক্ষম হন। এটি পরবর্তীতে দুজনের হাত ঘুরে লন্ডনের একটি প্রদর্শনীতে প্রদর্শিত হয় এবং শেষমেশ ব্রিটিশ মিউজিয়ম এটিকে অধিগ্রহণ করে। ব্রিটিশ মিউজিয়ম কর্তৃপক্ষের কাছে পাওয়া, এটিই সর্বপ্রথম পূর্ণবয়স্ক ইচথিওসরের, সম্পূর্ণ একটি কঙ্কাল।

সমুদ্রের খাড়াই পাথুরে ঢালগুলিতে উঠে নেমে জীবাশ্মের খোঁজ চালানোটা সহজ ছিল না। ১৮১০ সালে এমনই একটি পাথুরে ঢাল বেয়ে নামতে গিয়ে মেরির বাবা রিচার্ড এ্যানিংয়ের মৃত্যু হয়। রিচার্ডের মৃত্যুর পর, স্থানীয় এক সহৃদয় ব্যক্তি এ্যানিং পরিবারের সমস্ত সংগৃহীত জীবাশ্মগুলির জন্য একটি নীলামের ব্যবস্থা করেন। এই সহৃদয় ব্যক্তির নাম জেমস বার্চ, যিনি লিঙ্কনশায়ারের একজন উৎসাহী জীবাশ্ম-সংগ্রাহক ছিলেন। তাঁর আমন্ত্রণে বিশিষ্ট জীবাশ্মবিদ গিডন ম্যান্টেল এই নীলামে উপস্থিত থাকেন। এই নীলাম থেকে প্রাপ্ত অর্থের ফলে এ্যানিং পরিবার কিছুটা হলেও আর্থিক সচ্ছলতার মুখ দেখতে পায়। শোনা যায় যে তিনদিনের এই নীলামে প্যারিস এবং ভিয়েনা থেকে আগত জীবাশ্মবিদেরাও অংশ নিয়েছিলেন এবং এই নীলামের মাধ্যমেই মেরি এ্যানিং, ও এ্যানিং পরিবার ইউরোপের জীবাশ্মবিদদের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন।

১০ ডিসেম্বর, ১৮২৩ – মেরি এ্যানিং সর্বপ্রথম একটি সম্পূর্ণ প্লেসিওসরাসের জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন। ১৮২৮ সালে তিনি খুঁজে পান একটি পূর্ণাঙ্গ টেরোসরের জীবাশ্ম। ব্রিটেনে খুঁজে পাওয়া, উড়তে সক্ষম এমন প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীদের মধ্যে প্রথম এই টেরোসর, যা আবিষ্কারের সম্পূর্ণ কৃতিত্বই এই মেরি এ্যানিংয়ের উপরে বর্তায়। ১৮২৯ সালে তিনি আবিষ্কার করেন স্কোয়ালোরাজা মাছের কঙ্কাল।  টেরোসরের পূর্ণাঙ্গ জীবাশ্মটিও ব্রিটিশ মিউজিয়মে প্রদর্শিত হয়। খাতায় কলমে মেরি এ্যানিং বেশিদূর পড়াশোনা না করলেও, তিনি নিয়মিত তাঁর স্বল্প জ্ঞান নিয়েও বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ পড়তে চেষ্টা করতেন। আবিষ্কৃত জীবাশ্মগুলিকে কিভাবে বৈজ্ঞানিক উপায়ে এঁকে, সঠিক ভাবে বৈজ্ঞানিক মহলে উপস্থাপিত করা যায় সেই বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা ছিল। এছাড়াও বিভিন্ন সামুদ্রিক প্রাণীর দেহব্যবচ্ছেদ করেও, তার মাধ্যমে পুরাকালের সেই প্রাগৈতিহাসিক প্রাণীদের এ্যানাটমি বা শারীরিক বিন্যাস সম্পর্কেও তিনি একটি ধারণা তৈরি করতে চেষ্টা করতেন। আগেই আমরা দেখেছি যে, বিশেষত শীতের সময়ে সমুদ্রের খাড়াই পাড়গুলি বেয়ে বেয়ে জীবাশ্ম সংগ্রহ করাটা যে কোনও মানুষের পক্ষেই কতখানি দুঃসাধ্য কাজ। ১৮৩৩ খ্রিস্টাব্দে মেরি এ্যানিংয়ের ঠিক সামনেই বিশালাকৃতি একটি পাড়ের অংশ হঠাৎ ভেঙে পড়ে। মুহূর্তের ব্যবধানে বেঁচে যান মেরি এ্যানিং, যদিও তাঁর পোষ্য টেরিয়র কুকুরটি সেদিন চিরতরেই হারিয়ে যায়। পরে এক বন্ধুকে চিঠি লিখতে গিয়ে মেরি নিজেই এই কথার উল্লেখ করেছিলেন।

লাইম রেজিসে এ্যানিং পরিবারের দোকানে ক্রমশ ভিড় জমাতে থাকেন বিশিষ্ট জীবাশ্মবিদেরা। লন্ডনের কাগজে এ্যানিং সম্পর্কে লেখা হয়, “দেশ অথবা মহাদেশের যে কোনও বিশেষজ্ঞের সমতুল অভিজ্ঞতা ও জ্ঞানের অধিকারী এই মেরি এ্যানিং।” ভূতাত্ত্বিক জর্জ উইলিয়াম ফেদারস্টোন থেকে শুরু করে রাজা দ্বিতীয় ফ্রেডরিক অগাস্টাস, সকলেই মেরি এ্যানিংয়ের ‘এ্যানিং ফসিল স্টোর’-এ এসে উপস্থিত হন। ১৮৩৯ খ্রিস্টাব্দে ‘ম্যাগাজিন অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি’তে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধের প্রসঙ্গে মেরি এ্যানিং পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে একটি চিঠি লেখেন। প্রবন্ধটিতে প্রাগৈতিহাসিক হাঙর ‘হাইবোডাস’-এর একটি সদ্যপ্রাপ্ত কঙ্কালকে একটি নতুন ধরনের জীবগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছিল। কিন্তু নিজের চিঠিতে মেরি এ্যানিং জানান যে প্রাগৈতিহাসিক এই বিশেষ ধরনের হাঙরটির অস্তিত্ব সম্পর্কে তিনি নিজেই বহুবছর আগে থাকতে অবগত ছিলেন, এমনকি সেই প্রজাতির হাঙরের কিছু জীবাশ্মের অংশও তাঁর কাছে রয়েছে। চিঠিটি ‘ম্যাগাজিন অব ন্যাচারাল হিস্ট্রি’তে প্রকাশিত হয়। জীবদ্দশায় প্রকাশিত মেরি এ্যানিংয়ের এটিই একমাত্র বৈজ্ঞানিক রচনা।

কিন্তু এত কিছু সত্ত্বেও বিজ্ঞানী মহলে তেমনটা সমাদর মেলেনি এ্যানিংয়ের। অনেকেই তাঁর আবিষ্কার, তাঁর পর্যবেক্ষণকে ব্যবহার করেছেন, অথচ সেই সমস্ত ফলাফল প্রকাশের সময় মেরি এ্যানিংকে সামান্যতম স্বীকৃতিটুকুও দেবার প্রয়োজন মনে করেননি। একাধিক চিঠিতে এ্যানিংয়ের এই আক্ষেপ ফুটে উঠেছে। লন্ডনের জিওলজিকাল সোসাইটিতেও তখন মেয়েদের সদস্যপদ দেওয়া হতো না। যদিও জীবাশ্মবিদ হেনরি দো লা বেক, অক্সফোর্ডের অধ্যাপক উইলিয়াম বাকল্যান্ড প্রমুখ মানুষেরা নিয়মিত মেরি এ্যানিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। এই উইলিয়াম বাকল্যান্ডের উদ্দেশ্যে লেখা একটি চিঠিতেই প্রথম মেরি এ্যানিং বিজোর (bezoar) পাথর সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে উল্লেখ করেন যে, ওগুলি আসলে ইচথিওসরাস জাতীয় প্রাণীর ভ্রূণের জীবাশ্ম-অবশেষ। ২০২০ সালে এই বিশেষ চিঠিটিকে সদবি’র নিলামঘরে নিলামে তোলা হলে, সেটি এক লক্ষ পাউন্ডে বিক্রি হয়। এছাড়াও ছিলেন লুই আগাসি, মেরি এ্যানিংয়ের বন্ধু এলিজাবেথ ফিলপট, সকলের সাহচর্য্যে লাইম রেজিসের অখ্যাত অঞ্চল থেকে তৎকালীন ইউরোপের জীবাশ্মবিদ্যার ইতিহাসে অন্যতম এক পরিচিত নাম হয়ে ওঠেন মেরি এ্যানিং।

১৮৩০ সালে, মেরি এ্যানিংয়ের আর্থিক অবস্থা যখন কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তখন জর্জ সার্ফ বলে এক চিত্রকর, জীবাশ্মবিদ হেনরি দো লা বেকের পরামর্শে মেরি এ্যানিংয়ের যাবতীয় সমস্ত আবিষ্কৃত জীবাশ্মের উপরে ভিত্তি করে একটি প্রাগৈতিহাসিক দৃশ্য অঙ্কনের চেষ্টা করেন। লিথোগ্রাফের উপরে অঙ্কিত এই চিত্রটির নাম দেওয়া হয় ‘দুরিয়া এ্যান্টিকর’, এই চিত্রে মেরি এ্যানিংয়ের আবিষ্কৃত জীবাশ্মগুলির বাস্তব চেহারা কেমন ছিল তারই একটি শৈল্পিক রূপ ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। এই ছবিটির শুধু যে অনেকগুলি কপিই কেবল বিক্রি হয়েছিল তা নয়, মেরি এ্যানিং যে কতখানি নৈপুণ্যের সঙ্গে একটি একটি করে জীবাশ্ম আবিষ্কারের মাধ্যমে প্রায় গোটা একটি প্রাগৈতিহাসিক দৃশ্যপটকে আমাদের কল্পনায় ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন, এটি তারই প্রমাণ। ৪৭ বছর বয়সে, ১৮৪৭ খ্রিস্টাব্দে ডরসেটেই প্রয়াত হন মেরি।

এমন সব অবদানের অধিকারী মেরি এ্যানিংকেও লিখতে হয়েছিল “The world has used me so unkindly that, I fear it has made me suspicious of everyone”। নারীমুক্তির সংগ্রাম বা সমাজমুক্তির সংগ্রাম আদতে চিরকালীন। একেকটি করে এমন ইতিহাসকে যখন উলটিয়ে দেখি, ক্ষোভের চেয়েও বেশী করে তখন জন্ম নেয় অনুপ্রেরণা, অথবা আত্মবিশ্বাস। কেবল মনে মনে উচ্চারণ করি তখন, “আকাশের মালিকানা নিয়ে যত ভাগাভাগি, তা একদিন শেষ হবেই ...”

সূত্রঃ

[১] দেবোরা ক্যাডবেরি, ‘দ্য ডাইনোসর হান্টার্সঃ এ ট্রু স্টোরি অব সায়েন্টিফিক রাইভ্যালরি এ্যান্ড দ্য ডিসকভারি অব দ্য প্রিহিস্টোরিক ওয়ার্ল্ড’, ফোর্থ এস্টেট, ২০০০

[২] উইলিয়াম কনিবেয়ার, ‘অন দ্য ডিসকভারি অব এ্যান অলমোস্ট পারফেক্ট স্কেলেটন অব দ্য প্লেসিওসরাস’, জিওলজিক্যাল সোসাইটি অব লন্ডন, ১৮২৪

[৩] উইলিয়াম কনিবেয়ার ও হেনরি দো লা বেক, ‘নোটিশ অব দ্য ডিসকভারি অব এ নিউ ফসিল এ্যানিমাল, ফর্মিং এ লিংক বিটুইন দ্য ইচথিওসরাস এ্যান্ড দ্য ক্রোকোডাইল’, জিওলজিক্যাল সোসাইটি অব লন্ডন, ১৮২১

[৪] চার্লস ডিকেন্স, ‘মেরি এ্যানিং, দ্য ফসিল ফাইন্ডার’, ১৮৬৫

[৫] শেলী এমলিং, ‘দ্য ফসিল হান্টারঃ ডাইনোসরস, এভল্যুশন এ্যান্ড দ্য উওম্যান হুজ ডিসকভারিজ চেঞ্জড দ্য ওয়ার্ল্ড’, পালগ্রেভ ম্যাকমিলান, ২০০৯

মেরি এ্যানিংয়ের ছবি : সংগৃহীত

লেখক : প্রযুক্তিবিদ্যার গবেষক, প্রাবন্ধিক

0 Comments

Post Comment