- 12 December, 2022
- 0 Comment(s)
- 195 view(s)
- লিখেছেন : শতরূপা সিংহ
‘তিন নম্বর লাইন দিয়ে থ্রু ট্রেন যাবে, যাত্রীরা অনুগ্রহ করে নিরাপদ দূরত্বে সরে দাঁড়ান।’
দূরের প্ল্যাটফর্ম থেকে মৃদুস্বরে ঘোষণাটি এক নাগাড়ে শোনা যাচ্ছে। রেল লাইনের এই জায়গাটিতে
কোন আলোর ব্যবস্থা নেই। রাতের সেই মিশকালো অন্ধকারের মধ্যে লাইনের ধারে দাঁড়িয়ে একজন লোক হঠাৎই ভালো করে লক্ষ্য করার পর দেখতে পেলেন একটি অল্পবয়সী মেয়ে ধীর পায়ে তিন নম্বর লাইনের দিকে এগিয়ে চলেছে। তিনি হাত নেড়ে জোরে চেঁচিয়ে মেয়েটিকে যথাসম্ভব সাবধান করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলেন। তার চিৎকার শুনে আশেপাশের থেকে আরও কিছু মানুষ এসে জড়ো হল। তবে তাদের কোলাহল মেয়েটির কান পর্যন্ত পৌঁছাল না। নিমেষের মধ্যে তাদের কোলাহলকে ছাপিয়ে ভেসে এল ট্রেনের তীক্ষ্ণ সাইরেনের আওয়াজ। ঘন অন্ধকার চিরে মৃত্যুর ছায়ার মত ট্রেনের জোরালো আলো এসে পড়লো মেয়েটির সমগ্র দেহের উপর। ট্রেন এখন আরও অনেক কাছে। মেয়েটি মূর্তিবৎ লাইনের ওপর দাঁড়িয়ে রইল। সাইরেনের ঘন ঘন বেজে ওঠার আওয়াজে কান পাতা দায়। আতঙ্কে লাইনের ওপারে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলোর হৃৎষ্পন্দন আপনা হতেই স্তব্ধ হয়ে গেল। ট্রেনটি ঝাঁ করে ছুটে এসে মেয়েটিকে দুমড়ে মুচড়ে পিষে ফেলতে যাবে, ঠিক সেই সময় পিছনের অন্ধকার থেকে একটা শক্ত হাত বেরিয়ে এসে মেয়েটির জামার কলার ধরে মারল এক হেঁচকা
টান আর সঙ্গে সঙ্গে মেয়েটি ছিটকে পড়ল একেবারে লাইনের বাইরে। তার চোখের সামনে দিয়ে যেন একরাশ বিরক্তির সঙ্গে প্রচুর ধুলো, বালি আর প্লাস্টিক উড়িয়ে নিয়ে এক্সপ্রেস ট্রেন তীক্ষ্ণ সাইরেনের
সঙ্গে চাকায় বিভৎস শব্দ তুলে ছুটে গেল দূরের স্টেশনের দিকে। ট্রেনের শেষ কামরা টি নির্বিঘ্নে
পেরিয়ে যাওয়ার পর সকলে এক প্রকান্ড হাঁপ ছেড়ে বাঁচল। মেয়েটিকে প্রায় মুহ্যমান অবস্থায় তারা
ধরাধরি করে এনে স্টেশন সংলগ্ন একটা চায়ের দোকানের বেঞ্চের ওপর বসাল। জল খেয়ে ও বেশ
খানিকটা জল চোখে-মুখে দিয়ে কিছুটা সম্বিত ফিরে পাওয়ার পর মেয়েটি চোখ মেলে দেখল অনেক মানুষ তাকে ঘিরে রয়েছে। তাদের গুঞ্জনের মধ্যে থেকে ভাঙ্গা ভাঙ্গা দু-একটি কথা তার কানে এল, ‘এইটুকু বয়সে মরার এত শখ কেন বাপু?’
‘এই লোকটি আজ যদি তোমায় না বাঁচাত তাহলে যে কী কাণ্ড হত!’
মেয়েটি দেখল তার সামনে দাঁড়িয়ে একটি লোক গম্ভীরভাবে ওকে আপাদমস্তক পরীক্ষা করছে। লোকটির বয়স বছর পঞ্চাশেক হবে, পরনে ধূসর পাঞ্জাবী, কালো পাজামা, মাথার চুল কোঁকড়ানো, গায়ের রঙ শ্যামলা, মুখের দাড়ি-গোঁফ কামানো, চোখে কালো ফ্রেমের পুরু চশমার কাঁচের ভিতর দিয়ে এক অনমনীয় দৃষ্টির আভাস পাওয়া যায়। মেয়েটির আর এ বিষয়ে কোন সন্দেহ রইল না যে ইনিই শেষ মুহূর্তে তাকে টেনে এনে লাইন চ্যূত করে আসন্ন মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছেন। মেয়েটি অনেকটা সুস্থির হয়ে উঠলে সকলেই যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে চলে যাওয়ার পরও লোকটিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে মেয়েটি জিজ্ঞাসা করল, ‘আমাকে কেন বাঁচালেন?’
চোখের সামনে চশমাটি একবার তুলে নিয়ে লোকটি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমার নাম কী?’
মেয়েটি সংক্ষেপে বলল, ‘চারুমতি হালদার।’
- ‘কোথায় থাক ?’
- ‘কালীপ্রসাদ নগর।’
- ‘বাড়িতে কেউ নেই?’
মেয়েটি উদাস ভাবে উত্তর দিল, ‘আছে তো, মা, বাবা, ভাই।’
- ‘তোমাকে দেখে মনে হয় বয়স সাতাশ-আঠাশের বেশি হবে না। এই বয়সে তুমি যে মরতে যাচ্ছিলে,
বাড়ির লোকেদের কথা একবারও চিন্তা করলে না?’
চারুমতি লোকটির দিকে একবার চোখ তুলে দেখল। মনের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠে তার চোখের কোণে জল জমতে শুরু করেছে। কিছুটা নিজের মনেই সে বলে চলল, ‘নিজের আপন মানুষগুলোর কাছে বার বার অপমানিত হওয়ার পর আর কারো কাছ থেকে কিছু আশা করি না।’
এই বলে চারুমতি মুখ ফিরিয়ে নিল। লোকটি একটু অবাক হয়ে বললেন, ‘পরিবারের লোকেদের ওপর এত অভিমান করা ভালো নয়। তারা তোমার মঙ্গলের কথা ভেবেই হয়ত কিছু কথা খারাপ ভাবে শুনিয়ে থাকতে পারেন, তাকে এতটা বাজে ভাবে নেওয়া তোমার উচিৎ হয়নি।’
চারুমতি ঠোঁটে ম্লান হাসি ফুটিয়ে বলল, ‘আমার জীবনের একটা ট্র্যাজিক গল্প আছে। তা অবশ্য এমন কিছু মূল্যবান নয়। তবে আপনার হাতে যদি অনেক সময় থাকে তাহলে আমি তা শোনাতে পারি।’
লোকটি ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালেন। চারুমতি তার স্মৃতি হাতড়ে বলতে শুরু করল, ‘আমাদের পরিবারে বাবা একাই রোজগেরে ছিলেন। বাবা কষ্ট করে একটা ছোট মুদিখানার দোকান থেকে যা আয় করতেন তা দিয়েই আমাদের সবার পেট ভরে যেত। তবে বাবা আমার আর ভাইয়ের পড়াশোনা নিয়ে ভীষণ উৎসাহী ছিলেন। যখন যা লাগত খাতা, কলম, বই, টিউশন সব হাতে পেয়ে যেতাম। আমি স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে কলেজে ইংরাজিতে অনার্স নিয়ে পড়লাম। তারপর মাস্টার্সও শেষ করলাম। তারপর সব পথ হারিয়ে গেল। চাকরির পরীক্ষায় বসতে বসতে মাঝখান থেকে কয়েকটা বছর কেটে গেল। মাস দুয়েক আগে বাবার একটা স্ট্রোক হয়। অনেক খরচা-পাতি করে কলকাতায় ভাল ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা করার পর বাবা কিছুটা সুস্থ হলেও আগের মত কাজ করার ক্ষমতা আর ফিরে পেলেন না। তিনি এখন বেশির ভাগ সময়ই শয্যাশায়ী থাকেন। ফলে সংসারে আয় কমলেও ব্যয় ক্রমাগত বেড়েই চলল। আমাদের অবস্থাও পড়তে শুরু করল। মা একা হাতে সব দিক সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে গেলেন। আর এদিকে আমারও চাকরির বয়স পেরিয়ে যেতে থাকল অথচ চাকরির কোন সুখবর এল না। অসহায় ভাবে মা আমার বিয়ে দিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। বাড়িতে ঘটক এল সম্বন্ধ নিয়ে। আমি মায়ের কাছে অনেক অনুনয়-বিনয় করলাম এত তাড়াতাড়ি বিয়ে না দেওয়ার জন্য তিনি আমার কোন কথা কানেই তুললেন না। শেষে বাবার কাছে যাওয়াতে তিনি বললেন, “অনেক তো চেষ্টা করলি কোন লাভ হল না। আমি তো তোর পড়াশোনায় কোন খামতি রাখিনি। কপালের লেখন কি কখন খণ্ডানো যায়? আমার ফিক্সট ডিপোজিটগুলো ভেঙ্গে
তোর মা বেশি দিন সংসারটাকে টানতে পারবে না। তাই সে যদি তোর একটা ব্যবস্থা করে দিয়ে সংসারের বোঝা কিছুটা হালকা করতে চায় তবে আমি তাতে কী করে বাধা দেব বল?” মায়ের গঞ্জনা শুনতে শুনতে গায়ের চামড়া পুরু হয়ে গেলেও বাবার চোখের কোণে সেদিন হতাশার ছাপ দেখে আমি পুরোপুরি মুষড়ে পড়লাম।’
চারুমতি এবার থামল। দূরের ছোট্ট স্টেশনটিতে একটা লোকাল ট্রেন থামার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের
কোলাহলে ভরে উঠে যেন নতুন প্রাণের সঞ্চার হল। মিনিট খানেক পরে ট্রেন চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে
সেই সকল কোলাহল স্টেশনটিকে আবার নিস্তেজ নিঃসঙ্গ করে দিয়ে দূরে মিলিয়ে গেল। চারুমতি একটা ছোট শ্বাস নিয়ে আবার বলতে শুরু করল, ‘জীবনে কখনও কারোর মনের মত হয়ে উঠতে পারিনি। সকলের কাছ থেকে পেয়েছি কেবল উপেক্ষা আর ঘৃণা। অনেক সময় রাত দুপুরে একা বিছানায় বসে চোখের জল ফেলেছি। নিজেকে তখন একজন সার্থক অকর্মণ্য ছাড়া আর কিছুই মনে হয়নি। মনের কথা কাউকে কোনোদিন ঠিক করে বোঝাতেও পারিনি। নিজেকে নির্দোষ প্রমান করার অযথা চেষ্টা করে গেছি। সব শেষে মনে হয়েছে আমি বেঁচে না থাকলেই বোধহয় সকলের মঙ্গল। প্রতিদিনকার মায়ের আক্ষেপ পূর্ণ গঞ্জনা আমার বুকে তীক্ষ্ণ শেলের মত বিঁধতো। সেই ক্ষতস্থানে সান্ত্বনার প্রলেপ লাগিয়ে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করতাম। কিন্তু আজ আর পারলাম না।’
শেষের কথা গুলো চারুর মুখে জড়িয়ে গেল। তার চোখ থেকে একবিন্দু জল গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ল। চারুর গল্প শেষ হলে লোকটি বললেন, ‘অস্থির চিত্তে মানুষ কখন কাকে কী বলে বসে তা তার নিজেরই খেয়াল থাকে না। যখন সে খেয়াল হয় তখন ক্ষমা চাওয়ার পথটিও অনেক বেশি দুর্গম ও সংকীর্ণ হয়ে যায়। মা-বাবার ওপর রাগ করে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগেই বিষম পরিস্থিতিতে তোমার একবার অন্তত ওনাদের মানসিক অবস্থাটা বুঝে দেখা উচিৎ ছিল। আজ তুমি অত্যন্ত স্বার্থপরের মত কাজ করতে যাচ্ছিলে। যাক, এখন তুমি বাড়ি ফিরে যাও আর ফিরে গিয়ে তোমার মা কে বোলো তিনি যেন আর একটা মাস অপেক্ষা করেন। তারপরেও যদি তুমি কোন চাকরির সন্ধান না পাও তবে তাঁর যা ইচ্ছা হয় তিনি করতে পারেন। সূর্যোদয়ের ঠিক আগের মুহূর্তে রাতের অন্ধকার যেমন খুব গাঢ় হয় তেমন এত দুর্যোগের পর আমার মনে হয় তোমার জন্য কোন না কোন সুখবর
ঠিক আসবেই। তবে তুমি আমার একটি অনুরোধ রাখার চেষ্টা কর, তোমার মধ্যে যে ভাবী শিক্ষক রয়েছেন তাকে কখন কোন পরিস্থিতিতেই হেরে যেতে দিও না।’ এই বলে লোকটি যাওয়ার জন্য উদ্যত হলে চারু ব্যস্ত হয়ে বলল, ‘আপনার নামটাই জিজ্ঞেস করতে ভুলে গেছি।’
- ‘সন্দীপ ভট্টাচার্য।’
নামটি বলেই লোকটি স্টেশনের ভিড়ের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেলেন।
এরপরে প্রায় দুই সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পর একদিন দুপুর বেলা চারুমতির বাড়িতে তার নামে একটা চিঠি এল। এতদিন ধরে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সকলের চোখের আড়ালে নিজেকে যথাসম্ভব গুটিয়ে নিয়ে ঘরের যে কোণাটিতে পড়ে থেকে চারুর দিন কেটে যায়, নিজের নামে চিঠি এসেছে শুনে সেই নিরিবিলি গৃহকোণটি ছেড়ে বেরিয়ে এসে সে খামটা ছিঁড়ে বের করে দেখল একটা চাকরির চিঠি! জাতীয় একটি অনুবাদক সংস্থায় দেশি- বিদেশি বিভিন্ন লেখকের উপন্যাস ইংরেজি থেকে বাংলায় অনুবাদের জন্য একটা চাকরি এসেছে চারুমতি হালদারের নামে। মাইনে মাসে দশ হাজার। চিঠির
একদম নিচে সংস্থার ম্যানেজার সন্দীপ ভট্টাচার্যের স্বাক্ষর। চারুমতির জীবনের হিসেবটা চোখের পলকে সম্পূর্ণ বদলে গেল। সেদিন বিকেলেই চাকরিতে যোগ দেওয়ার সম্মতি জানিয়ে সংস্থার নামে
চিঠি লিখে চারু ডাকে ফেলে এল। তার মৃত ইচ্ছে গুলো এহেন সুসংবাদের অমৃত স্পর্শে এতকাল পর প্রাণ ফিরে পেয়ে নড়েচড়ে উঠতে শুরু করেছে। জীবনের চাওয়া পাওয়ার সমীকরণটিকে চারু আবার নিজের মত করে নতুন ভাবে সাজাতে শুরু করল। তার ইচ্ছা হল সে আবার পড়াশোনা শুরু করবে। তার ভিতরের শিক্ষককে সে আর পিছু হটতে দেবে না। কোন অন্যায়, কোন দুর্নীতির সামনে সে আর মাথা নুয়ে যেতে দেবে না। আজ অনেক বছর পর চারুর মনের প্রকোষ্ঠ আলো করে এক রাশ আনন্দ প্রবেশ করল।
চারু চাকরি তে যোগ দেওয়ার পর এক মাস কেটে গেছে। সন্দীপ ভট্টাচার্যের হাত থেকে প্রথম মাইনে পাওয়ার পর তার মনে এক পরম তৃপ্তির অনুভূতি হল। সেদিন বাড়ি ফেরার পথে নিজের প্রথম উপার্জন থেকে চারু অনেকগুলো খাতা, পেনসিল কিনে এনে ঘরে বিছানার ওপর রাখল। চারুর মা সেগুলো দেখে গদ্গদ স্বরে বললেন, ‘ভাইয়ের জন্য এত খাতা কিনে বেশি টাকা খরচ করলি কেন? কম করে আনলেই তো হত।’
চারু চাকরি পাওয়ার পর থেকেই তার মায়ের গলার স্বর অনেক বদলে গেছে। এখন আর বিয়ে করার জন্য চারু কে পীড়াপীড়িও করেন না। চারুর বাবা এমনকি তার ছোট ভাইটিও তার প্রতি অন্তরের সবটুকু স্নেহ যেন উজাড় করে দিতে চান। এক সময় যে মেয়ের মুখ দর্শন করতেও কারোর মন চাইত না এই এক মাসের মধ্যে সে সকলের চখের মণি হয়ে উঠেছে। চারু মৃদু হেসে মাকে বলল, ‘ভাইয়ের জন্য নয় মা। স্টেশনে আমার চার জন ছাত্র-ছাত্রী জুটেছে ওদের জন্যই এনেছি। ওদের সকলেরই বয়স প্রায় বারো-তেরো বছর হবে। ওরা হয় কেউ লোকের বাড়িতে কাজ করে আর না হয় ভিক্ষা
করে। তাই স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পায় নি। স্টেশনটাই আপাতত ওদের স্থায়ী বাসস্থান। ট্রেন আসার আগে অপেক্ষা করার সময় আমাকে ওরা বেঞ্চে বসে রোজ পড়তে দেখতে পেত। পড়াশোনায়
ওদের এত আগ্রহ দেখেই ওদের লেখাপড়া শেখাবো বলে মনস্থির করি। গরীব হলে যে শিক্ষার অধিকার থাকবে না, এমন তো নয়।’
চারুর মায়ের ঠোঁট দুটো শুধু একবার কেঁপে উঠল, মুখ দিয়ে কোন কথা সরলো না। মায়ের বিষ্মিত ভাবটা কাটাতে চারু বলল, ‘আমার সঙ্গে ম্যানেজারবাবুর প্রথম সাক্ষাতে তিনি আমার মধ্যে একজন ভাবী শিক্ষককে আবিষ্কার করেছিলেন। আমি সেই শিক্ষককে একটুখানি সাহায্য করছি মাত্র। মা, ঐ বাচ্চাগুলোর মধ্যে আমি যেন নিজেকেই খুঁজে পাই। ওরা আমার নামের মধ্যে লুকিয়ে থাকা একটা অর্থ আমাকে বুঝতে শিখিয়েছে, চারুমতি – শেষ না হওয়া
এক অভিযানের নাম।’
0 Comments
Post Comment