- 23 March, 2025
- 0 Comment(s)
- 95 view(s)
- লিখেছেন : অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
হিংসা ও সন্ত্রাস। পাশাপাশি দুখানি শব্দ। আজকের পৃথিবীতে বড় পরিচিত বলে মনে হয়। তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হল শব্দদুটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকে অন্য আরও একটি শব্দ। পক্ষপাত। একজনের কাছে যা সন্ত্রাস, আরেকজনের কাছে তা কেবলই বাধ্যতামূলক। প্রয়োজনীয় অধিকার। হক। এভাবেই সুনির্দিষ্ট সন্ত্রাস সকলের অগোচরে ‘সংগ্রাম’ হয়ে ওঠে। কোনও কোনও মৃত্যু ‘সহজাত দুর্ঘটনা’ হয়ে দাঁড়ায়। মানবাধিকার শব্দটি তখন আর সামগ্রিক থাকে না। তা গোষ্ঠী-নির্দিষ্ট রূপ-পরিগ্রহ করে।
সুস্মিতাশ্রীর সেইসব দিন মনে পড়ছিল। সুরেশের সঙ্গে তার আলাপের প্রথম দিন। দুজনের বয়সের ব্যবধান ছিল খানিক। তাতে অসুবিধে হয়নি। চেন্নাই থেকে প্রথম মুম্বাইতে আসা ট্রেনি জার্নালিস্ট সুস্মিতা, বস হিসেবে সুরেশকে পেয়ে চমৎকৃত হয়েছিলেন। শুরু থেকেই তিনি জানতেন বিরাট ব্যাবসাদার পরিবার থেকে আসা সুরেশ লম্বা দৌড়ের খেলোয়াড়। কেবল কপি-এডিটর অথবা পেজ-এডিটরের আসনে তিনি বেশিদিন থাকার মানুষ নন। তিনি আরও উঠবেন, এবং সেই ওঠার পিছনে পরিশ্রমের পাশাপাশিই অর্থের উপস্থিতি থাকবে। টাকার বিনিময়ে এই সমাজকে কিভাবে চালাতে হয় সেই বিষয়ে মানসুখানিদের কয়েক প্রজন্মের অভিজ্ঞতা।
আজ থেকে কুড়ি বছর আগেকার মুম্বাই শহর। আজকের মতো এতখানিও জনবহুল হয়ে ওঠেনি। কোলাবার একেবারে শেষপ্রান্তে নেভি নগর। তারও শেষপ্রান্তে বোল্ডার ছড়ানো সমুদ্রসৈকত। সমুদ্র বেয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমে তাকালে দেখা যেত প্রং’স লাইটহাউস। পুবদিকে আরও একটা ডুবে যাওয়া লাইটহাউজ চোখে পড়ত। লোকে বলত সাংকেন রক। নেভি নগরের এই সৈকতভূমিতে চট করে আসা যেত না। জায়গাটা নৌ-সেনার ক্যান্টনমেন্ট চত্বর। মানসুখানিদেরই আত্মীয়-সম্পর্কে দুএকজন নৌবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। তাই সুরেশের পক্ষে সুস্মিতাশ্রীকে নিয়ে এখানে চলে আসা অন্যদের তুলনায় সহজ ছিল। কত সূর্যাস্তই না দুজনে দেখেছেন এই সৈকতে। কতগুলো বছর। আদালতে সুস্মিতাশ্রী জবাব দিচ্ছিলেন।
“আপনি কবে থেকে সন্দেহ করতে শুরু করলেন যে আপনার স্বামী ঘুরপথে অন্য মেয়েদের ব্যবহার করছেন?” সুরেশের আইনজীবী সুস্মিতাশ্রীকে ক্রস করতে শুরু করেন, “আপনি একজন ভিকটিমেরও এই প্রসঙ্গে কোনও এফআইআর দেখাতে পারেননি। কেবল সংস্থার কাছে দুজনের গোপন অভিযোগপত্র আপনি দাখিল করেছেন, এবং এমন একটা সময় সেই অভিযোগ দাখিল হয়েছে যখন নথি অনুযায়ী আপনি সংস্থার টাকা সরাতে শুরু করেছেন এবং সংস্থা ছেড়ে চলে যাবার কথাও ততদিনে আপনার ভাবনায় এসে গিয়েছে।” আইনজীবী একটু থামেন, তারপর আবার বলেন, “আপনি নিজেই বলেছেন কলকাতার জনৈকা সুবর্ণ সেন চাকরি ছেড়ে চলে যাবার পরেপরেই আপনি এই বিবাহ সম্পর্কে বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। আদালত সকলকে সমান চোখে দেখবে। আপনার অনুমান বা আশঙ্কার উপর নির্ভর করে আদালত চলবে, এমনটা আপনি আশা করতে পারেন না।” হঠাৎ ঢেউ ভাঙার শব্দে সুস্মিতাশ্রীর সম্বিৎ ফিরে আসে।
অস্ফূটে তিনি বলে ওঠেন, “মহামান্য বিচারপতি আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিন। জেরার নামে এই আক্রমণ আমাকে মনস্থির করতে দিচ্ছে না।” সুরেশ ভুলে গিয়েছিলেন সুস্মিতাশ্রী পন্নিরসেলভম নিজেও আইন বিষয়ে একাধিক ডিপ্লোমায় উত্তীর্ণ। পেশাগত কারণে বিভিন্ন সময়ে এমন কোর্সগুলিতে তিনি যোগ দিয়েছিলেন। এর মধ্যে একটি কোর্স ছিল গার্হস্থ্য হিংসার উপর।
পরপর কাগজ জমা পড়তে থাকে। তাঁর আইনজীবীর পাশাপাশি সুস্মিতাশ্রী নিজেও আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনে যুক্তি প্রয়োগ করেন। এর আগে আইনজীবী চন্দ্র ভার্গব স্বয়ং তছরুপের বিষয়টি নিয়ে কাগজপত্র সাজিয়ে দিয়েছিলেন। কাজেই সুরেশ মানসুখানির লিগাল টিমের তরফে সবকিছু আর অতখানিও সহজ থাকে না। সওয়াল-জবাবে আদালতকক্ষ সরগরম হয়ে ওঠে।
পাথরের উপর ঢেউ আছড়িয়ে পড়ে। ছিটকে আসা জলের ফোঁটারা সুস্মিতাশ্রীর সারা শরীর ভিজিয়ে দেয়। শুনানির শেষে আদালতের পর্যবেক্ষণ যথেষ্ট ভাবেই সুস্মিতাশ্রীর পক্ষে গিয়েছে। পরবর্তী শুনানিতে আরও নিখুঁত তথ্য-প্রমাণ না দেখাতে পারলে সুরেশের তরফে আনা টাকা তছরুপের অভিযোগ খারিজ হয়ে যেতে পারে বলেও বিচারপতির তরফে মন্তব্য করা হয়েছে। তবু সুস্মিতাশ্রী জানেন এই লড়াই এখনও চলবে। আইন-আদালত-দীর্ঘসূত্রিতার বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা বড় কম দিনের নয়। তিনি জানেন তাঁর এই মামলা চলবে। মামলা চলবে পূর্ণিমার। ওদের জন্য তাঁর দুঃখবোধ হয়। এই ভারতবর্ষে গরিবগুর্বো মানুষদের কিভাবে যে এমন আইনের ঘানিতে আটকিয়ে, কষে পেষাই করা হয় সেসব দেখতে দেখতেই তো তাঁর চুল পাকল। অবস্থার কোনও পরিবর্তন হতে পারল না। তাছাড়াও এই জাতপাতের লড়াই। ক্রমশই যেন জাতি-ধর্ম-বর্ণের লড়াই, নিজ-শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের লড়াই কদর্য থেকে কদর্যতর রূপ নিয়ে চলেছে। মনে মনে সুস্মিতাশ্রীর ‘ভদ্রলোক’ জাতটিকে তেড়ে গালমন্দ করতে ইচ্ছে হয়। তাদের চেয়ে বড় জাতি-সচেতন আর কোনও গোষ্ঠী নয়। এদের নামে তাঁর মাটিতে থুতু ফেলতে ইচ্ছে জাগে। বড় বিরক্ত, বড় হতাশ মনে হয় তাঁর। তিনি সমুদ্রের ধার থেকে সরে আসেন। নোনা জলের গন্ধ তাঁর শরীরে। তিনি মুখ মুছে নেন। হু হু হাওয়ায় তাঁর চুল উড়ছে। পিছিয়ে এসে তিনি গাড়িতে উঠে বসেন। “চলো এবার, পঞ্চগনি। রোজউড ইয়ার্ড।” সুস্মিতাশ্রী ড্রাইভারকে হুকুম দেন। পঞ্চগনির কাছাকাছিই তাঁর বহুদিনের পুরনো এক কলেজ-বান্ধবীর বিশাল ওয়াইন-ইয়ার্ড। আজ শুক্রবার। সপ্তাহান্তটুকু সেই বান্ধবীর কাছে কাটাবেন বলেই তিনি মনস্থির করে এসেছেন। মাঝে মাঝে তাঁর সবকিছু থেকে ছুটি নিয়ে যেতে ইচ্ছে হয়। গাড়ি চলতে শুরু করে।
আকাশে মেঘ জমে আছে। দিগন্তছোঁয়া সবুজের দিকে চেয়ে ওরা বসেছিল। বোম্মাই আর পূর্ণিমা। বোম্মাইয়ের আদুল গা। পূর্ণিমার পরনে ফুলছাপ, মলিনবরণ শাড়ি একখানি। পূর্ণিমার নাকে বোম্মাইয়ের গায়ের গন্ধ আসে। এখন তাতে আর মুরগির বিষ্ঠার গন্ধ পাওয়া যায় না। কেবল মাটি আর ঘামের গন্ধ লেগে থাকে। পূর্ণিমা বোম্মাইয়ের কাঁধে মাথা রাখে। সব কেমন থমথম করছে। বোম্মাই কথা বলে না। সে খেপে ওঠে হঠাৎ। ধাক্কা মেরে পূর্ণিমার মাথাটা সে তার কাঁধ থেকে সরিয়ে দেয়।
“সব তোর জন্য হল মাগী! তোর জন্যই হল এসব!” অশ্লীল ভাষায় বোম্মাই পূর্ণিমাকে গালাগাল দিয়ে ওঠে। পূর্ণিমা অবাক হয়ে বোম্মাইয়ের দিকে তাকায়। কদিন ধরেই তার স্বামীর ব্যবহার তার কাছে অচেনা ঠেকছিল। কিন্তু তাই বলে এমন অভিযোগ! সে কল্পনাতেও আনতে পারেনি। সে অস্ফূটে কিছু বলতে চায়। “চুপ! একদম চুপ!” আবারও একটা বিশ্রী গালাগাল দিয়ে বোম্মাই তাকে চুপ করিয়ে দেয়। “সেলাই মেশিন চাই মেয়ের, সেলাই শিখে স্বাবলম্বী হবেন। সেই জন্য বউ আমার চেন্নাই দৌড়লেন, আর তারপর,” হঠাৎ বোম্মাই কথা থামিয়ে হাঁফাতে শুরু করে। পূর্ণিমা মাথা নামিয়ে নেয়। তারও ভিতরে ভিতরে মনে হতে থাকে বোম্মাই হয়তো ঠিক কথাই বলেছে। সরকারি সাহায্যে সেলাই মেশিন পাওয়ার আশায় পূর্ণিমা যদি সেদিন চেন্নাই না দৌড়ত, তাহলে হয়তো এসবের কোনও কিছুই – সে বোম্মাইকে ছুঁতে চেষ্টা করে। তার চাপটা বুঝতে পারে পূর্ণিমা। শোনা যাচ্ছে আয়েঙ্গারেরা নাকি মামলা তুলে নেবে। কিন্তু, তার কী নিশ্চয়তা? দরজার সামনে পুলিশ পাহারা নিয়ে এভাবে গ্রামে বসে থাকা। দমচাপা একটা অন্ধকার। রাগে বোম্মাই আবারও পূর্ণিমার হাত ঠেলে সরিয়ে দেয়। সে কেঁদে ফেলে হঠাৎ। পূর্ণিমা বুঝতে পারে, বোম্মাই মন থেকে ওকে অপমান করেনি। পূর্ণিমাকে অপমান করেছে বোম্মাইয়ের অন্ধকার অবচেতন। রাগে বোম্মাই কখন যে তার চুলের মুঠি খামচে ধরেছিল, পূর্ণিমা টের পায় এখন। ক্রমশ বোম্মাইয়ের মুঠি আলগা হয়ে আসে। দূরে কার্থিক আর রাজাপ্পার মতো দেখতে দুজন মানুষকে আল বেয়ে ছুটে আসতে দেখা যায়।
গাড়িটা ছুটছিল। কাচ তোলা রয়েছে। বাইরের দিকে তাকিয়ে সুস্মিতাশ্রী ভাবছিলেন। প্রথম জীবনে তিনিও কি সুরেশের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে, কখনও কাউকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ব্যবহার করেননি? কেরিয়রের পিছনে ছুটতে গিয়ে কখনও কাউকে তার ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করেননি? কোনও অন্যায় করেছিলেন? অপছন্দের কারোর ন্যায্য প্রমোশন আটকে দিয়েছিলেন? মনে পড়ে না তাঁর। তবু উপরে উঠতে গেলে, অন্য কাউকে না কাউকে ঠিক নীচের দিকে নামতেই হয়। এমন আকস্মিক দার্শনিতার জালে আটকিয়ে পড়ে সুস্মিতাশ্রী হাঁসফাঁস করতে থাকেন।
ঠিক সেসময়েই তাঁদের পিছনের গাড়িটা তুমুল গতিতে এগিয়ে এসে ডান দিক থেকে সুস্মিতাশ্রীর গাড়িতে প্রবল ধাক্কা মারে হঠাৎ। ধাক্কাটা যে ইচ্ছে করেই দেওয়া হয়েছে সুস্মিতাশ্রীর তা বুঝতে দেরি হয় না। চকিতে তাঁর ড্রাইভার গাড়ির গতি বাড়িয়ে অতর্কিত এই আক্রমণের হাত থেকে তাঁদের বের করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবুও ক্ষিপ্র গতিতে অন্য গাড়িটা আবারও তেড়ে এসে ধাক্কা মারতে থাকে। গাড়ির বাঁদিকে হাইওয়ের পুরু এ্যাসফাল্ট রাস্তার মেয়াদ যেখানে শেষ হয়েছে, ঠিক সেই জায়গা থেকেই সোজা উপরের দিকে উঠে গেছে খাড়া গ্রানাইট পাথরের এবড়ো-খেবড়ো দেওয়াল। তাঁদের গাড়িটা অন্য গাড়িটার চাপের মুখে পড়ে ক্রমশ সেই অসমান দেওয়ালে ঘষটাতে থাকে। গতি আর সেই ঘষটানির কারণে সুস্মিতাশ্রী দেখতে পান তাঁদের গাড়ির বাঁদিকে দরজার ওপাশে শক্তিশালী ফুলঝুরির মতো আগুনের ফুলকি ছিটকে উঠতে শুরু করেছে। গাড়িটা ক্রমশ পিছলোতে থাকে এবং সবশেষে প্রচণ্ড শব্দ করে পাক খেয়ে উলটে যায়। পাশের গাড়িটাও কাজ শেষ বুঝে গতি বাড়িয়ে বেরিয়ে যায়। হাইওয়ের এই বিশেষ বাঁকের জায়গাটায় কোনও সিসি-ক্যামেরাও ছিল না। সুস্মিতাশ্রী ক্রমশ অন্ধকারে ডুবে যেতে থাকেন। ডান পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে তাঁর।
“চলে যেতে হবে।” কার্থিক আর রাজাপ্পা আল বেয়ে ফিরে গেছে অনেকক্ষণ। আয়েঙ্গারদের তরফে মামলা তুলে নেওয়ার কাগজ কোর্টে জমা পড়েছে আজ। তবু পূর্ণিমাকে নিজের বুকের ভিতর জড়িয়ে ধরে এই শব্দগুলোই বোম্মাই উচ্চারণ করে। “চলে যেতে হবে।” ভৈরব অথবা জাকাম্মাসুন্দরী, যে কারোরই আশীর্বাদ নিয়ে হোক, এই গ্রাম ছেড়ে ওদের চলে যেতে হবে। পূর্ণিমা কোনও প্রতিবাদ করে না। সে চুপটি করে বোম্মাইয়ের বুকে মাথা রেখে সেই বুকের ভিতরকার ধুকপুক শব্দ শোনে। একটু আগেই যে হাত তার চুলের গোছাটাকে প্রবল শক্তিতে, কোনও আসুরিক অভিনয়ে খামচে ধরেছিল, তারই উপরে হাত বোলায়। কিছু ভেবে উঠতে পারে না। স্রোতের টান বেয়ে বয়ে যাওয়া ভিন্ন পূর্ণিমাদের কোনও কাজ নেই। কোনও কাজ থাকে না। তার নিজেকে বড় শান্ত মনে হয়। এতদিনকার গোছানো ঘর, সাজানো সংসার, শস্য রুয়ে বড় হওয়া বোম্মাই আর পূর্ণিমা, এইবারে মুনিষ খাটবে। ভার তুলবে। সাধারণ শৌচাগার ব্যবহার করবে। আর ভারতীয় রেলওয়েজের কোনও এক ঘিঞ্জি প্ল্যাটফর্ম চত্বরে, অথবা তারই কাছাকাছি কোথাও, গালাগালি-মারামারি করে এক চিলতে ত্রিপল অথবা দরমার আশ্রয়ে বেঁচে থাকবে। পূর্ণিমার নিজের ভাইকে মনে পড়ছিল।
দলিত প্যান্থার পার্টির অন্যতম সদস্য ছিল তার ভাই। তাই উচ্চবর্ণের চপারের ঘায়ে কয়েক টুকরো মাংস হয়ে যেতে বেশীদিন তাকে অপেক্ষা করতে হয়নি। সেসব অনেক পুরনো ইতিহাস। ঘুটঘুটে অন্ধকার দেখে বোম্মাই আর পূর্ণিমা ওদের ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসে। পুলিশের লোকটি বাইরে দাওয়ার উপর অঘোরে ঘুমোচ্ছে। তার ঘুম ভাঙে না। কাল থেকেই এখানে ডিউটি মিটবে তার। বোম্মাই ঘুমন্ত লোকটার দিকে তাকায়। মৃদু হাসি এসে তার ঠোঁটের উপরে জড়ো হয়। কাগজে মুড়ে অল্প মিষ্টি, আর শুকনো খাবার সে লোকটার পাশে নামিয়ে রাখে। পূর্ণিমার হাতের উপর হাত রাখে বোম্মাই। সামনে খোলা আকাশ। আর তাদের হারাবার কোনও ভয় নেই। পিছনে তাকিয়ে তারা ফেলে আসা সংসারটার দিকে তাকায়। মায়া বাড়ছে না। এরপর তারা সামনের দিকে তাকিয়ে, আরও সামনে এগিয়ে যায়। দূরে কেবল কর্কশ আওয়াজে শেয়াল ডেকে ওঠে কোথাও।
(চলবে)
আগের পর্বের ঠিকানা – https://nariswattwo.com/welcome/singlepost/the-siege-serialised-novelette-series-nineteen-
0 Comments
Post Comment