সুমেধা তখন গোধূলির কাছাকাছি

  • 04 January, 2024
  • 0 Comment(s)
  • 237 view(s)
  • লিখেছেন : অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
তবুও সুমেধা এই পৃথিবীতেই টিকে থাকে। টিকে থাকেও বলতে ইচ্ছে করে না। একরকম ভালোবেসেই সে বাঁচতে চায়। পার্থিব অনেক সুখ এই পুঁজিবাদী সমাজ তাকে ভোগ করতে দিচ্ছে বলেই, অন্য অনেক ভালোলাগা-ভালোবাসার, ‘নগদ কেনার মতো ইচ্ছেগুলো’ই সে পূরণ করতে পায়। তবুও মাঝেমধ্যে কোনও সময়, বছর পনেরোর কমবয়সী সুমেধাকেই তার মনে পড়ে। যে সুমেধা এক নিঃশ্বাসে বিপ্লবের কথা লিখলেও, বিপ্লবী হয়ে ওঠা হয়নি তার … (ছোটগল্পে আত্মবীক্ষার উপাখ্যান)

সুমেধা তখন গোধূলির কাছাকাছি এসে দাঁড়াল।

 

এ পথে অনেক যুগ আসা হয়নি তার। যদিও যুগ বলতে বারো বছর বোঝায়। সুমেধা হিসেব করে দেখল এর আগে যেদিন সে এই চত্বরে প্রথমবারের জন্য এসে দাঁড়িয়েছিল, তাও আজ থেকে প্রায় পনেরো বছর। আর শেষবারের হিসেব – সেও আজ থেকে প্রায় সাত বছর আগেকার সময়। সেই হিসেবে সমস্ততে একযুগ পেরিয়েছে বলাই যায়। ঝমঝম করে একটা দ্রুতগতির ট্রেন ছুটে চলে গেল। থ্রু ট্রেন। এতটুকুও গতি কমল না। ডান দিক থেকে বাম দিকে একে একে ঝাপসাবরণ কামরাগুলি ছুটে চলে গেল। সুমেধা গাড়িটাকে লেভেল ক্রসিং থেকে একটু দূরে, ফাঁকা জায়গাতে ঘুরিয়ে রেখেছে। আজ এই পর্যন্তই। আর ওদিকে যাওয়ার কোনও বাসনা নেই তার। এমনিতেই কলকাতার বাড়ি থেকে সে এসে পড়েছে কমবেশি চল্লিশ কিলোমিটার। অনেক দিন আগের আবছা হয়ে যাওয়া স্মৃতিগুলোই তার মনে পড়ছিল। গাড়ি থেকে নেমে, সে লকটা একবার আটকেছে কি না দেখে নিয়ে প্ল্যাটফর্মের দিকে এগোয়।

 

সাধারণ মফস্বল এলাকার প্ল্যাটফর্ম যেমন হয়। এই রেললাইন ধরে আরও দক্ষিণে এগোলেই ডায়মণ্ড হারবার। সাগরদ্বীপ। যদিও দ্বীপ অবধি রেল-যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। তবু সে আর হতে কতক্ষণ? মানুষ যেভাবে পৃথিবীর সমস্ত প্রাকৃতিক শক্তির উপরেই নিজের খবরদারি ফলাতে চাইছে – তাতে এ তো সামান্য খাঁড়ির এপার-ওপার। কেবল ওইটুকুই। বছর ত্রিশেক সময়ের মধ্যে সাগরদ্বীপ বা এমন অন্যান্য সমস্ত দ্বীপ-অঞ্চলগুলিই বিশ্ব-উষ্ণায়নের কারণে যদি বা সমুদ্রের অতলসমাধিতে তলিয়েও যায়, তাতেই বা কোনও সরকারের হেলদোল কোথায়? সুমেধা এসব নিয়ে এককালে লিখেছে। এখন আর লিখতে ইচ্ছে করে না তার।

 

কর্পো-সিঁড়িতে গোড়া থেকেই সুমেধা উচ্চপদের চাকুরে। আর্থিক স্বচ্ছলতায় তার কোনও কমতি নেই। কিন্তু আজ এই গোধূলিতে হঠাৎ … ঠিক কি কারণেই যেন বা তার পিছনে ফিরে তাকাতে ইচ্ছে হয়। বছর পনেরো আগের সেই সুমেধাকেই মনে পড়ছে তার। বহুচেনা প্ল্যাটফর্মের ধুলো-মাখা সিঁড়ি বেয়ে সে উপরে উঠে আসে। বহুকালের পুরনো রঙ। হলুদ জমিতে সীমানা হিসেবে লালের প্রলেপ। সিমেন্টে বাঁধানো বসার জায়গা। মলিন পানীয় জলের কল। টিকিট ঘরের বাঁ পাশে এখনও খোলা ল্যাট্রিন। সেখান থেকে দুর্গন্ধ আসছে। সুমেধার মনে পড়ে একেকসময়ে ভুল করে ভেণ্ডর কামরায় উঠে পড়ার পর, কামরার গা গোলানো আঁশটে গন্ধকেই সঙ্গী করে নিয়ে কোনওমতে তাকে চলে যেতে হত বারুইপুর। সেখানে ট্রেন পৌঁছলেই কামরা বদল করার চেষ্টা। এক অদ্ভুৎ খ্যাপামিতেই সুমেধা ছুটেছিল সেদিন। অনেকদিন।

 

প্ল্যাটফর্মের উপর এখনও দু’চারখানি খাবারের দোকান। চা-নিমকি, বিস্কুট অথবা মুড়ি-ঘুগনির ব্যবস্থা। একখানি দোকানে রঙবেরঙের পোস্টার বিক্রি হয়। শাহরুখ-সলমনের পাশেই সেখানে যীশু অথবা পদ্মপাণি বিষ্ণুর অবস্থান। অথবা হৃষ্টপুষ্ট নধরকান্তি একেকটি শিশুর সরল নগ্নতা। মফস্বল বলতে সত্যি এই জায়গা শহর থেকে দূরের। এখনও এখানে এমন বিনোদনেই মানুষের ঘর সাজে। এমন প্লাস্টিক-পোস্টারেই নতুন রঙ-করা দেওয়াল পূর্ণতা পায়। সুমেধার কি খিদে পাচ্ছে?

 

কতদিন, কতদিন সুমেধা এমনি করে ধুলোর গন্ধ মাখা কোনও এক স্টেশন প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়ায়নি। কতদিন অপেক্ষা করেনি ট্রেনের জন্য। হাতে তুলে নেয়নি মুড়ি-ঘুগনির জলখাবার। দোকানে বলে ‘টিফিন’। হাতে করে মোড়ক খুলে বাপুজি কেক মুখে পুরে দেয়নি। বদলে সে পেয়েছে তিন হাজার স্কোয়্যার ফিট, গোদরেজের আসল আসবাব, মাস গেলে মোটা সুদের ব্যাঙ্কব্যালান্স। কতদিন পাহাড়ে যাওয়া হয়নি তার। চাইলে হয়তো এখনই সে বাগডোগরার টিকিট কাটতে পারে অবলীলায়। কিন্তু এসপ্ল্যানেড চত্বরের পেট্রোলের গন্ধ মেখে থাকা সরকারি বাস, গদি-উঠে-যাওয়া পিঠ-সোজা-করে-বসার সুখ, ভোররাত্তিরের মালদা হল্ট। সেই সবকিছুকেই এখন অনেক দূরে ফেলে আসতে হয়। সুমেধা জানে ধীরাজদারও কোনও দোষ নেই কোথাও।

 

পুঁজির রাজত্বে সকল কর্মীকেই তার উপরের জনকে হিসেব বুঝিয়ে চলতে হয়। কাঞ্চনমূল্যের হিসেব নগদানগদি না মেটাতে পারলে উপর থেকে নীচ অবধি বয়ে আসে বিক্ষুব্ধ গলার স্বর। প্রত্যেকেই প্রত্যেকের কাছে তখন জবাবদিহি আদায় করতে চায়। তবুও সুমেধা এই পৃথিবীতেই টিকে থাকে। টিকে থাকেও বলতে ইচ্ছে করে না। একরকম ভালোবেসেই সে বাঁচতে চায়। পার্থিব অনেক সুখ এই পুঁজিবাদী সমাজ তাকে ভোগ করতে দিচ্ছে বলেই, অন্য অনেক ভালোলাগা-ভালোবাসার, ‘নগদ কেনার মতো ইচ্ছেগুলো’ই সে পূরণ করতে পায়। তবুও মাঝেমধ্যে কোনও সময়, বছর পনেরোর কমবয়সী সুমেধাকেই তার মনে পড়ে। যে সুমেধা এক নিঃশ্বাসে বিপ্লবের কথা লিখলেও, বিপ্লবী হয়ে ওঠা হয়নি তার।

 

“ওমা! চিনতে পারছ গো দিদি আমায়?” বয়স্কা মহিলা জিজ্ঞেস করেন।

 

চা-ঘুগনি, কেকের বয়াম, বিস্কুটের ওপার থেকে কণ্ঠস্বর ভেসে এসেছে। সুমেধা মহিলার দিকে তাকায়।

 

“কত্তদিন পর এদিকে আসা হল গো দিদিভাই! কি? চিনতে পারছ না তো আমায়?” মহিলার গালভরা হাসি, আনন্দ উছলিয়ে পড়ছে, “বসো গো, বসো ওদিকটায়। চা খাবে তো? একটু মুড়ি ঘুগনি দিই এখন?” সুমেধা ঘাড় নাড়ে। সে গিয়ে বসে কাঠের বেঞ্চির উপর। পাশে বসে থাকা দুটি লোক আরও একটু সরে গিয়ে তাকে সসম্ভ্রমে জায়গা করে দেয়। “তুমি পড়িয়েচিলে গো আমার ছেলেটারে, মনে নেই তোমার?” মহিলা বলেন, “মনোজ তপাদার, আমাদের মনু পড়ত যে গো তোমাদের আশ্রমে, রোববার-রোববারের ক্লাস।” সুমেধার মনে পড়ছে। দু-তিনজন বন্ধুকে নিয়ে ওরাই শুরু করেছিল এই মফস্বল এলাকার একটি আশ্রমে রোববারের সকালের ক্লাস। প্রতি রোববারেই কেউ না কেউ সকালের ট্রেন ধরে এখানকার পরিচিত একটি অনাথাশ্রমে এসে পড়ত সেখানকার আবাসিক বাচ্চাদের পড়ানোর জন্য। তারপর সেই বাচ্চাদের সঙ্গেই দুপুরের খাওয়া সেরে বিকেলের বাড়ি ফেরা। সব আবাসিক ছাত্রেরাই যে একেবারে অনাথ ছিল তা নয়। বেশ কয়েকজনই ছিল এই মনোজের মতো। ইচ্ছে থাকলেও যার পরিবার নানান কারণে হয়তো সেই শিশুর পড়াশোনার ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি। এমন প্রায় কুড়িজন মিলিয়ে মিশিয়ে সুমেধাদের ছাত্র হয়েছিল তখন। টানা প্রায় আট বছর, সুমেধারা সেই আশ্রম-ইস্কুলকে টেনে নিয়ে যেতে পেরেছিল। সুমেধারা ওদের বলত, জীবনে পড়াশোনার কোনও বিকল্প নেই। সৎপথে পড়াশোনার মাধ্যমেই একদিন পৃথিবীর সব দুঃখ-কষ্ট-সমস্যাকেই সমাধান করা সম্ভব। সুমেধার এখন মনে হয়, অজান্তেই কি তারা মিথ্যে বলেছিল সেদিন?

 

অনেক পড়াশোনা করেও তারা নিজেরাই কি সুখী হতে পেরেছে আজ? স্বাধীন হতে পেরেছে নিজেদের পথ চলায়? নাকি নাকে দড়ি বেঁধে তারাও সেই ছুটে চলেছে অন্য কোনও গোয়াল-মালিকের মর্জিতেই?

 

“মনোজ কি করছে এখন?” সুমেধা বাটি করে মুড়ি ঘুগনি নেয়। চামচ দিয়ে মুখে তোলে। কাঁচালঙ্কার ঝাল। চোখে জল আসছে।

 

“মনোজ তো পুনাতে গো এখন। তোমরা সব ওকে ক্লাস টেন দেয়ালে। তারপর পলিটিকনিক। কলেজ থেকেই তো চাকরি পেয়েছিল তারপর। তোমাদের নম্বর হারিয়ে ফেলেছিল বলে আর জানাতে পারেনি,” কলকল করে মহিলা বলে চলেন। “ওখানেই ‘আমদানি’ কোম্পানির কাজ, মেসিনে কাজ করে গো এখন!” মায়ের গলায় গর্ব ঝরে পড়ছে। কোম্পানির নাম শুনেই সুমেধা বুঝতে পারে, সেও কর্পোরেট। “দিনে নয় ঘণ্টা ডিউটি, শনি-রবি ছুটি। আবার চোট লাগলে, শরীর খারাপ হলে ডাক্তারেরও ব্যবস্থা আছে,” মহিলা বলে চলেন। “গ্যাসের দাম হাজার টাকা। সকাল পাঁচটায় উঠি, রাত্তির আড়াইটায় ঘুমতে যাই। তবু ওই ছেলে যতটুকু পাঠায়, তাই দিয়েই তো এটুকু চালিয়ে নিচ্ছি!” মহিলার গলায় ক্লান্তি নেই। “তোমরা না পড়ালে এতদূর যেতে পারত আমাদের মনু?” বড় ভাঁড়ে চা ঢেলে মহিলা সুমেধার দিকে এগিয়ে দেন।

 

মনোজের সঙ্গে সুমেধার যোগাযোগ নেই। কিন্তু এমনই আরেক ছাত্রের সঙ্গে এখনও তার যোগাযোগ রয়েছে। দ্বিমুখী চিন্তা এমনি এমনি হয় না তার। সেই ছেলেটিও ঢুকেছে কোনও এক লোহা-লক্কড়ের কোম্পানিতে। রাউরকেল্লায় অফিস তার। নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে। কোম্পানি শুষে নিচ্ছে সুখ। তবুও সেই শোষণেই তার আনন্দ। ‘অমৃতকাল’ আর ‘নয়া ভারত’এর উজ্জ্বল নানাবিধ শ্লোগান মাঝেমাঝেই সুমেধা তার সামাজিক মাধ্যমের স্টেটাসগুলিতে দেখতে পায়। কলেজে ঢোকার সময় থেকে চাকরিতে ঢোকার আগে অবধি রাজ্যের শাসকদলের সোচ্চার সমর্থক ছিল ছেলেটি। চাকরিতে ঢোকার পরেপরেই আনুগত্য কেন্দ্রের অভিমুখে পালটিয়ে যায়। যে শৈশব থেকে তাদের জন্ম, সেই তুলনায় অনেকটাই হয়তো ছেলেটি এগুল, কিন্তু এর ফলশ্রুতিতে কেবলই কি বেতনভুক রোবট হিসেবেই তাদের ভবিষ্যৎ? সততার বদলে তাহলে কি সে শঠতাকেও চিনে ফেলল প্রথমটায়? মোবাইল খুলে সে দেখল সেই ছেলেটিই এই মাত্র আরেকটি স্টেটাস দিয়েছে। সরাসরি সাম্প্রদায়িক কর্তৃত্ব জাহির করে, এমনই বক্তব্য এক। সুমেধাদের শিক্ষা তাহলে কতটুকু কাজে এসেছে তার?

 

সুমেধারা নিজেকে পিষছে। আজন্ম পিষছে। সেই পেষার শিক্ষাই আহরণ করছে ভবিষ্যৎ। এই চক্রগতি থেকে বেরোনোরও কোনও রাস্তা নেই।

 

কেবল মেয়ে নয়, আদতে মানুষ জাতটাই আপোসী। সুমেধা একথা বুঝে নিয়েছে। নরম মাটি পেলে আঁচড়ায় প্রত্যেকেই। তেমনই মেনে নেওয়ার অভ্যাসও মানুষের জন্মগত। নয়তো আজও কেউ কেন প্রশ্ন করেনি, জ্ঞানবৃক্ষের ফল পেড়ে খেলে তারই পরিপ্রেক্ষিতে আদি-পাপেরই বা বিধান কোন যুক্তিতে? জ্ঞানার্জনকেও কি ঈশ্বর তাহলে পাপের সঙ্গে তুলনা করতে চেয়েছিলেন? কিভাবে নিজের নগ্নতা সম্পর্কে সচেতন হয়ে পড়াটাই প্রথম পাপের সমতুল হয়ে দাঁড়ায়? আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে কি না নারীকে ঈশ্বর গর্ভযন্ত্রণার অভিশাপ দিলেন? কি পুরুষ, কি নারী – অনুগত মানবসমাজ এমনও এক বিধানের বিরুদ্ধে দুই সহস্রাব্দ জুড়েও একটিও প্রশ্ন তুলল না?

 

সুমেধা মহিলার দিকে তাকায়। স্টেশন প্ল্যাটফর্মে একটি রাজনৈতিক মিছিল উঠে এসেছে। তাদের পতাকার রঙ লাল। বয়স্কা মহিলা ফিসফিস করে সুমেধাকে বলেন, “আপদ যতসব! আমরাও তো হোয়াটস্যাপে দেখেছি গো, কি বিচ্ছিরি সব কাজই না এই পার্টি করেছে একসময়। একদম ভিডিও করে দেখেছি গো দিদিভাই,” মহিলার গলা আরও নামে, “আমার ছেলে বলেছে আর-বারের ভোটে ভুলেও যেন একদম অন্য কোনও পার্টিকে ভোট না দাও,” সুমেধা অস্ফূটে জিজ্ঞেস করে, “কিন্তু গ্যাসের দাম?” মহিলা তৎক্ষণাৎ ফিরতি জবাব দেন, “আহা দেশের জন্য এইটুকু পারব না? আমার ছেলেটা কি এমনি এমনি রোজগার করছে নাকি? ঘরে ঘরে ঠাকুর বসবে গো এইবার, ওই ‘ওদের’ যত বেয়াদবি বার করে দেব!” মিছিলটা প্ল্যাটফর্ম ঘুরে আবারও বাইরের রাস্তায় নেমে চলেছে।

 

চা শেষ করে সুমেধা বাইরে এসে দাঁড়ায়। মহিলা ওর থেকে পয়সা নেন না। একগাল হেসে বলেন, “আবার আসবে গো দিদিভাই। পুজোর সময় আমার ছেলেও আসবেখনে বলেছে। পারলে ওই সময়েই চলে এসো না গো!” সুমেধা মহিলাকে নিজের ফোন নম্বর দিয়েছে। লেভেল ক্রসিংয়ের গেট পড়ে রয়েছে। এবারে মালগাড়ি যাওয়ার সময়। দিনের আলো এখন অনেকটাই নিভে এসেছে। দূরে অন্ধকারে কুয়াশার ভিতর মালগাড়িটা মিলিয়ে যাচ্ছে। আস্তে আস্তে, খুব একটা ধৈর্যের সঙ্গে, মালগাড়ির কামরাগুলো মিলিয়ে যাচ্ছে। বামদিক থেকে ডানদিকের পথ। ভুশ ভুশ ভুশ ভুশ আওয়াজ। সুমেধারা কোনও দিন বিপ্লবী হতে পারবে না। পাকা চাকরি রয়েছে তার। সুমেধারা বুঝে নিয়েছে, এখন যন্ত্রই সমস্তের নিয়ন্ত্রক।

লেখক : গবেষক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্পকার 

ছবি : সংগৃহীত 

0 Comments

Post Comment