- 15 September, 2021
- 0 Comment(s)
- 615 view(s)
- লিখেছেন : চন্দন আঢ্য
নারীবাদী। শিল্পী। লেখক। গবেষক। শিক্ষাবিদ। সক্রিয় কর্মী। এই সমস্ত বিশেষণকে এক করে যদি কোনো স্বনামধন্য ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা যায়, তাহলে তিনি হবেন কেট মিলেট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটায় মিলেটের জন্ম ১৯৩৪-এর ১৪ সেপ্টেম্বর। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ছিলেন মেধাবী। মিনেসোটা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫৬ সালে স্নাতক স্তরের পড়াশোনা শেষ করে ঠিক দু-বছর পর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্সসহ প্রথম শ্রেণিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ। শুরু হয় শিক্ষকতা জীবন। কিন্ডারগার্টেন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়—সর্বত্রই অনায়াস দক্ষতায় পড়িয়েছেন ইংরাজি ভাষা এবং সাহিত্য। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭০ সালে অর্জন করেন পিএইচডি। তাঁর গবেষণাপত্রের অভিসন্দর্ভে সমাজবিজ্ঞান, নৃবিজ্ঞানের সঙ্গে মিশে ছিল সাহিত্যের বিশ্লেষণ। এই গবেষণাপত্রেরই পুস্তক-রূপ ‘সেক্সুয়াল পলিটিক্স্’। আবির্ভাবেই বাজিমাত। প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে নিঃশেষিত হয়ে যায় ৮০ হাজার কপি। বইটি সিমোন দ্য বোভোয়ারের ‘দ্বিতীয় লিঙ্গ’-এর দ্বারা প্রভাবিত হলেও নিজস্বতায় ভাস্বর। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর মতে নারী আন্দোলনের বাইবেল ‘সেক্সুয়াল পলিটিক্স্’ বইটিতে মিলেট জানিয়েছেন, পিতৃতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় নারীর পক্ষে যৌনতাতৃপ্তি অসম্ভব। যৌন নিপীড়নের মাধ্যমেই নারীর ওপর শোষণ চালায় পুরুষ। এই ব্যবস্থার উচ্ছেদসাধনই নারীমুক্তির সম্ভাব্য পথ হিসাবে বিবেচনা করেছেন মিলেট। ক্রমশ স্বনামধন্য ব্যক্তি হয়ে ওঠেন মিলেট। লিখলেন আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘ফ্লাইং’। একজন নারী-সমপ্রেমীর যন্ত্রণা ফুটে উঠেছে এই বইতে। ‘ফ্লাইং’ ছাড়া আরও দুটি আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ লিখেছিলেন মিলেট। লিখেছিলেন ইরানের রাজনৈতিক নিপীড়ন নিয়েও। ২০১৭ সালে ফ্রান্সে এই মহান নারীবাদী লেখকের মৃত্যু হয়।
লেখক: অধ্যাপক, প্রাবন্ধিক ও সমাজকর্মী
ছবি: সংগৃহীত
0 Comments
Post Comment