- 11 December, 2024
- 0 Comment(s)
- 62 view(s)
- লিখেছেন : অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
[১৬]
মালতী সুখেনকে ভালোবাসত? দু’জনের বয়সের ব্যবধান অথবা সামাজিক অবস্থান দেখলে এ প্রশ্ন মনে আসবে না। অল্পবয়সে স্বামীকে হারালেও কলকাতায় কার্যত উদ্বাস্তু হয়ে মেয়ে কোলে চলে আসা মালতী দ্বিতীয় কোনও পুরুষের প্রতি চট করে আকৃষ্ট হবে এমনটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তার উপরে সুখেন নেহাতই যুবক। প্রথম প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে সে খানিকদূর অবধি লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছে। পড়াশোনার প্রতি তার ঝোঁক রয়েছে। জীবনে সে আরও কিছু করতে চায়। এধরণের কারোর ক্ষেত্রেও চট করে অম্বরীশ মিত্রের মতো কারো একজনের বাড়িতে কোনওদিন কাউকে দেখেই তৎক্ষণাৎ ভালো লেগে যাওয়াটা – তবু স্বাভাবিক হলেও, আকর্ষণ? সে অসম্ভব।
তবুও কোথাও অনুরণন ঘটেছিল। অনুরণন। অর্থে ইংরেজিতে রেসোন্যান্স। সবসময়েই তা কেবল সমানে-সমানে, অথবা সমানে-বিপরীতে হতে হবে এমনটা বলেনি কেউ। সুখেনের ভিতর মালতী দেখেছিল এক আগ্রাসী রকমে সৎ মন। সমাজের সব সত্যিগুলোকে আদর্শে অন্ধ হয়ে হঠাৎ প্রত্যক্ষে তুলে ধরার তাগিদ। তারও সঙ্গে পেয়েছিল এক উদার ভালোবাসার উৎসমুখ। এই মুখটাকে মালতীর চেয়েও রানীর কদর দেওয়ার ভাগ ছিল বেশি। রানীই হয়তো তাদের আরও বেশি করে কাছাকাছি নিয়ে এসেছিল। বাজার-দোকানে মালতীর সঙ্গে সুখেনের দেখা হত। সম্বোধনে কোনও বিশেষ সম্পর্কের কথা সুখেন উচ্চারণ করত না। “আপনি?” চোখ তুলে কেবল এটুকু বলত কোথাও দেখা হয়ে গেলে হঠাৎ। তারপর কিঞ্চিৎ কথালাপ। কুশলবিনিময়। এভাবেই ক্রমশ তাদের পরিচয় হয়েছিল। সুখেন মালতীকে দেখেছিল, ঠিক যেন কুয়াশায় হারিয়ে যাওয়া এক নায়িকার মতোই অপার বিষণ্ণতায়। তবুও যার প্রাণশক্তি অটুট ও বিচ্ছুরণশীল। দুজনে কথা বলতে শুরু করে। আপনি থেকে তুমিতে নামতে সময় লাগে না বেশীদিন। তবু সে সম্পর্ক থাকে পবিত্র আশ্চর্যরকম। সহমর্মী শব্দটাই বরং দুজনের পক্ষে খাটতে শুরু করে। দুজনেই সমাজটাকে পরত খুলে দেখতে চায়। আর পাঁচজনকে দেখাতে চায়। কিন্তু সঠিক পথটা জানে না কেউ। সক্রিয় রাজনীতির পথে সুখেন না হাঁটলেও, পাড়ায় তার চেনাশোনা রয়েছে। সে কথা বললে শোনে দু’চারজন। কিন্তু লক্ষণ মজুমদার অথবা অম্বরীশ মিত্রের বিরুদ্ধে হাঁটবে, এমন মানুষ এ শহরে কম। গোখেল রোড বা ভবানীপুরের এই এলাকা তো অনেক ছোট পরিসর।
মালতী সুখেনের কাছ থেকেই সবটা জানতে পারে। অম্বরীশ-লক্ষণের ব্যবসার হদিস। তাদের আয়ের উৎস। সবকিছুই। কিন্তু প্রমাণ জোগাড় করা শক্ত। তার উপরে অম্বরীশের ছেলে সুতনু। সাপের মতোই হিলহিলে নজর তার। বাবার অবৈধ কারবারের বেশিরভাগটাই সে দেখাশোনা করে এখন। তার ঘরে ঢুকে কিছু বের করে আনা – অসম্ভব। একবার দুপুরে কোনওদিন মালতীই তার ঘরে গিয়েছিল। অম্বরীশের স্ত্রীই তাকে পাঠিয়েছিলেন। কোনও দরকারে ছেলেকে ডেকে আনতেই বোধহয়। এ বাড়িতে সকলের ঘরেই লাগোয়া ওয়াশরুম। মালতী খালি ঘরের দরজার সামনেটায় দাঁড়িয়ে ছিল কিছুক্ষণ। দরজা হাট করে খোলা। ভিতরে নেই কেউ। ঘরের মালিক যে ওয়াশরুমে গিয়েছে মালতীর বুঝতে দেরী হয়নি। ওয়াশরুমের সামনে পাপোশটায় একজোড়া চটি খুলে রাখা। মালতী চৌকাঠ পেরোবে কি পেরোবে না ভাবছে, ঠিক সেসময়েই খুট করে আওয়াজ। বাথরুমের দরজা খুলে সুতনু বেরিয়ে এসেছিল। পরনে কালো দৌড়তে যাওয়ার প্যান্ট। ঊর্ধাঙ্গ সিক্ত ও অনাবৃত। মালতী চকিতে চোখ নামিয়ে নিয়ে পিছনে ঘুরে গিয়েছিল। “কাকে চাই?” স্পষ্ট কাটাকাটা উচ্চারণে পিছন থেকে জিজ্ঞেস করেছিল সুতনু। “মা ডাকছেন আপনাকে,” কোনওমতে মালতী কথাগুলো উচ্চারণ করে। সে বুঝতে পারছে পিছন থেকে সুতনু এগিয়ে এসেছে কয়েকধাপ। তার দুচোখ দিয়ে সে গিলছে মালতীর শরীর। অস্বস্তির ভাবটা যেন ধারালো ছুরির মতোই মালতীর পিঠে গিয়ে বিঁধে যাচ্ছে বারংবার। একটা তীব্র গরম স্রোত। লোকটার চোখদুটোই এত বিশ্রী রকমের। মালতী ভাবতে পারে না। তার ঘাড়ের কাছে একটা শ্বাস পড়ে। তবে সুতনু ছোঁয় না মালতীকে। সে জানে কখন কার সঙ্গে কেমন ব্যবহার করতে হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে সস্তা সুখের চেয়েও নিজের কর্তৃত্ব বুঝিয়ে দেওয়াটা অনেক বেশি জরুরি হয়ে পড়ে। মালতী চলে যাচ্ছিল। সুতনু ডাকে আবার, “একটু দাঁড়াও। তোমার সঙ্গে কথা আছে আমার।”
-“আমার সঙ্গে?” মালতী দাঁড়ায়, তবে পিছন ফেরে না। সুতনু আবারও বলে, “ঘুরে দাঁড়াও। মুখোমুখি।” সেই স্পষ্ট কাটাকাটা উচ্চারণ। মালতী ঘুরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়।
না, সুতনু খুব কাছে আসেনি। বরং সে আরও দু’একধাপ পিছিয়ে গিয়েছে। তার চোখ সরাসরি মালতীর চোখের উপর। সে মালতীকে আর জরিপ করছে না। তার চোখের দিকে তাকিয়ে আছে কেবল। তার গলায় একটা তোয়ালে জড়ানো। মালতী ঘুরে দাঁড়ানোর ব্যস্ততায় সেটাকে খেয়াল করেনি। ভেজা তোয়ালেটা হাতে নিয়ে ভালো করে ফের মাথা মোছে সুতনু। তারপর ঊর্ধাঙ্গে চাদরের মতো জড়িয়ে নেয়।
-“বাজারে গিয়ে অনেক লোকের সঙ্গেই তোমার কথা হয় দেখেছি। বিশেষ করে, সুখেন। বেরা।” থেমে থেমে নামটা উচ্চারণ করে সুতনু, “ঠিক বলছি?” সে ঠায় তাকিয়ে আছে মালতীর দিকে। মালতী চোখ নামিয়ে নেয়।
-“কথা হয়। বাজারে অনেকের সঙ্গেই হয়। আলাদা করে কারো সঙ্গে বেশি কথা হয়, বলতে পারি না।” মালতী জবাব দেয়। শহরে আসার পর এই মিত্তিরবাবুদের বাড়িতেই টানা আশ্রয়, তাঁদেরই মহলে ওঠাবসা, পরবর্তীতে সুখেনের সঙ্গে আলাপ – এই সবকিছুই কথা বলার বিষয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগণার এককালের সাধারণ গৃহবধূ, বর্তমানে বিধবা মালতীকে অনেকটা পরিণত, পরিশীলিত করে দিয়েছে। উচ্চারণে গ্রাম্য টান থাকলেও, কথার জবাব দিতে সে এখন যথেষ্টই স্পষ্ট ও একইসঙ্গে মিতবাকও বটে। সুতনু ফের তাকে মেপে চলেছে।
-“সত্যি বলছ?” সে আবারও জিজ্ঞেস করে।
-“সত্যি বলছি।” মালতীর জবাব পালটায় না।
-“বেশ। তবে এর যেন অন্যথা না হয়।”
মালতী ঘাড় নাড়ে। সে চলে যেতে চায়। কিন্তু সুতনু আবারও কথা বলে ওঠে।
-“সত্যিটা সত্যি না হলেই কিন্তু আমার কাছে আবারও খবর আসবে। সে খবর দ্বিতীয়বারেও ‘মিথ্যে’ বলার চেষ্টা করলে, সমস্যা বাড়তে পারে। বরং ‘সত্যি’টাকে এখন থেকেই বাস্তবে সত্যি করতে চেষ্টা কোরো, কেমন?” সুতনু একটু থামে। আবার বলে, “জেনে রেখো আমি বাড়তি অভিনয় পছন্দ করি না।” সুতনু হাসে না, কিন্তু তার কথায় স্পষ্ট ব্যঙ্গ বোঝা যায়। “আর মাকে গিয়ে বলো আমি আসছি। এভাবে যখন-তখন আমাকে ঘরে লোক পাঠিয়ে ডাকতে হবে না।” মালতী ঘাড় কাত করে। সে পা বাড়ানোর সাথেই সাথেই পিছন থেকে আবারও সুতনুর গলা শোনা যায়, “শেষ বাক্যটা বলতে ভুলো না কিন্তু। আমার কথা শোনে না এমন লোকজনকে আমি খুবই অপছন্দ করি। সে যেই হোক।” খুট করে একটা শব্দ হয়। মালতী বুঝতে পারে সুতনু ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। সে চকিতে রান্নাঘরের দিকে পা বাড়ায়। তার সমস্ত শরীর যেন আজ অবসাদে ভেঙে পড়ছে। গা ঘিনঘিন করছে তার।
সুখেন আর মালতী পাশাপাশি বসেছিল। প্রায় গা ঠেকে যাওয়ার মতো কাছাকাছি। মালতীর গা কাঁপছিল। সুখেনের ইচ্ছে করছিল দুহাত দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরে। শান্ত করতে চেষ্টা করে। মালতীর শান্ত হওয়া প্রয়োজন। রানী একটু দূরে বসেছিল। মালতীই আজ তাকে দূরে গিয়ে বসতে বলেছে। এই পার্কটা এই সময়ে তুলনায় নির্জন। তবু বেশীক্ষণ এভাবে বসে থাকা যাবে না। ওরা জানে না ওদের কি করা উচিত।
-“হয়তো আজ রাতেই ওরা মেয়েটাকে পাচার করে দেবে, বলো সুখেন?” সুখেনের হাতের উপর মালতীর হাত। তার হাত ঠাণ্ডা। সুখেন ফিরে হাত রাখতে পারে না। সে কেবল বলে, “হয়তো। কিন্তু আমার মনে হয় ওরা আরও কিছুদিন সময় নেবে। স্যরের বাড়ি থেকে সরাসরি চালান হয় না মনে হয়। মাঝে কোথাও ওদের মেয়ে রাখার আলাদা জায়গা আছে। স্যরের বাড়িতে এমন মেয়েদের এর আগে কেউ কখনও নিয়ে এসে তুলেছে বলে তো শুনিনি,” সুখেনকে থামিয়ে দেয় মালতী। তার হাতের উপর থেকে চকিতে হাত সরিয়ে নেয়, “এমন মেয়েদের মানে? সুখেন? সুখেন! তোমার চোখ গেলে দেব আমি!”
হঠাৎ করেই যেন গোখেল রোডে বাড়ির কাজ করা মেয়ে মালতীর ভিতর থেকে সেই বাদাবন, নোনাজল আর বাবলাগাছের কাঁটার ধারের মতো রুক্ষ, তীক্ষ্ণ মালতীর পুরনো, তিক্ত, অগ্নিময়, ঝলসানো সত্ত্বাটা একবারে বের হয়ে আসে। “এরা নিজেদের ভালোবাসায় এই কাজে এসেছে? এরা নিজেরা এসেছে, নাকি এদের কেড়ে-কামড়ে-ফুসলিয়ে তুলে আনা হয়েছে? এমন মেয়েদের বলে তুমি কাদের কথা বলছ সুখেন?” সুখেন ভয় পেয়ে যায়। মালতীর ছিপছিপে দোহারা শরীরটা হঠাৎ কেমন যেন পেটানো লোহার মতোই শক্ত হয়ে উঠেছে। ওই হাতের একটা চড় যদি সুখেনের গালে এসে পড়ে, সুখেন মালতীকে ঠাণ্ডা করতে চেষ্টা করে, “আমি, আমি ওভাবে বলিনি। প্লিজ। প্লিজ, তুমি একটু শান্ত হও,” মালতী চড় মারার জন্য হাত তুলেই ফেলেছিল প্রায়। সে হাত নামিয়ে নেয়। সেও বলে, “তুমি – তুমিও, কিছু মনে কোরো না, আমি,” সে চুপ করে যায়। সে মাথা নামিয়ে নিয়েছে। সুখেন সাহস করে মালতীর পিঠে হাত রাখে এবার। আবারও হাত সরিয়ে নেয়। সে বলে, “ঠিক একটা কোনও ব্যবস্থা হবে মালতী। একটু ভরসা রাখো। একটু সময় দাও। আমি ছকুকে বলেছি। জায়গাটার হদিস বের করতে। যেখানে ওরা মেয়েদের পাচারের আগে এনে রাখে কলকাতায়। ওই জায়গাটার খবর আমরা একবার জেনে গেলেই,” মালতী মাথা তোলে। “আমি চাকরি ছেড়ে দেব সুখেন। কালই। ওই পরিবেশে আমার রানীকে আমি আর রাখতে পারব না। আমাকে কালই চাকরি ছেড়ে দিতে হবে। যে করে হোক। তারপর আমি দূরে, অনেকদূরে চলে যাব। অনেকদূরে কোথাও।” মালতীর গাল বেয়ে জলের ধারা নেমেছে। সুখেন এবারে সাহস সঞ্চয় করে মালতীর হাতের উপরে হাত রাখে। মালতী হাত সরিয়ে নেয় না। কোথাও যেন এই উষ্ণতাটুকুর প্রয়োজন ছিল তাদের।
সুখেন বলতে চেষ্টা করে, “মালতী, আমরা জানি। এখনও অবধি আমরা কিছুই করে উঠতে পারিনি। কিন্তু আমরা, আরও একটু চেষ্টা করলে হয়তো?” মালতী আবারও মাঝপথেই সুখেনকে থামিয়ে দেয়, “কিসের চেষ্টা? আমায় বলো তুমি। কি প্রমাণ নিয়ে আমরা এদের বিরুদ্ধে গিয়ে লড়ব? একটা বাড়ির ঠিকানা? একজন মাত্র সাক্ষী? আমরা জানি না সুখেন। আমরা জানি বরং এদের বিরুদ্ধে গিয়ে আমাদের লড়বার ক্ষমতা নেই। আমরা অনেক ছোট, অনেক নীচেকার জীব।” সুখেন মালতীর দিকে তাকায়। ক্লাস এইট পাস মালতী স্রেফ কলকাতার খবরের কাগজটুকু পড়েপড়েই কত কিছু স্পষ্ট করে বলে ফেলতে শিখেছে আজ। আরেকটু চেষ্টা করলে হয়তো সে গ্রামে আশাকর্মীর কাজটাও পেয়ে যেতে পারত। কিন্তু তার বর সঠিক সময়ে, সঠিক জায়গাতে পয়সাটুকু দিয়ে উঠতে পারেনি। তাই তার কাজ পাওয়া হয়নি আর। মালতীর ভিতরকার এই পাশাপাশি চাপা অন্ধকার, চাপা উজ্জ্বলতার ব্যাপারটুকুকে সুখেন যেন তার শরীর ভেদ করে ঢুকে স্পষ্ট দেখতে পায়।
“অনেকদূরে চলে যেতে হবে আমায়। হয়তো চেন্নাই, বা ওরকমই সাউথের দিকে কোথাও,” মালতী বিড়বিড় করে, “চরের মানুষ আমরা। মা কথাটা বলত অনেকবার। ভেসে যাওয়া, ডুবে যাওয়া ভিন্ন আমাদের কোনও গতিক নেই।” সুখেন মালতীর দিকে তাকায়, “সত্যিই কি আর একটুও সময় দেবে না তুমি? অন্তত আরও কয়েকটা দিন?” মালতীর শরীর ফের কাঁপছে, “আমি পারব না সুখেন। আমি আর কিছুতেই পারব না। আমার রানীর একটা কিছু হয়ে গেলে, আমার ভয় আজ দুকূল ছাপিয়ে গিয়েছে। আজ রাতে আমার জ্বর আসবে। আমি ডুবে যাব এবার। আমাকে আটকিও না আর।” তাকে কেমন যেন ক্ষ্যাপার মতো দেখায়। সুখেন শেষচেষ্টায় মস্ত বড় ভুল করে ফেলে, “আমার কথাটাও একবার ভাববে না?” এই কথাটা বলেই সে বুঝে যায় মস্ত ভুল করে ফেলেছে। মালতী সুখেনের চোখের দিকে তাকায়। সে খেয়াল করে না পার্কের ওপাশে আরও দুজন লোক বহুক্ষণ ধরেই তাদেরকে একদৃষ্টিতে লক্ষ্য করে চলেছে।
চড়টা খেয়ে বেশ খানিকক্ষণ পার্কের বেঞ্চিতেই ভোঁ হয়ে বসেছিল সুখেন। মালতীর দু’চোখে তখন ঘৃণার আগুন ঝকঝক করছে। “সব ব্যাটাছেলেরাই একরকমের হয়!” মাথা আকাশে তুলে, ঘাড় সোজা করে রানীর হাত ধরে টানতে টানতে পার্ক থেকে প্রায় দৌড়েই মালতী বেরিয়ে যায়। সুখেন তখনও ঠায় বসেছিল। তার পিছনে ধাওয়া করার চেষ্টাটুকুও করেনি। সুখেনের তখন কেবলই মনে হচ্ছিল, চড়টা মালতী ততখানিও জোরের সঙ্গে তার গালে কষায়নি বোধহয়।
(চলবে)
আগের পর্বের ঠিকানা – https://nariswattwo.com/welcome/singlepost/the-siege-serialised-novelette-series-fifteen-
লেখক : বিজ্ঞানী, প্রাবন্ধিক, কথাসাহিত্যিক।
ছবি : সংগৃহীত।
0 Comments
Post Comment