- 16 August, 2024
- 0 Comment(s)
- 135 view(s)
- লিখেছেন : অমর্ত্য বন্দ্যোপাধ্যায়
হলদোয়ানি ট্রিবিউন, নিজস্ব সংবাদ
এখনও ক্ষতিপূরণের খবর নেইঃ ভূমিধ্বসে নিহত শ্রমিকের পরিবার সরকারের দ্বারস্থ আজ
মানব কুমার (৩১), গত ফেব্রুয়ারি মাসে চারধাম প্রকল্পের অন্তর্গত সুড়ঙ্গ প্রকল্পে ভূমিধ্বসের কারণে যে চারজন শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছিলেন মানব তাঁদের অন্যতম। জানা যাচ্ছে চারমাসেরও বেশি সময় পর আজ অবধি সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা তাঁর পরিবারের হাতে পৌঁছয়নি। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের বাসিন্দা মানব। তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যেরা তাঁর আয়ের উপরেই সম্পূর্ণ নির্ভরশীল ছিলেন। এই অবস্থায় তাঁর স্ত্রী ও নাবালিকা কন্যা আজ সকালেই দেরাদুন এসে পৌঁছেছেন। মানবের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে তাঁরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চান। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে দেখা করবেন কিনা এই বিষয়ে সচিবালয় থেকে এখনও অবধি সদর্থক কিছু জানানো হয়নি। আমাদের প্রতিনিধি সুহানি আগরওয়াল মানবের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
এই অবধি লিখে চেয়ারে হেলান দেয় রাখী। ঘাড় ব্যথা করছে। সেই সকাল থেকে ফিল্ড সেরে আসতে আসতে যথেষ্ট পরিশ্রম গিয়েছে। কিন্তু এছাড়াও যে তার আর কোনও উপায় নেই। হলদোয়ানি ট্রিবিউন, তার স্বপ্নের কাগজ। রাখী শ্রীবাস্তব। টেবিলের উপর নাম লেখা ফলকটার দিকে সে একপলক তাকায়। নামের তলায় কোনও পদের কথা লেখা নেই। রাখী লিখতে চেয়েছিল ‘ইনভেস্টিগেটিভ রুকি জার্নালিস্ট’। অফিসের লোকজন শোনেনি। রাখী ম্যাডামকে নিজের পরিচয় লিখতে গেলে লিখতে হবে ‘এডিটর ইন চিফ’ অথবা ‘ম্যানেজিং ডায়রেক্টর’, এর বাইরে আর কোনও কিছুই লেখা চলবে না। স্পষ্ট ফতোয়া ছিল তাদের। একসাথে এতগুলো প্রাণ যে রাখী সত্যিই কোনওদিন ছুঁয়ে ফেলতে পারবে তা সে নিজেও ভাবেনি। মাত্র ঊনত্রিশ বছর বয়স তার।
ট্রেনি জার্নালিস্ট হিসেবে এই ‘হলদোয়ানি’তে রয়েছে আরও তিনজন। দুজন কপি-এডিটর, আর অবশ্যই সর্বেসর্বা বাহারুদ্দিন। রাখীর বাহার। দুজনের সম্পর্ক নিয়ে অফিসে কান পাতলেই শোনা যায়। কেবল তাতে রঙ থাকলেও কোনও দুর্গন্ধ থাকে না। হলদোয়ানি ট্রিবিউন যেন এক রামধনু-প্রকল্পের নাম।
“সুহানি,” কম্পিউটারের এপাশ থেকে রাখী ডাক দেয়, “মানবের পরিবারের সঙ্গে তোমার ইন্টারভিউয়ের রিপোর্টটা মেইল করোনি তো আমায়?” “এখুনি করছি দিদি, এই শেষ প্যারাটা লিখছি কেবল,” সুহানি জবাব দেয়। “তাড়াতাড়ি পাঠাও,” রাখী তার হাতদুটোকে মাথার উপরে তুলে একটু টানটান করে। এই স্টোরিটা আপলোড করে দিলেই আজকের মতো কাজ শেষ। ‘হলদোয়ানি’র রিডারশিপ ক্রমশ বাড়ছে। এমনকি দু’একটি করে বিজ্ঞাপনও আসতে শুরু করেছে। সম্প্রতি খুব সামান্য টাকার বিনিময়ে অনলাইন সাবস্ক্রিপশনের ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে। সেখানেও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এই সুবিধায় কেবল নির্দিষ্ট কিছু সাক্ষাৎকার অথবা বিশেষ মন্তব্যের সম্পাদকীয় কলাম অন্যান্যদের আগেই কাগজের সাবস্ক্রাইবারেরা পড়ে ফেলতে পারেন। তবে এক সপ্তাহ পরেই সেই বিশেষ কনটেন্টগুলিও সকল পাঠকের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। তবু এই সবকিছু মিলিয়েও ‘হলদোয়ানি’র গ্রহণযোগ্যতা ক্রমশই বাড়তে শুরু করেছে। রাখী কফির কাপ হাতে নিয়ে বারান্দায় এসে দাঁড়ায়। শহরের প্রান্তে তাদের এই অফিসঘর। অফিসঘর নাকি বাংলো বলা উচিত? পুরানো এক সাহেবি বাংলোয় নিজেদের মতো করে সাজিয়ে-গুছিয়ে নেওয়া। ভালো ইন্টারনেট কানেকশন। ডোমেইনের খরচ। তাও নয় নয় করে মূলধন লাগত অনেকটাই। তবু কিভাবে যে সব সামলিয়ে ওঠা গেছে, রাখীর ভাবতেও কেমন লাগে এখন। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণজ্ঞাপন বিষয়ে স্নাতকোত্তর, কিছুদিন দিল্লিরই এক কাগজে ইনটার্নশিপ। তারপর একটা বেশ বড় কাগজে জুনিয়র সাংবাদিক হিসেবে কিছু বছরের অভিজ্ঞতা সঞ্চয়। বাহারের সঙ্গে আলাপ। সেই বাহারের মাধ্যমেই স্টার্ট-আপ হিসেবে এই ‘হলদোয়ানি ট্রিবিউন’এর পরিকল্পনা। ঝড়ের বেগে সময় কেটেছে। এখনও রাখীর মনে পড়ে সেই চাঁদনি চক। পরাঠেওয়ালি গলির সুগন্ধি কবাব আর বাহারের সঙ্গে শহরের এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত চষে বেড়ানোর কথা।
বাহার গান গাইতে পারে। রাখীকে স্কুটারের পিছনে বসিয়ে তারা সারা শহর দাপিয়ে বেড়াত। স্টোরির খোঁজে কখনও বা চলে যেত সেক্রেটারিয়েট থেকে দরিয়াগঞ্জ। নিজামুদ্দিনের বস্তি-উচ্ছেদের ঘটনায় একবার রিপোর্ট করতে গিয়ে আরেকটু হলে দিল্লি পুলিশের লাঠি গিয়ে পড়ছিল বাহারের মাথায়। দু’হাত দিয়ে রাখী সেটাকে আটকে দেয়। তারপর অবশ্য ব্যথা কমতে লেগেছিল প্রায় দিন চারেক। বাহার সেই থেকে ইয়ার্কি মেরে ওকে ‘শোলে কি বাসন্তী’ বলে ডাকে। কমবয়সের সেই উচ্ছাসটাই ছিল আসল। রাখী বারান্দা থেকে অন্ধকার খাদের দিকে তাকায়। বাংলোটা একেবারে খাদের একপ্রান্তে। আরও দূরের খাদে মেঘ নামছে। এইভাবে মেঘ নামতে দেখলে রাখীর ভালো লাগে। মনে হয় যেন পৃথিবীতে কোনও দুঃখ নেই। পৃথিবীতে কোনও কষ্ট নেই। কেবল মেঘের মতোই আছে প্রশান্তি। তুলোর মতো নরম, ভালোবাসার মতো সতেজ। রাখী মেঘ দেখলেই তাই হাত বাড়িয়ে দেয়।
মেঘ আসছে। এদিকেও অল্প অল্প করে সাদাটে আবরণ বারান্দাটাকে ঘিরে ফেলছে। এমনিতেই রাতের অন্ধকার। এরপর আর কোনও কিছুই দেখতে পাওয়া যাবে না। রাখীর পকেটের মোবাইল ঠিক এই সময়েই বেজে ওঠে হঠাৎ।
অফিসের জিপ খুব জোরে ছুটছিল। আজকের মতো তারও ডিউটি শেষ। ড্রাইভার তাই তাড়াতাড়ি গাড়ি তুলতে চায়। পিছনের আসনে বসে জোর দুলছিল বাহার। এতদিনে ‘হলদোয়ানি ট্রিবিউন’এর প্রয়োজনে নিজস্ব একখানা গাড়ির ব্যবস্থা করা গিয়েছে। সারাদিন ভাড়ার হিসেবে মোটামুটি চালিয়ে দেওয়া যাচ্ছে। এদিকে মেইল পাঠানোর আগে হাতের ট্যাবলেটে নিজের স্টোরিটাকে একবার সে ভালো করে দেখে নিচ্ছিল। বানান বা ব্যাকরণে ভুল থাকলে রাখী যা ধমক দেয়। বাহার নাকি অন্য কেউ, কোনও খেয়াল থাকে না। এই স্টোরিটা জরুরি খুব। তাদের বেশ কয়েকমাসের মিলিত রিসার্চের ফল। সিরিজ হিসেবে কয়েকটি পর্বে প্রকাশিত হবে। কালই প্রথম পর্ব প্রকাশের দিন। তাতেই বাহার শেষবারের মতো চোখ বুলিয়ে নিচ্ছিল।
“পরিবেশ পরিবর্তন আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে আর কোনও নতুন ঘটনা নয়। ভারতবর্ষ এমনকি উত্তরাখণ্ডেও আমরা ইতিমধ্যেই তার প্রভাব দেখতে পাচ্ছি। ২০১৩ সালের হিমালয়ান সুনামিই হোক অথবা সাম্প্রতিক সময়ে দেহরার যে দাবানল, পরিবেশ পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাব এখন সরাসরি আমাদেরই লোকালয়ে সশরীরে হাজির আজ,” বাহার লিখেছে।
“এর পিছনে রয়েছে সরকারি অপ-পরিকল্পনা, এমনকি সাধারণ মানুষের তরফেও সচেতনতার অভাব। একারণেই হলদোয়ানি ট্রিবিউনের তরফে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল উত্তরাখণ্ডের সংবেদনশীল অঞ্চলে পর্যটন ব্যবসার নামে যে সমস্ত বেআইনি হোটেল, হোম-স্টে অথবা আরও সমস্ত পর্যটক-আবাস, ফার্মহাউস বা সমতুল পরিকাঠামো গড়ে উঠেছে, তেমন বেশ কয়েকটি জায়গার হদিস আপনাদের সামনে তুলে ধরা। এই ধারাবাহিক রচনার একেকটি পর্বে আমরা এমন একেকটি জায়গার কথা তুলে ধরব, এবং অবশ্যই সাংবাদিকতার প্রথম শর্ত মেনে সেই সমস্ত পরিকাঠামোর যাঁরা স্বত্বাধিকারী, তাঁদের অনুমতি ব্যতীত আমরা কোনও নাম প্রকাশ করব না। কেবল কিভাবে সেই সব পরিকাঠামোর কারণে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেই বিষয়গুলিই আমরা সকলের সামনে তুলে ধরতে চেষ্টা করব। কোনও কোনও সম্পত্তি যদি আদালতের রায়-বহির্ভূত কোনও কাজ করে থাকে, তবে সেগুলিকে আমরা বিশেষ গুরুত্ব সহকারে তুলে ধরব। উল্লেখ্য, এমন বেশ কিছু পরিকাঠামো বা প্রকল্প আমাদের নজরে এসেছে, যেগুলি বিভিন্ন জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বেআইনি হিসেবে চিহ্নিত হলেও তারা তাদের কাজ বন্ধ করেনি। এমন পরিকাঠামোগুলিকে আলাদা করে আমরা চিহ্নিত করব। মনে রাখতে হবে সরলবর্গীয় অরণ্য ধ্বংস ও তার মাধ্যমে মাত্রাতিরিক্ত ভূমিক্ষয়ের কারণেই বর্তমানে এই পাহাড়ি অঞ্চলে ধ্বস ও বন্যার ঘটনা চরম আকার নিয়েছে। এর পাশাপাশি সরকারি চার-ধাম প্রকল্পের ক্ষেত্রেও আমাদের কিছু কথা বলা উচিত। সেই প্রসঙ্গে আগামী সপ্তাহ থেকেই নতুন আকর্ষণ হিসেবে আসতে চলেছে আমাদের বিশেষ সম্পাদকীয় কলাম …” বাহার পড়তে পড়তে ক্লান্তি বোধ করে। গাড়িতে নীচু ভলিউমে পাশ্চাত্য সঙ্গীত বেজে চলেছে। যোহান সেবাস্তিয়ান বাখের সুর। ক্লান্তিতে বাহারের চোখ বুজে আসছিল।
কিন্তু খবরটা শুনতেই বাহারের চোখ থেকে ঘুম ছুটে গেল।
-“এত রাত্তিরে রাখী বেরিয়েছে আবার? তাও আবার স্কুটারে!” বাহার অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে।
-“আসলে কাঠুয়া নালার বিষয়ে কোনও সোর্স ফোন করেছিল। খুব সম্ভবত হিমেশ। তারপরেই,” সুহানি থেমে যায়।
“তা বলে এই রাত্তিরে, অন্ধকারে। কুয়াশায়,” বাহারের গলায় স্পষ্ট বিরক্তি ও অস্বস্তির সুর। কাঠুয়া নালা মানে শহরের অন্য প্রান্তে প্রায়। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। গাড়ি থাকলেও সে গাড়িতে চেপে পুরোটা যাওয়া যাবে না। এদিকে সারাদিনের ডিউটির পর ড্রাইভারটিও গাঁইগুঁই করবে। অতিরিক্ত বাহন বলতে ওই স্কুটার এক। যাতে চেপে রাখী গিয়েছে। বাকি সকলেই যাতায়াতের প্রয়োজনে নিজস্ব স্কুটি বা মোটরবাইক ব্যবহার করে। কিন্তু এখন প্রায় সকলেই বাড়ি চলে গিয়েছে। সুহানি অফিসেই থাকে, কাজেই তার পরিবহণের দরকার পড়ে না। বাহারের নিজের হাত কামড়াতে ইচ্ছে হয়। অপেক্ষা করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। মেয়েটাকে নিয়ে সত্যি পারা যায় না। একে পাহাড়ি জায়গা। অন্ধকার। মেঘ। বৃষ্টি। বাহার আর নতুন করে কিছু ভাবতে চায় না। বারান্দায় সে একটা চেয়ার টেনে নিয়ে বসে পড়ে। সিগারেট ধরায়। সামনের মেঘগুলো অনেকটা ছত্রভঙ্গ হয়ে গিয়েছে। সুহানি বাহারের জন্য এক কাপ কফি নিয়ে আসে। এই সময়ে এতখানি অন্ধকার বাহারের ভালো লাগে না। রাত বাড়ছে।
কাঠুয়া নালার বিষয়ে এখানে কিঞ্চিৎ বলে দেওয়া দরকার। শহরের এক প্রান্তে অবস্থিত এই নালাটি জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ক্রমশ নীচে নেমে এসেছে। ঘন জঙ্গল এবং নালাটির মিলিত উপস্থিতিতে, জায়গাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে অসাধারণ। আর ঠিক সেই কারণেই যত বিপত্তি। নালাটির যে গতিপথ তার থেকেও আরও বেশ খানিকটা পথ উতরাইতে নামলে, সেখানে সম্প্রতি এক হোম-স্টে গজিয়ে উঠেছে। হোম-স্টের যিনি মালিক, তাঁর বর্তমান পরিকল্পনা, নালাটির খানিক উপরে বালি-বোল্ডার, পাথর অথবা অন্যান্য আরও সব জিনিসপত্র ডাঁই করে দিয়ে, মাটি কেটে নালাটির স্রোত খানিক ঘুরপথে পাঠিয়ে যদি নিজের হোম-স্টের ভিতর দিয়ে তাকে নিয়ে আসা যায়। আধুনিক যুগের এমন ভগীরথকে ঠেকাতেই রাখী-বাহারের একজোট হওয়ার সংকল্প। কাগজে তাদের সিরিজে এই হোম-স্টে’টির বিষয়েও কথা থাকবে। কারণ সম্প্রতি ‘হলদোয়ানি’রই পরোক্ষ উদ্যোগে দায়ের হওয়া এক জনস্বার্থ মামলায়, আদালত কাঠুয়া নালার নিকটস্থ অঞ্চলে যে কোনও ধরণের নির্মাণ কাজ বেআইনি ঘোষণা করেছে।
কিন্তু সেই বিষয়েই কি কোনও গুরুত্বপূর্ণ খবর পেয়ে আজ রাখীকে ছুটে যেতে হয়েছে? কিন্তু কি এমন ঘটল যার জন্য রাখীকে এমন মাঝরাত্তিরেই হঠাৎ রওয়ানা হয়ে পড়তে হল? ভেবে কূল পায় না বাহার। কেবল রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার চেয়ারের চারপাশ পোড়া সিগারেটের টুকরোয় ভরে উঠতে থাকে। রাখী এসে তা দেখলে পরে কি বলবে, সেসব এখন বাহারের ভাবনার বিষয় নয়।
অনেক রাত্তিরে পাকদণ্ডী বেয়ে একটা জোরালো আলোর বিন্দু উঠে আসতে দেখা যায়। বাহারের একটু নিশ্চিন্ত বোধ হয়। রাখী এসে পড়েছে। “কি ব্যাপার?” বাহার প্রায় ছিটকে ফটকের কাছে বেরিয়ে এসে জিজ্ঞেস করে। রাখী জবাব দেয় না। ঠাণ্ডায় তার মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। স্কুটার থেকে নামতে নামতে সে বলে, “বলছি সব। আগে একটু গরম কিছু দরকার।” সুহানি কফি আনতে ভিতরে চলে যায়। রাখী বাহারের দিকে তাকায়। “ওরা কাঠুয়ার আপার-রিজিয়নে বালি ফেলতে শুরু করেছে।” “কিন্তু,” রাতে বেরুনোর জন্য আবারও বাহার রাখীকে ধমক দিতে যায়। কিন্তু তার আগেই রাখী হাত তুলে তাকে থামিয়ে দেয়। “লড়াই কঠিন হতে চলেছে বাহার, আরও কিছু দেখে নেওয়ার দরকার ছিল বলেই এভাবে গিয়েছিলাম।” রাখী কোনওমতে বারান্দায় উঠে চেয়ারে গা এলিয়ে দেয়। সামনের খাদ থেকে মেঘ কেটে গিয়েছে।
(চলবে)
আগের পর্বের ঠিকানা – https://nariswattwo.com/welcome/singlepost/the-siege-serialised-novelette-series-eigh
লেখক : বিজ্ঞানী, প্রাবন্ধিক ও কথাসাহিত্যিক
ছবি : সংগৃহীত
0 Comments
Post Comment